বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অক্সিজেন নিয়ে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই

সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী লকডাউন থাকায় সংক্রমণ কমে যাচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, এই মুহূর্তে দেশে অক্সিজেনের কোন সঙ্কট নেই। আমাদের দেশের অক্সিজেন ব্যবস্থাপনা অন্য দেশের উপর নির্ভরশীল নয়। সারা বছর ভারত বা অন্য কোন দেশ থেকে অক্সিজেন আমদানী করার প্রয়োজন পড়েনি। করোনার পিক অবস্থায় ভারত থেকে কিছু অক্সিজেন আমদানী করা হয়েছিল। এখন ভারতের কঠিন সময় যাচ্ছে। এই সংকটে ভারত অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ করলেও এ নিয়ে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। তিনি বলেন, লিকুইড অক্সিজেনের তুলনায় গ্যাস অক্সিজেনের উৎপাদনে আমাদের সক্ষমতা অনেক বেশি। গ্যাস অক্সিজেনে এখন দিনে আড়াই’শ টন উৎপাদন হচ্ছে। লিকুইড অক্সিজেন দেড় থেকে দুই’শ টন উৎপাদন হয়। দেশের বেসরকারি মেডিকেল খাতেও ৪০-৫০ টন অক্সিজেন উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে। প্রয়োজনে সেগুলিকেও নেয়া যাবে। দেশে বর্তমানে দৈনিক চাহিদা এক থেকে দেড়’শ টন মাত্র। তবে, রোগী সংখ্যা বাড়লে ভিন্ন চিত্র দেখা দিতে পারে। এজন্য রোগী যাতে না বাড়ে সেদিকে সকলের মনোযোগী হতে হবে।
গতকাল মহাখালীর বিসিপিএস (বাংলাদেশ কলেজ অভ ফিজিশিয়ানাস এন্ড সার্জনস) প্রাঙ্গনে ‘কোভিড-১৯, দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা ও জনসচেতনতা’ শীর্ষক বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। এসময় স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম উপস্থিত ছিলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে লকডাউন একমাত্র সিদ্ধান্ত নয়। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে অর্থনীতি, লেখাপড়াই ইত্যিাদি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে। তাই লকডাউন দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে না। তবে দেশে লকডাউন কাজে লাগছে, বলা চলে লকডাউন থাকায় সংক্রমণ এখন কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে লকডাউনের কারনে ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের বা যারা কাজ করে চলে তাদের জন্য ক্ষতিকর হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সরকার স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে দোকান-পাট নির্দিষ্ট সময়ের জন্য খোলা রাখা হচ্ছে। তবে করোনা নিয়ন্ত্রনের জন্য মাস্ক পরতে হবে এবং পুরো জাতিকে টিকার আওতায় আনতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মারেক বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে অসুস্থ মানুষদের চিকিৎসা দেয়া। রাস্তায় চলাচল, দোকান-পাট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় কাজ করছে। সকলে মিলে একযোগে কাজ করেই করোনা থেকে আমাদের মুক্তি নিতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের চিকিৎসকরা গক বছরের বেশি সময় ধরে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তারা কোনরকম ছুটি নিচ্ছেন না, নিজেরা আক্রান্ত হচ্ছেন, পরিবারকে ঝুঁকিতে ফেলছেন। তাই গণমাধ্যমে শুধু নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করলে মনোবল ভেঙ্গ পড়ে। এক্ষেত্রে যেসব কাজ হচ্ছে সেগুলো তুলে ধরতে হবে। যাতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা উৎসাহিত হয়।
টিকা প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, ভারতের সংকটকালীন সময়ে চুক্তি অনুযায়ী টিকা দিতে না পারলে বা বিলম্বে^ দিলে সেজন্য সরকার বসে থাকছে না। বরং সরকার চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য টিকা উৎপাদনকারী দেশগুলির সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক জোরালোভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। চায়না ৫ লাখ টিকা উপহার দেবে বলে জানিয়েছে। শিগগিরই আশানুরূপ কিছু পাওয়া যেতে পারে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রনে প্রথম থেকেই সরকার নানা পদক্ষে গ্রহণ করছে। ৩ হাজার টাকার পরীক্ষায় ১০০ টাকায় করা হচ্ছে। এতে সরকারে বিপুল পরিমান অর্থ ভর্তুকি দিতে হয়। করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাালে আসলে একজন রোগীর পেছনে সরকারের দৈনিক ব্যয় হয় কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা এবং আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্য কেন্দ্র) ভর্তি রোগীর পেছনে ব্যয় হয় ৫০ হাজার টাকা। আড়াই হাজার থেকে হাসপাতাল শয্যা ৭ হাজারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটি হাসপাতলে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপণ করা হয়েছে। আরও ৩০টি হাসপাতালে স্থাপনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে ২০ হাজার ডাক্তার-নার্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ডিএনসিসি করোনা সেন্টারে ২’শ শয্যার বেশি আইসিইউ/এইচডিইউ স্থাপণসহ প্রায় হাজার শয্যার হাসপাতাল করা হয়েছে। শিগগিরিই এখানে আরটিপিসিআর, সিটিস্ক্যান মেশিন স্থাপণ করা হবে। এমনকি কোভিড নিয়ন্ত্রনে সব ইনস্টিটিউট হাসপাতলেও পৃথক চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
জাহিদ মালেক বলেন, তবে মনে রাখতে হবে আমার যদি সচেতন না হই, দ্বিতীয় সংক্রমণের কারণ যদি বুঝতে না পারি তাহলে আবার সংক্রমণের হার বেড়ে যেতে পারে। ৭ হাজার শয্যার বিপরীতে যদি ২১ হাজার রোগী হয় তাহলে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে না। তাই যেকোন জনসমাগম, ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিল, পিকনিক, পর্যটন এবং রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ রাখতে হবে। সর্বস্তরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বলে উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। #

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন