অক্সিজেনের অভাব, হাসপাতালে বেডের অভাব, শ্মশানে কাঠের অভাব, ওষুধের সঙ্কট সবমিলিয়ে যেন চরম বিপর্যস্ত ও দিশেহারা ভারত। দেশটির এমন বিপদে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে প্রতিবেশী ভুটান। প্রতিদিন ৪০ মেট্রিক টন তরল অক্সিজেন সরবরাহ করবে এই পড়শি দেশ।
সম্প্রতি ভুটানের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সংকটকালে ভারতে ৪০ মেট্রিক টন অক্সিজেন পাঠানো হবে। ভুটানের একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অক্সিজেন পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। ভারতের আসাম রাজ্যের সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভুটান থেকে অক্সিজেন ভর্তি ট্যাঙ্কার যাবে।
ভুটানে সামদ্রুপ জংখার জেলার মটঙ্গা শিল্প এলাকা থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে। ইতোমধ্যেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভুটান সরকার এই পরিস্থিতিতে সবরকমভাবে ভারতের পাশে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ রুখতে ভুটান সরকারের ভূমিকা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত। এখনও পর্যন্ত সেখানে করোনায় মাত্র একজনের মৃত্যু হয়েছে। গত এক বছর ভুটান করোনা রুখতে গণস্বাস্থ্য কর্মসূচির বিপুল ব্যবহারিক প্রয়োগ করে বিশ্বে চমক তৈরি করেছে। চীন ও ভারতের মধ্যবর্তী দেশটির এই লড়াইয়ে অবাক বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
করোনা সংক্রমণে গত বছর ভুটানকে সবরকম সাহায্য করেছে ভারত সরকার। সম্প্রতি ভারত থেকে টিকা রফতানি করা হয়েছে। ভুটান বিশ্বে করোনা টিকা প্রয়োগকারী অন্যতম দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
সম্প্রতি সউদী আরব, পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং বিট্রেনও ভারতের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ইতোমধ্যেই ভারতে অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অপরদিকে ভেন্টিলেটর ও অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পাঠিয়েছে ব্রিটেনও। এছাড়া ভারতকে ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন এবং আইসিইউ’র জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স।
এদিকে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইসরায়েল এবং জার্মানিও ভারতকে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ব্রিটেন থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ ভারতে এসেছে। এছাড়া ১০০টি ভেন্টিলেটর ও ৯৫টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটরও পাঠিয়েছে তারা। এই মুহূর্তে ভারতকে ৮টি অক্সিজেন জেনারেটর দিয়ে সাহায্য করবে তারা।
উল্লেখ্য, ভারতজুড়ে বেলাগাম করোনাভাইরাস। কোনওভাবেই তাকে নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য মিলছে না পর্যাপ্ত অক্সিজেনটুকুও। দিল্লি, মহারাষ্ট্র তো কার্যত মৃত্যু নগরীতে পরিণত হয়েছে। দাহ করার জন্য পর্যাপ্ত কাঠটুকুও মিলছে না। সূত্র : এনডিটিভি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন