চলচ্চিত্র থেকে আপাতত বিদায় নিচ্ছেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা কাজী হায়াৎ। বয়স এবং শারিরীক অবস্থা বিবেচনায় তিনি আর চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এই বয়সে আর কী কাজ! অনেক কাজ করেছি। এখন আর কিছুদিন বেঁচে থাকা, এর বেশি আর কি করার আছে। বয়স ৭৫ হয়ে গেছে, আর কত কাজ করবো। জীবনের শেষার্ধে এসে আমি এখন ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত। একেবারে পাহাড়ের চূড়ায় এসে দাঁড়িয়েছি। এখান থেকে ঝাঁপ দিলে অতল গহবরে চলে যাব। গত মার্চে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন বর্ষীয়ান এই নির্মাতা ও অভিনেতা। ১৩ দিন হাসপাতালে থেকে করোনা নেগেটিভ হয়ে বাসায় ফেরেন তিনি। একমাস আগে বাসায় ফিরলেও এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন তিনি। শ্বাসকষ্ট ও দুর্বলতা রয়েছে। কাজী হায়াৎ বলেন, শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে একটু ভালো। স¤প্রতি বেশকিছু রক্তের পরীক্ষা করেছি, সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে চেকআপের জন্য হার্টের চিকিৎসকের কাছে যাবো। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর ভিন্নরকম এক উপলব্ধি হয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, মৃত্যুটাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। জীবন সম্পর্কে নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে আমার। জীবনটা একদিন শেষ হয়ে যাবে। এখন আর কোনো কিছুই ভালো লাগে না। টাকা, পয়সা, সুনাম, খ্যাতি-এসব দিয়ে কী হবে? আমাদের একটা লিমিটেড আয়ু দিয়ে আল্লাহ পাঠিয়েছেন। একদিন মানুষকে চলে যেতে হবে। এই তো জীবন, যেতেই হবে। ফেরার কোনো পথ নেই। এখন সব কাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি। উল্লেখ্য, কাজী হায়াৎ ১৯৭৪ সালে পরিচালক মমতাজ আলীর সঙ্গে সহকারী পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন। পরে আলমগীর কবিরের সঙ্গে সীমানা পেরিয়ে সিনেমাতেও সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৯ সালে দ্য ফাদার সিনেমার মধ্য দিয়ে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পঞ্চাশটি সিনেমা নির্মাণ করেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দাঙ্গা, ত্রাস, চাঁদাবাজ, আম্মাজান, ইতিহাস, কাবুলিওয়ালা। তার পরিচালিত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিমো বীর। এটি তার পরিচালিত পঞ্চাশতম সিনেমা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন