শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

লকডাউনেও ওরা বেপরোয়া

কিশোর অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না সন্তানদের প্রতি অভিভাবকদের নজরদারি বাড়াতে হবে : অধ্যাপক ড. নেহাল করিম

খলিলুর রহমান | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০০ এএম

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর লকডাউন চলছে। কিন্তু তার মধ্যেও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। বিভিন্ন অজুহাতে অভিভাবকের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা পাড়া-মহল্লায় আড্ডা দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, মাদক ব্যবসা, মাদক বহন, চাঁদাবাজি, রাজধানীর ফাঁকা রাস্তায় ইট-পাথর দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, জোটবদ্ধভাবে মাদক সেবন, দিনদুপুরে পথচারীদের হেনস্তা, পাড়া-মহল্লায় আড্ডার ছলে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করাসহ নানাভাবে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। এছাড়াও খুন, ছিনতাই, চুরিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সাথেও জড়িত রয়েছেন ওই গ্রুপের সদস্যরা। তাদের যন্ত্রণায় অতিষ্ট রাজধানীবাসী।

সম্প্রতি রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিন বিকালে ধানমন্ডি এলাকার বিভিন্ন রোডের মোড়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা মোটরসাইকেল নিয়ে অবস্থান নেয়। ১০-১২ জনের গ্রুপ হয়ে তারা রাস্তার মোড়ে আড্ডা দেয়। শুধু তাদের নয়, তাদের আড্ডায় উঠতি বয়সী কিশোরীদেরও অংশ নিতে দেখা গেছে।

শুধু ধানমন্ডি এলাকায় নয়, রাজধানীর মোহাম্মদপুর, উত্তরা, বনানী, গুলশান, পুরান ঢাকার নাজিরাবাজার,যাত্রাবাড়ীর দনিয়া, সিক্কাটুলী, মিরপুরের টোলারবাগ, লাভ রোড, সনি সিনেমা হলের আশপাশ এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা নিয়মিত অবস্থান করে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তারা বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে ওইসব এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে চুরি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসার মত অপরাধ পরিচালনা করে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিন রাজধানীর কদমতলী থানার দনিয়া বর্ণমালা স্কুলের মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদিন দুই শতাধিক উঠতি বয়সী তরুণ লকডাউন ভেঙে আড্ডা দেয়। তাদের অত্যাচারে সবাই অতিষ্ট। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন বিকালে এসব উঠতি বয়সী তরুণ এসে আড্ডা বসায় ফাস্টফুডের দোকানগুলোতে। লকডাউনে দোকান না খুললেও তাদের আড্ডা বন্ধ হয়নি। মধ্যরাত পর্যন্ত তারা আড্ডায় মেতে থাকে। প্রায় সময় তাদের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটে।

গত ২৬ এপ্রিল রাতে ফার্মগেট এলাকার গ্রিন রোডের এইচআর টাওয়ার সামনে গিয়ে দেখা গেছে, উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণীরা আড্ডা দিচ্ছেন। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত তারা আড্ডায় মেতে উঠে। তবে যাদের বাসায় অভিভাবকরা সন্তানদের একটু নজরদারিতে রাখেন তারা ঘর থেকে বের হতে পারেননি। তবে ওইসব পরিবারের সন্তানরাও পিতা-মাতাকে ভুল বুঝিয়ে রাস্তায় নেমে আড্ডা দিতেও মরিয়া বলে জানা গেছে। এমন আড্ডা থেকে কিশোর গ্যাংয়ের বিভিন্ন গ্রæপের সাথে জড়িত হয়ে যান অনেকেই।

সরেজমিনে গিয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার বউবাজার, রানার গ্রুপ ও বেগুনবাড়ী, হাতিঝিল, তেজকুনিপাড়াসহ আশপাশের এলাকায় কিশোর গ্রুপের সদস্যদের অনিয়ন্ত্রিত চলাচল দেখা গেছে। এছাড়া বিভিন্ন নির্মাণাধীন ভবনেও তাদের মাদকের আসর জমে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে, গত সোমবার চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের হাতে খুন হয়েছেন রফিকুল ইসলাম নামে এক কিশোর। এ ঘটনায় ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। জানা গেছে, মোবাইল ফোন চুরি নিয়ে রফিকের সাথে কথা কাটাকাটি হয় ইয়াসিন নামের এক কিশোরের। এরই জেরে ওই দিন রাতে নগরীর সুলতান কলোনীতে ইয়াসিনের নেতৃত্ব কয়েকজন কিশোর রফিকুলকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল নেওয়া হলে তার মৃত্যু হয়। রফিকুল ইসলাম একটি কারখানায় কাজ করতো। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাছিরনগরে।

এছাড়া গত ২২ এপ্রিল সন্ধ্যায় রাজধানীর কদমতলীর পাটেরবাগ ইতালি মার্কেটের সামনে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ছুরিকাঘাতে আহত হন আমিনুল ইসলাম ডালিম নামে ইন্টারনেট এক ব্যবসায়ী। আহত ডালিমের সহকর্মী ইয়াসিন জানান, ওই দিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে ইতালি মার্কেটের সামনে দুই কিশোর মোটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় এক বৃদ্ধকে মোটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা দিলে তিনি আহত হন। বাইকের চালককে মাফ চাইতে বললে ডালিমের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা চলে যায়। কিছুক্ষণ পরে জনিসহ প্রায় ২০ থেকে ৩০ জন এসে ডালিমের ওপর হামলা চালায় এক পর্যায়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় কিশোর গ্যাং নেতা ‘কাইল্লা’ মুরাদ ও ‘বাঘা’ রাজু নামের দুইজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। র‌্যাব জানায়, তাদের কেউ কিশোর নয়। এর পরও ওই এলাকায় কিশোরদের একটা বিশাল গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে। গ্রুপটি এলাকায় চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত। র‌্যাব-১০-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বলেন, কদমতলীর মুরাদপুর এবং পাটেরবাগ এলাকায় মুরাদ ও রাজুর কিশোর গ্যাং রয়েছে। এ চক্রটি চুরি, ছিনতাই, মারামারি ও চাঁদাবাজি করত। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে দলবল নিয়ে তাদের ওপর হামলা করা হয়। তারা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হলেও তাদের সবার বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। গ্রæপটির বাকি সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ভুক্তভোগিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও কদমতলী থানা এলাকায় কিশোরগ্যাং নিয়ন্ত্রণহীন বহু দিন ধরেই। এরা পাড়া মহল্লায় অবাধে আড্ডা দেয়। কথায় কথায় মানুষের উপর চড়াও হয়। সন্ধ্যার পর মাদক বিক্রেতাদের হয়ে মাদক বহন করে। নিজেরাও প্রকাশ্যে মাদক সেবন করে। চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের হয়ে চাঁদাবাজি করে। র‌্যাব পুলিশের তালিকায়ও আছে এসব চিহ্নিত কিশোর অপরাধীর নাম। জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারির ১০ তারিখে আওলাদ, সাইদুল ও সোয়েব নামের তিনজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে যাত্রাবাড়ীর কিশোরগ্যাংয়ের সদস্যরা। এর মধ্যে ছিল কন্ট্রাক আরিফ, চা সুজন, চা শুভ, আল আমীন, আড়ত আলামীন, ঠেলা রাসেল। চাঁদাবাজির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটায় কিশোর অপরাধীরা। ওই ঘটনায় আওলাদ এখন পঙ্গু। এরা ছাড়াও যাত্রাবাড়ী এলাকায় চিহ্নিত কিশোর অপরাধীর তালিকায় রয়েছে, রতন, সুমন, মানিক, ডিজিটাল আরিফ, কাঁকন, টেগরা সুমন, হিন্দু রাজিব, তোতলা আরিফসহ আরও কয়েকজন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি যাত্রাবাড়ীতে সুমন মুন্সী নামের একজনকে ছুরিকাঘাত করে কয়েকজন কিশোর অপরাধী। এর মধ্যে ছিল আসাদ শেখ, উল্টা বাবু, ফুল মিয়ার ছেলে জালাল, ছোট খোকন, চিকা রাসেলসহ কয়েকজন। স্থানীয়রা জানান, যাত্রাবাড়ীর ফুটপাতে চাঁদাবাজির রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে সোনা মিয়া নামের এক চিহ্নিত চাঁদাবাজ। এক সময় বিএনপির সক্রিয় কর্মী সোনা মিয়া এখন আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি করছে। সোনা মিয়া চাঁদাবাজিতে কিশোর অপরাধীদের ব্যবহার করে তাকে। সোনা মিয়ার গ্রুপে রয়েছে শালা বাবু, আল আমীন, মুসা ও মোবারক। গত ২০ এপ্রিল ধোলাইপাড়ে ফার্নিচার ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীরকে পিটিয়ে আহত করে কিশোরগ্যাং লিডার এহসানের গ্রুপের সদস্যরা। অনুসন্ধানে জানা গেছে,যাত্রাবাড়ীর ধোলাইপাড়ে মাদক ব্যবসার সাথে কিশোর গ্যাং জড়িত। এর মধ্যে রয়েছে, তুষার, স্বপন, রবিন, শুক্কুর, ফালান, ইমন, সিএনজি ইসমাইল, হাড্ডি সোহেল, আশিক, তানিম, অমিত, বাবা রাসেল, চায়না বাবুল, মোটা শুভ, কাজল, রহমান, জামাল, তানজিল, মক্কা সুমন, জোস আলামীন, টাইগার, মুন্না, জাবেদ, দানেশ, চয়ন, শীতল, শ্যামল, ক্যাট বাবুসহ আরও কয়েকজন। এছাড়া যাত্রাবাড়ীর ইমন, ফরমা রুবেল, ফয়সাল, শাহেদ, পিচ্চি মামুন, নূর মোহাম্মদ, মজনু, ফরমা খোকন, সজীব, সাদ্দাম, শুভ, ম. সুমনের বিরুদ্ধে রয়েছে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসাসহ নানা অভিযোগ। ভুক্তভোগিরা জানান, এরা রাস্তাঘাটে ইভটিজিং, মাদক বহন, পরিবহনে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে জড়িত।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাসা থেকে ডেকে নিয়ে বানানী স্টার কাবাবের পাশের রাস্তায় ছুরি মেরে হত্যা করা হয় কিশোর মো. শাকিলকে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন কিশোরকে আটক করে পুলিশ। গত ১২ জানুয়ারি দুপুরে মুগদায় খুন হয় কিশোর মেহেদি হাসান। এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অন্তত ১৫ কিশোরের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

এছাড়াও গত ৩১ মার্চ রাত ১২টার দিকে কারওয়ান বাজার রেলগেটে দুজন ব্যক্তিকে মারধর করে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। গত বছর সাভারে স্কুলছাত্রী নীলা হত্যার ঘটনায় কিশোর গ্যাং নিয়ে তোলপাড় হয়। একই বছর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় দুই কিশোর গ্যাংয়ের বিরোধে নাঈম নামের এক কিশোর এবং একই এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় শরিফ হোসেন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাও আলোচিত। এর আগে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যাকান্ডে ১১ কিশোরের কারাদন্ড হয়েছে। গত বছর দেয়া রায়ে আদালত বলেছেন, সারা দেশে কিশোর আপরাধ বেড়ে যাচ্ছে, গডফাদাররা এই কিশোরদের ব্যবহার করছে।

এ ব্যাপারে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ইনকিলাবকে বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের বিষয়টি প্রথমই র‌্যাবই আবিষ্কার করেছিল। এরপর থেকেই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের গ্রেফতারে নিয়মিত অভিযান পরিচালান করা হচ্ছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য মতে, ঢাকায় ৪০টির মতো কিশোর গ্যাং রয়েছে। রাজধানীতে প্রতি মাসে গড়ে ২০টি হত্যার ঘটনা ঘটছে। এর বেশির ভাগ ঘটনায় কিশোর অপরাধীরা জড়িত। ২০১৮ সাল থেকে গত জানুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীতে হওয়া ৩৬৩টি ছিনতাইয়ের নেপথ্যেও ছিল কিশোর অপরাধীরা। প্রায় একই চিত্র ঢাকার বাইরেও। পুলিশ সদর দফতর তথ্য বলছে, হাতিরঝিলে বেড়াতে যাওয়া সাধারণ মানুষকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় গত ২৭ জানুয়ারি থেকে হাতিরঝিল ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১০২ কিশোরকে আটক করা হয়।

গতকাল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার ইনকিলাবকে বলেন, কিশোর অপরাধীদের একটি তালিকা করা হয়েছে। ওই তালিকা অনুযায়ী অপরাধীদের গ্রেফতার করতে প্রতিটি থানার দায়িত্বরত পুলিশকে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, সামনের ঈদকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা ঠিক রাখার জন্য গতকাল মিটিং হয়েছে। এ সময় কিশোর অপরাধীদের গ্রেফতারের বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তবে কিশোর অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করতে অভিভাবকদের আরো সচেতন হতে হবে। তারা সচেতন হলে কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।

এদিকে, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পারিবারিক সংস্কৃতি ও অভিভাবকরে নজরধারী ভেঙে পড়ার কারণেই থামানো যাচ্ছে না এই গ্যাং কালচার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নেহাল করিম ইনকিলাবকে বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের এখনই নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে দেশে আরো একটি বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটবে। কিশোর অপরাধীরা প্রত্যেক ঘরে ঘরে জন্মায় না। তবে বাবা-মা তাদের সন্তানদের খুজ-খবর রাখে না। সব বাবা-মা’র উচিৎ তাদের সন্তানের খোজ খবর রাখা। সন্তান কার সাথে মিসে, কোথায় যায় এসব বিষয় নজরধারী করা। সন্তানদের সুষ্ঠুভাবে গড়ে তুলতে হলে তাদের খুঁজ-খবর নিতে হবে, তাদের সাথে লেগে থাকতে হবে। যখন ছেলে-মেয়ে দায়িত্বশীল হয়ে যাতে তখন ছেড়ে দিবে। কিন্তু আমাদের সমাজের অভিভাবকরা সন্তানদের খোজ খবর রাখার সময় নেই। বাবা-মা দুজনই ব্যস্ত থাকেন। তাই সন্তানরা কিশোর বয়সেই বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।

তিনি বলেন, আগামীতে এ ধরনের অপরাধীরা আরো বেপরোয় হয়ে উঠবে। তবে এ ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করতে এখনই পাড়া-মহল্লায় সরকারীভাবে তৎপরতা বৃদ্ধি করতে হবে। এছাড়া অভিভাবকরা তাদের সন্তানের প্রতি নজরধারী বাড়াতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে রাজধানীর উত্তরায় ডিসকো বয়েজ ও নাইট স্টার গ্রুপের অন্তর্দ্ব›েদ্ব ট্রাস্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র আদনান হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে আলোচনায় আসে কিশোর গ্যাং। কিশোরদের মধ্যে অপরাধ নতুন না হলেও পুলিশ সদর দফতরের রেকর্ড বলছে, সংঘবদ্ধভাবে কিশোরদের অপরাধ সংঘটনের বিষয়টি তাদের নজরে আসে ২০১২ সালে। ওই বছর সারা দেশে ৪৮৪ মামলায় আসামি ছিল ৭৫১ শিশু-কিশোর।

হযরত ফাতেমা (রা.) ইন্টারন্যালশাল ক্যাডেট কওমী মহিলা মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা সাইফুল ইসলাম বলেন, ইসলামী শিক্ষা ও মূল্যবোধের অভাবে পরিবারিক বন্ধন দুর্বল হয়ে পড়ায় এ ধরনের অপরাধের প্রবণতা বাড়ছে। তাই শিশু-কিশোরদের মনে শিক্ষা জীবনের শুরু থেকে ইসলামী শিক্ষা দিতে পারলে তার জীবন সুন্দরের পথে পরিচালিত হবে। তার মেধা-মনন গড়ে উঠবে শালীনভাবে। তা হলে কিশোর অপরাধও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। ##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (13)
মোঃ+দুলাল+মিয়া ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:১৯ এএম says : 0
এইটা সরকারের চালাকি স্কুল কলেজ বন্ধ করে রাখিয়া এদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতেছেন,অসুবিধা নেই সরকার যে কোনো মুহূর্তে এদের ডাক দিবে পাইবে,এদের টাকার দরকার আর সরকারের দরকার ক্ষমতা ,পুলিশের সাথে এদের যুক্ত করা হয়েছে, এরা পড়া লেখা করলে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। অসম্ভব তাহা হবে না,স্কুল কলেজ বন্ধ করে রাখবে,আর কোথায় যদি কেউ কিচু বলে এবং সংগ্রাম করতে চায় আমাদের ক্ষমতা নিতে চায় পুলিশের সাথে এদের যুক্ত করবে,এই কারনেই এদের এই অবস্থা সরকার ইচ্ছাকৃত ভাবে শিক্ষার মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিতেছে,
Total Reply(0)
আমার আমি ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৪৪ এএম says : 0
Open school as soon as possible. The damage done by covid-19 beyond unimaginable.
Total Reply(0)
আলমগীর হোসেন ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৪৪ এএম says : 0
কিশোর অপরাধীরাই ভবিষ্যৎ এর বড় অপরাধী।
Total Reply(0)
Md Rafsanjani Hemel ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৪৪ এএম says : 0
আরে অভিভাবকে আগে নিয়ন্ত্রণ করেন। ছেলে মেয়ের কোন খোজ খবর রাখে না ঠিক মতো৷
Total Reply(0)
Arifur Rahman ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
স্কুল বন্ধ থাকায় পড়ালেখার চাপ কম। আর যেসমস্ত শিশু এই কিশোর গ্যাং এর সাথে জড়িত এরা মোটামুটিভাবে পিছনের সারির শিক্ষার্থী। সরকার, অভিভাবক এবং স্থানীয় কমিউনিটির যৌথ উদ্যোগে এই কিশোরদের রক্ষা করতে হবে। এখনই এদের থামাতে না পারলে এ সমাজের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
Total Reply(0)
মালিহা হায়াত ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
খুউব খারাপ, কিশোর গ্যাং বেরেছে মারাত্নকভাবে। তবে তারজন্য আটক নয়, প্রয়োজন সমমর্মিতা ও সচেতনতা।
Total Reply(0)
Md Nurul Huda ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৪৭ এএম says : 0
কিশোর গ্যাং গড়ে উঠার পেছনে যে কয়েকটা কারন কাজ করছে তার মূলে আছে রাজনৈতিক ছত্রছায়া, বড়ভাই নামক কিছু স্থানিয় নেতারা তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য এদেরকে ব্যবহার করছে এবং তারাও কথিত বড় ভাইদের প্রভাব খাটিয়ে যেকোন অপকর্ম করার সাহস দেখাচ্ছে এবং করছে। তাই এসব কিশোর গ্যাং বন্ধে যেমন সামাজিক এবং পারিবারিক সচেতনতা প্রয়োজন তেমন প্রয়োজন রাজনৈতিকভাবে এদেরকে ব্যবহার বন্ধ করা।
Total Reply(0)
Saifullah Tamim ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৪৮ এএম says : 0
যেভাবে গলিতে গলিতে কিশোরদের গ্যাং তৈরী হচ্ছে, সামনের দিনগুলোতে অবস্থা ভয়াবহ হবে বুঝা যায়।
Total Reply(0)
Baadshah Humaun ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৪৮ এএম says : 0
সচেতনতার মাধ্যমেই সমাধান সম্ভব। আধুনিক যুগের সমস্যা আধুনিক উপায়ই সমাধান করতে হবে।
Total Reply(0)
Nakib Khan ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৪৯ এএম says : 0
আকাশ সংস্কৃতি ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা বা তথ্যপ্রযুক্তি কিশোরদের অপরাধপ্রবণতা বাড়ার অন্যতম কারণ যদি হয়ে থাকে তবে তা নিয়ে ভাবতেই হবে এবং তা থেকে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে বাঁচাবার পথ অবশ্যই বের করতে হবে।
Total Reply(0)
Masud Rana ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৪৯ এএম says : 0
কিশোর গ্যাং সমাজের একটা ব্যাধি। প্রতিনিয়ত অনেক মানুষই অকারণে উঠতি বয়সের ছেলেদের দ্বারা নির্যাতিত হচ্ছেন।
Total Reply(0)
Fahim Reza ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ১২:৪৯ এএম says : 0
সামাজিক অবক্ষয় গুলো পারিবারিক ভাবে সমাধান করতে হবে। ভালো পরিবেশে বেড়ে উঠুক পরিবারের সকল কচিকাঁচা। সন্ধ্যার পর ছেলে-মেয়ে কোন যৌক্তিক কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে থাকলে সেই ছেলে-মেয়েসহ তাদের অভিভাবকদের বিরুদ্ধেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী।
Total Reply(0)
Harunur Rashid ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ৭:০৮ এএম says : 0
These kids will go out of control, every parents will say my kid are role model kid. These parent must take care of their kid. Government can't do babysitting.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন