শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী বিশ্ব

ভূ-রাজনীতিতে অবিস্মরণীয় উত্থান ইসলামি জোটের

ডানা ইশরাত | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০২১, ৯:০৬ পিএম

বৈঠকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। গত ৫ এপ্রিল আঙ্কারায় -সংগৃহীত


একটি শক্তিশালী ঐতিহাসিক, জাতিগত এবং ধর্মীয় সম্পর্ক ভ‚-কৌশলগতভাবে অবস্থিত ৩টি মুসলিম দেশকে একটি উদীয়মান ভ‚-রাজনৈতিক জোটের অন্তর্ভুক্ত করেছে, যার ৪র্থ অংশীদার সংযোজন করার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ৩টি দেশ হ’ল, ন্যাটো সদস্য এবং ইউরোপীয় ধনী ক্লাবে যোগদানের প্রার্থী তুরস্ক, সমৃদ্ধ হাইড্রোকার্বন উৎস এবং ক্রমবর্ধমান সামরিক ক্ষমতাসম্পন্ন আজারবাইজান এবং পারমাণবিক অস্ত্র সম্পন্ন বিশ্বের একমাত্র মুসলিম দেশ পাকিস্তান।

আঙ্কারার দৃষ্টিকোণ থেকে আজারবাইজান, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ এমন একটি বিরল ত্রয়ী দেশ যাদের সাথে তার কখনও রাজনৈতিক বিরোধ হয়নি। সাম্রাজ্যবাদী পাশ্চাত্য শক্তির বিরুদ্ধে তুরস্কের স্বাধীনতা যুদ্ধের লড়াইয়ে একই ধর্ম এবং অনুরূপ অভিজ্ঞতার কারণে বিশ শতকের গোড়া থেকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ তার ধর্মীয় মিত্র। তুরস্কের সাথে আজারবাইজানের আরো গভীর বন্ধন রয়েছে। কারণ তাদের জাতিগত ও ভাষাগত আত্মীয়তার সম্পর্ক রয়েছে।

তুর্কি এবং আজারি নেতারা তাদের দুই দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ বর্ণনা করার জন্য ‘একটি জাতি, দুটি রাষ্ট্র’ কথাটি ব্যবহার করে থাকেন। সামরিক পর্যবেক্ষকরা বিশ^াস করেন যে, তুরস্কের তৈরি বাইরাক্তার টিবি-২ সশস্ত্র ড্রোন আজারবাইজানের পক্ষে যুদ্ধ জয়ে মূল ভ‚মিকা পালন করে। আজারবাইজান বনাম আর্মেনিয়ার যুদ্ধে তুরস্ক হাজার হাজার সিরিয়ান যোদ্ধাসহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষকও পাঠিয়েছিল।

কাশ্মীর অঞ্চল নিয়ে প্রতিবেশী ভারতের সাথে পাকিস্তানের বিরোধে তুরস্ক ঐতিহ্যগতভাবে পাকিস্তানের কট্টর সমর্থক হয়ে আঙ্কারা এবং দিল্লির মধ্যে তিক্ততা ডেকে আনে। তুরস্ক এবং পাকিস্তান সামরিক ও প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে হাই লেবেলে স্ট্র্যাটেজিক কোঅপারেশন কাউন্সিল (এইচএলএসসিসি) গঠন করে। গত বছরের শুরুর দিকে এরদোগান এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এইচএলএসসিসির ষষ্ঠ অধিবেশনের সহ-সভাপতিত্ব করেন এবং প্রতিরক্ষা শিল্পের সাথে সম্পর্কিত ৫টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।

পাকিস্তান তুরস্কের সাথে টি-১২৯ চুক্তি বাড়ানোর বিষয়ে আবারও একমত হয়েছে। এর ফলে, তাত্তি¡কভাবে, তুরস্ক তার সমৃদ্ধ প্রতিরক্ষা শিল্পের তাৎক্ষণিক প্রয়োজন আলোচিত ফাইটার জেট প্রযুক্তির জন্য চীনের মিত্র পাকিস্তানের মাধ্যমে চীনা সামরিক প্রযুক্তির সুবিধা বলয়ে প্রবেশ করতে পারে। এদিকে, চীনের সাথে তুরস্কের বাণিজ্য সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে এবং নগদ অর্থহীন তুরস্ক ক্রমেই চীনা বিনিয়োগের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে।

২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে পশ্চিমা মিত্রদের অগ্রাহ্য করে তুরস্ক তার প্রথম দূরপাল্লার এয়ার এবং অ্যান্টি-মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরির জন্য চীনা নির্মাতা সিপিএমআইইসিকে বেছে নেয়। ন্যাটো এবং পাশ্চাত্যের চাপে দেশটি শিগগিরই সিপিএমআইইসি’র সাথে প্রাথমিক চুক্তি বাতিল করে এবং একই চুক্তির জন্য একটি নতুন আন্তর্জাতিক দরপত্র আহŸান করে। এ পুনঃপ্রতিযোগিতা রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ সারফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেমকে তুরস্কের সংগ্রহে ঢোকার পথ সুগম করেছে।

নতুন জোটটি রাশিয়ান এবং চীনা উভয়ের স্বার্থের জন্যই মঙ্গলজনক কারণ এর অর্থ ন্যাটোসহ পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে তুরস্কের ইতোমধ্যেই উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্ক আরও দুর্বল হবে এবং পূর্বাঞ্চলের সাথে তুরস্কের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পাবে। সূত্র : আল্হামেইনার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন