শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

দুই উইকেটের স্বস্তি বাংলাদেশের

বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা, দ্বিতীয় টেস্ট ৩য় দিন শেষে

ইমরান মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০২১, ৭:২৬ পিএম

সে লক্ষ্যে রান বাড়ানোর চেষ্টায় শুরুতেই ২ উইকেট খুইয়ে বসেছে শ্রীলঙ্কাও। মাত্র ২ রানে ওপেনার লাহিরু থিরিমান্নেকে ফিরিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পরে বল হাতে তাইজুল ইসলামের শিকার ওদিশা ফার্নান্দো।

তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে লঙ্কানদের সংগ্রহ ২ উইকেট হারিয়ে ১৭। যার মধ্যে একাই ১৩ রান নিয়ে খেলছেন অধিনায়ক দিমুথ করুণারত্নে। তাকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসা আরেক অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথ্যুসের ঝুলিতে এক রান।

৭ উইকেটে ৪৯৩ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা, আজ তৃতীয় দিনে সকালের সেশনে ৩.৩ ওভার খেলার পর। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে এক পর্যায়ে ৩ উইকেটে ২১৪ রান ছিল বাংলাদেশের।

তখন ফলোঅন এড়াতে আর ৮০ রান দরকার ছিল। কে ভেবেছিল, বাকিরা মিলে এই রানও করতে পারবেন না! কে ভেবেছিল, মাত্র ৩৭ রানের মধ্যেই বাকি ৭ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়ে যাবে দল। প্রথম ইনিংসে ২৫১ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংস থেকে ২৪২ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ।

এক অভিষিক্ত, আনকোড়া বোলারের কাছেই কুপোকাত হয়েছে মুমিনুল হকের দল। প্রাভীন জয়াবিক্রমা একাই নিয়েছেন ৫ উইকেট। টেস্ট অভিষেকে ৫ উেইকেট পাওয়া শ্রীলঙ্কান ৫ম বোলার তিনি।

অবশ্য টেস্টে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নিয়মিত দেখা থাকলে এমন ব্যাটিং দেখে ভ্রু বেশি কুঁচকে যাওয়াই বরং অস্বাভাবিক।

প্রবীন জয়াবিক্রমার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে মুশফিকুর রহিম ফিরে যান বাংলাদেশের ইনিংসের ৬২তম ওভারের চতুর্থ বলে। এর পরই চা বিরতি ঘোষনা করা হয়। কিন্তু ফিরে আসার পর সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার বদলে আরও বড় চাপে পরে বাংলাদেশ।

৬৫ তম ওভারের পঞ্চম বলেই রমেশ মেন্ডিসের বলে এলবির শিকার মুমিনুল হকও। হাফ সেঞ্চুরি থেকে তখন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাত্র ১ রান দূরে।

পরের ওভারের তৃতীয় বলেই জয়াবিক্রমার চতুর্থ শিকারে পরিনত হন লিটন দাসও। স্লিপে থিরিমান্নের হাতে ক্যাচ দেন এই উইকেটরক্ষক বাটসম্যান। ৩ উইকেটে ২১৪ রান থেকে কিছুক্ষণের মধ্যেই ৬ উইকেটে ২২৪ হয়ে যায় বাংলাদেশ। ৭৫ ওভার শেষে ৬ উইকেটে সফরকারীদের সংগ্রহ ২৪১।

১০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে এখন ফলোঅনের শঙ্কায়ও পড়ে গেছে বাংলাদেশ। এর আগে শ্রীলঙ্কা ৪৯৩ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষনা করে। মুমিনুলের দল এখনও পিছিয়ে ২৫২ রানে।

উইকেটে আজ বল ভালো বাঁক নেওয়ার সঙ্গে ওঠা–নামা করলেও ব্যক্তিগত ৯১ রানের আগ পর্যন্ত তামিম কোনো বড় ভুল করেননি। ৯২ রানে থাকতে প্রবীন জয়াবিক্রমার বলে শর্ট লেগে একটু জোরের ওপর ক্যাচ দিয়েছিলেন। কিন্তু কঠিন সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেনি শ্রীলঙ্কা।

তামিমের ১৫০ বলে খেলা ৯২ রানের ইনিংস গড়া ১২ চারে। এই ইনিংসে অনাকাঙ্ক্ষিত একটি জায়গায় নাসির হোসেনের পাশে লেখা হয়ে গেল তার নাম।  বাংলাদেশের হয়ে পরপর দুই টেস্টে নব্বইয়ে আউট হয়েছেন কেবল এই দুই জনই। ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে ৯৬ ও খুলনা টেস্টে ৯৪ রানে থামেন নাসির।

ক্রিকেটের নিয়মে এসব রেকর্ড বইয়ের অংশ, বাস্তবতায় কেবলই আক্ষেপের। সাকিব-তামিম-নাসিরদের হাহাকার, বাংলাদেশ ক্রিকেটেরও।

তামিমের আগের কয়েকটি ইনিংসেই বড় রানের ইঙ্গিতটা পরিষ্কার ছিল। কিন্তু নিজ ভুলে এই সময়টা বাংলাদেশ ওপেনার নিজেই বের করতে পারেননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সর্বশেষ টেস্টে তাঁর ৪৬ বলে ৫০ রানের ইনিংস থেকে শ্রীলঙ্কার মাটিতে শেষ টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরির সুযোগটা তাঁর ছিল।

কিংবা আরেকটু পিছিয়ে যাওয়া যায়—হ্যামিল্টনে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে টেস্ট ক্যারিয়ারে এর আগে সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছিলেন তামিম।

এরপর তাঁর ১৩টি ইনিংসের স্কোর দেখুন—৭৪,৭৪,৪,৩,৩৪,৪১,৯,০,৪৪,৫০,৯০,৭৪* ও আজ ৯২। অন্তত পাঁচটি ইনিংসে সেঞ্চুরির সুবাস ছড়িয়ে আউট হওয়ায় টেস্ট ক্যারিয়ারে তাঁর সেঞ্চুরিসংখ্যা ৯–এ আটকে থাকল, যেটা তাঁর সামর্থ্যের সঙ্গে বেমানান।

বাংলাদেশের হয়ে তার বেশি নব্বইয়ে আটকা পড়েছেন কেবল সাকিব আল হাসান, চারবার। আর তিনবার এই হতাশায় পুড়েছেন মুশফিক।

শ্রীলঙ্কায় পাঁচ টেস্টে এই নিয়ে ছয়বার ফিফটি পেলেন তামিম। সর্বোচ্চ এবারের ৯২। লঙ্কানদের বিপক্ষে দেশের মাঠেও টেস্ট সেঞ্চুরি নেই তার। অথচ এই সিরিজেই হতে পারতো তিনটি!

আউট হওয়ার পর ড্রেসিং রুমে বসে উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন তামিম। ঝাপসা হয়ে আসা চোখ দুটোই বলে দিচ্ছিল, ১২ চারে সাজানো ১৫০ বলের ইনিংসটির অপমৃত্যুর জন্য আসলে দায়ী কে!

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন