বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

রামগতি-কমলনগরে করোনা সংকটে দেখা মিলেছে না জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় নেতাদের

কমলনগর /রামগতি (লক্ষ্মীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০২১, ৮:৫৬ পিএম | আপডেট : ৯:০৬ পিএম, ১ মে, ২০২১

মারনব্যাধি কারোনা ভাইরাসে বিধ্বস্ত পুরো বিশ্ব। এর বাইরে নেই বাংলাদেশও।চলছে কঠোর লকডাউন। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। বাংলাদেশও রয়েছে চরম ঝুঁকিতে। এ অবস্থায় লক্ষ্মীপুরের রামগতি-কমলনগর উপজেলায় চলছে কঠোর লকডাউন।ঘরবন্দী হয়ে পড়েছে মেঘনানদীর ভাঙন কবলিত এলাকার লাখ-লাখ মানুষ। আতঙ্কগ্রস্থ সাধারণ জনগণ। চরম অভাব-অনটন আর মানবেতর জীবনযাপন করছেন রামগতি-কমলনগরের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষগুলো।

এমন দুরবস্থায় জনগণের পাশে নেই লক্ষ্মীপুরের এই অঞ্চলের লক্ষ্মী সন্তানেরা। স্থানীয় এমপি ও সাবেক এমপিসহ বড় বড় নেতা-শিল্পপতি ও বিত্তশালীরা এই সংকট মুহূর্তে জনগণের পাশে নেই। জনপ্রতিনিধি ও নেতারা অনেকেই এলাকা ছেড়ে নিরাপদ দূরত্বে রয়েছেন। এ সঙ্কট মুহূর্তে এখন পর্যন্ত তাদেরকে নির্বাচনী এলাকা তথা রামগতি-কমলনগরে দেখা যায়নি।সবাই নিজেদের কে গুটিয়ে রেখে চলেছেন। জনগণ কি করছে, কেমন আছে তারা,বা কি খাচ্ছে? এমন খবর নেওয়ার মত এখন কোন নেতার দেখা মিলছেনা। বর্তমানে উপকূলীয় এ অঞ্চলের দরিদ্র মানুষ চরম অর্থ সংকটে রয়েছে। খাদ্যের অভাবে দুই উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনেক পরিবারে নীরব কান্না চলছে। জনপ্রতিনিধি এবং সমাজের বিত্তবানরাও যেন তাদের কান্না শুনছেন না।আর এই দু-উপজেলার ১৭ টি ইউনিয়নের মধ্যে অন্তত শতাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকলেও তাদেরকে এখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা।বর্তমানে ক্ষমতাসীন চেয়ারম্যানরা সরকারী ভাবে আসা বরাদ্দের বাহিরে নিজস্ব উদ্যোগে কোন সহযোগিতা করছেনা বলে অভিযোগ স্থানীয় জনগণের।

তবে করোনা সচেতনতায় শুরু থেকে সক্রিয়ভাবে মাঠে কাজ করছেন রামগতি উপজেলা ছাত্রলীগ-যুবলীগ।আর কমলনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে চলছে সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা। তবে রামগতি-কমলনগর উপজেলার রাজনৈতিক দলগুলো বিশেষ করে আওয়ামীলীগ,বিএনপি-জাতীয়পার্টি,জেএসডি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ -জামায়াত-বিকল্পধারা ও বাসদ সহ মুল দলগুলোর কোন কার্যক্রম এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। এইসব দলের নেতারা যেন ঘুমিয়ে রয়েছেন। পাশাপাশি বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যানদের মধ্যে অধিকাংশই গাছাড়া ভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন বলে সচেতন লোকজন অভিযোগ করেন।

জনপ্রতিনিধিরা প্রায় সবাই আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠন এবং আওয়ামী জোটের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। অথচ জনগণের সুখ-দুঃখে একসঙ্গে থাকা এবং কাজ করার অঙ্গীকার দিয়ে তারা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন আরো নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও ওই সবের কোন বাস্তবায়ন নেই করোনার এই সংকটে।রামগতি উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগ করোনা থেকে জনগণকে সচেতন করতে হাট-বাজার, মাঠ-ঘাট, বাসা-বাড়িতে প্রচার-প্রচারণার করছেন।তারা কৃষকদের ধানকাটা সহ ব্যক্তিগত উদ্যোগে অসহায়দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল,ডাল, আলুসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন।সরকারী ভাবে আসা ত্রাণসামগ্রী প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দুই উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনগণের মাঝে বিতরণ করেন।উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পুলিশের পক্ষ থেকে জনগণকে সচেতন করতে প্রশাসন মাঠে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রামগতি-কমলনগর উপজেলায় কারোনার কারণে অঘোষিত লকডাউন চলছে। মানুষের মধ্যে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, আতংক বিরাজ করছে। বাংলাদেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর লক্ষ্মীপুর-৪ রামগতি-কমলনগর আসনের বর্তমান এমপি মেজর আবদুল মান্নান,সাবেক এমপি ও জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব,সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, বিএনপি নেতা ও সাবেক এমপি এবিএম আশ্রাফ উদ্দীন নিজান,আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী বেগম ফরিদুন্নাহার লাইলী,আওয়ামীলীগ নেতা ডঃ আশ্রাফ আলী চৌধুরী সারু,বিএনপি নেতা আব্দুল মতিন চৌধুরী ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুজজাহের সাজু সহ আওয়ামীলীগ বিএনপিসহ অন্যান্য দলের বড় বড় নেতারা এলাকায় আসেননি।তবে যুবলীগ নেতা তাসবীরুল হক অনুর পক্ষ থেকে ত্রান বিতরণ করতে দেখা গেছে।বিভিন্ন দলের তৃনমুলের কর্মীরা জানান, জাতির এ দুর্যোগময় সময়ে জনপ্রতিনিধিরা জনগণ থেকে দুরে থাকাটা দুঃখজনক। বর্তমানে ভেদাভেদ ভুলে আমরা সবাই সবার অবস্থানে থেকে জনগণের সঙ্গে থেকে এ বিপদকালীন সময়ে মোকাবেলা করা প্রয়োজন। যেন মানুষ এবং মানবতা জয়ী হতে পারে। এই মুহূর্তে সবার উচিত সকলে দলমত নির্বিশেষে সাধ্য অনুযায়ী সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া।কিন্তু কোন নেতাকেই এই সংকট কালে এখন পাওয়া যাচ্ছেনা।

রামগতি-কমলনগর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের তৃণমূলের নেতারা হতাশাব্যক্ত করে বলেন,নির্বাচন আসলে কত নেতা আর কত আওয়ামীলীগ। এখন সরকারী সহায়তা ছাড়া কাউকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে কোন সহযোগিতা করতে দেখা যায়না।এমনকি করোনার ভয়ে তারা এলাকা পর্যন্ত আসছেনা।জনগণ ও দলীয় নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নিচ্ছেনা। নির্বাচন আসলে উচিত জবাব দেওয়ার হুমকি দেন তৃনমুলের এইসব কর্মীরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মিল্লাত ৩ মে, ২০২১, ১২:৪৯ এএম says : 0
সরকারি অনুদান চেয়ারম্যানেরা হাতে ফেলে তাও ঠিক মত দেয় না।তবে আমি প্রান বরে দোয়া করি আমাদের উপজেলার চেয়ারম্যান বাপ্পি ভাইর জনন্যা অনার মত যদি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কাজ করতো তাহলে কমল নগরের মানুষ আর ভালো থাকতো।দুই একটা চেয়ারম্যান বাদে আরগুলো হল ছোর।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন