বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সন্তানরা যেন বাবা-মাকে মডেল হিসেবে নিতে পারে

স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরামের আলোচনায় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০২১, ১২:০২ এএম

শিশুর ব্যক্তিত্বের বিকাশে প্যারেন্টিং-এর ভ‚মিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। করোনাকালে বাচ্চারা স্কুলে যাচ্ছে না। তাই তাদের ঘরে পর্যবেক্ষণ করতে হবে, অনুসরণ করতে হবে, তারা যেনো অনলাইনে ক্লাস করতে গিয়ে প্রযুক্তিতে আসক্ত না হয়ে পড়ে। বাচ্চাদের গুণগত সময় দিতে হবে। করোনাকালে বাচ্চারা গৃহ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। গতানুগতিক শিক্ষা বাদ দিয়ে প্রয়োজনে এই করোনাকালীন সময়ে বাচ্চাদের শুধু ম‚ূল্যবোধের শিক্ষা দেয়া যেতে পারে। প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে, সন্তানরা যেনো বিপথে না যেতে পারে সেজন্য বাবা-মাকেও প্রযুক্তির ব্যবহার জানতে হবে। বাবা-মার নিজেদের মধ্যে নৈতিকতা চর্চা করতে হবে যেনো বাচ্চারা তাদের রোল মডেল হিসেবে নিতে পারে।

গতকাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরাম আয়োজিত ‘সন্তানের মানসিক বিকাশে বর্তমানের প্যারেন্টিং প্র্যাকটিস কতটা সহায়ক’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে আলোচকরা এসব মতামত ব্যক্ত করেন। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়ন ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ড. জিয়াউদ্দিন হায়দারের সঞ্চালনায় এতে আলোচনায় অংশ নেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. ঝুনু শামসুন নাহার, ব্র্যাকের প্রাক্তন পরিচালক শিপা হাফিজা এবং শিশু এডোলেসেন্ট এন্ড ফ্যামিলি সাইক্রিয়াট্রিস্ট ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ।

আলোচনার শুরুতে ডা. শামসুন নাহার বলেন, বর্তমানে পরিবারগুলো দম্পতি কেন্দ্রিক বা নিউক্লিয়ার পরিবার। বাবা-মার জন্য চ্যালেঞ্জ চলে এসেছে। বাবা-মা দুজই কর্মজীবী হলে বাচ্চাকে কোথায় রেখে যাবেন সে প্রশ্নও চলে আসে। তিনি বলেন, করোনাকালে বাবা-মা দুজনও যদি বাসায় থেকে অনলাইনে অফিস করেন তাও তারা বাচ্চাদের সময় দিতে পারেন না। বাচ্চারা হয়তো অনলাইনে ক্লাস করতে গিয়ে ইউটিউব, ফেসবুকে ব্রাউজিং করছে, প্রযুক্তিতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এটাও একটা নতুন চ্যালেঞ্জ। বাচ্চারা স্কুলে না গিয়ে বাসায় থেকে থেকে বিরক্ত হয়ে উঠছে, তাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে। বাবা-মাও খিটখিটে হচ্ছেন, পারিবারিক সহিংসতা বেড়ে যাচ্ছে। বাচ্চাদের উপর তারা হয়তো অনেক সময় না বুঝেই নির্যাতন করে বসছেন।

শিপা হাফিজা বলেন, বাবা-মা একা কখনো বাচ্চাকে প্যারেন্টিং দিতে পারেন না। বাচ্চারা ঘরে একটা কথা শুনে, স্কুলে গিয়ে শুনে আরেকটা। শিক্ষকদের কথা বাচ্চারা অসম্ভব মান্য করে। তাছাড়া বন্ধুবান্ধব, সমাজ তো আছেই। প্রযুক্তিও রয়েছে। সুতরাং বাবা-মা যা বলবেন বাচ্চারা তাই শিখবেন এমনটি নয়। অনলাইনে ক্লাসও করছে নামমাত্র কিছু বাচ্চা, অধিকাংশরাই স্কুলে যাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, কোন রকম শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত হওয়া থেকে বিরত অনেকেই।

ডা. শামসুন নাহার বলেন, আমাদের বাচ্চাদের মূল্যবোধের শিক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে। পাশাপাশি বাচ্চাদের ইমোশনকেও আমলে নিতে হবে। অফিস থেকে ঘরে ফিরে তাদের ‘কোয়ালিটি টাইম’ৎ দিতে হবে। অতীতে আমরা অনেক প্রযুক্তির সাথে পরিচিত ছিলাম না, তাই বলে তারাও তেমন থাকবে তা ভাবা যাবে না। পাশাপাশি আমাদের কিছু জিনিসও যেন বাচ্চারা মেনে নেয় তা নিশ্চিত করতে হবে৷ এছাড়া তাদের কোন চাহিদা পূরণেরও একটা সীমারেখা বেঁধে দেয়া উচিত।

ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, প্রযুক্তিকে দূরে ঠেলে দিলে নিজেকেই পিছিয়ে পড়তে হবে। তিনি বাচ্চাদের জন্য সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি নিশ্চিত করার উপর জোর দিয়ে বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর একটা নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। তাছাড়া সন্তানরা যেনো বিপথে না যেতে পারে সেজন্য বাবা-মাকেও প্রযুক্তির ব্যবহার জানতে হবে। পরিবার, শিক্ষক, সমাজ তথা রাষ্ট্রকেও শিশুদের বুঝতে হবে। রাষ্ট্র শিশুবান্ধব না হলে গুড প্যারেন্টিং করেও কোন লাভ হবে না। ##

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন