ভারতে শুরু হয়েছে গম কাটার মওসুম। কৃষকদের এই উভয় সঙ্কট খানিক স্বস্তি জুগিয়েছিল মোদি সরকারকে। আশা করেছিল, মাঠ থেকে গম তুলতে আন্দোলনরত কৃষকরা বাড়ি ফিরে যাবেন। সেই সুযোগে কোভিডের দোহাই দিয়ে তাদের বিক্ষোভকে প্রশমিত করা যাবে। কিন্তু সেই আশার গুড়ে বালি দিয়ে কৃষকরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আন্দোলন থেকে পিছু হটার কোনও প্রশ্নই নেই। বরং এ বছর গমের রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদনকে সামনে রেখে আন্দোলন-অস্ত্রে শান বাড়ানো হবে। কৃষকদের এ অবস্থানে ভারতের কেন্দ্র সরকার আরও বিপাকে পড়ল মনে করা হচ্ছে। দিল্লির সিংঘু সীমান্তে গত বছর নভেম্বর মাস থেকে আন্দোলন চালাচ্ছেন কৃষকরা। তাদের মূল দাবি, কৃষি ও কৃষক স্বার্থ বিরোধী তিনটি আইন বাতিল করতে হবে মোদি সরকারকে। এ নিয়ে দু’পক্ষের একাধিক বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সমাধানের কোনও সূত্র মেলেনি। নিজেদের অবস্থানে উভয়পক্ষই অনড়। এর মধ্যেই দেশে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর লেখচিত্র ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। এই পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ববিধি মানার দাওয়াই দিয়ে বিক্ষোভ ভেস্তে দিতে তলে তলে একটা পরিকল্পনা নিয়েছিল মোদি সরকার। তার সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত দিত গম কাটার মওসুম। কারণ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ সহ একাধিক রাজ্যে গম ঘরে তোলার কাজে ফিরবেন কৃষকরা। তাতে আন্দোলন অনেকটাই ফিকে হয়ে যাবে। আর তখনই আন্দোলন তোলার চেষ্টায় নামবে সরকার। এমনটাই ধারণা করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু, সিংঘু সীমান্তে আন্দোলনরত কৃষকরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের আন্দোলন রুখতে গম কাটার মওসুমকে হাতিয়ার করলে মোদি সরকার বড্ড ভুল করবে। যতদিন আমাদের দাবি পূরণ না হচ্ছে, ততদিন আন্দোলন চলবে। আন্দোলনরত কৃষক অমৃক সিং বলেছেন, ‘আমরা কৌশল বদলে আরও জোরদার বিক্ষোভের জন্য তৈরি হচ্ছি।’ কী সেই কৌশল? তিনি জানান, দলবদ্ধভাবে কৃষকরা গম কাটতে বাড়ি যাবেন। একে অপরের সহযোগিতার ভিত্তিতে তারা ফসল ঘরে তুলবেন। একদল যখন বাড়ি যাবেন, অন্যদল বিক্ষোভ মঞ্চে হাজির থাকবেন। তারা ফিরে এলে আবার একদল ফসল তোলার কাজে ঘরে ফিরবেন। সূত্র : বর্তমান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন