শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা

পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত

প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:৪৫ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হয়ে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনার মধ্য দিয়ে সারাদেশে উদযাপিত হলো পবিত্র ঈদুল আযহা। সকালে ঈদের দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের জন্য সারাদেশের মুসল্লিরা স্থানীয় ঈদগাহ-মসজিদে সমবেত হন। ধনী-গরিবের ভেদাভেদ ভুলে সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে ঈদের জামাতে নামাজ আদায় শেষে নিজের পাপমোচন এবং পরিবার-পরিজন, দেশ ও মুসলিম উম্মাহর ঐক্য-শান্তি কামনা করে দোয়াসহ জঙ্গিবাদবিরোধী লড়াইয়ে সবাইকে সামিল হওয়ার আহŸান জানান। এরপর হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর মহান আত্মত্যাগের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের ভেতরের পশুত্বকে পরিহার ও আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় পশু কোরবানি করেন। বৃষ্টির কারণে রাজধানী ঢাকার ঈদের জামাতগুলোর আয়োজকদের অব্যবস্থাপনা চোখে পড়লেও মুসল্লিরা নিজস্ব উদ্যোগে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঈদের জামাতে হাজির হন। ঢাকায় সকাল ৭টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুল মোকাররমে মোট ৫টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে এবার মুসল্লিদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলক কম। ঢাকাসহ সারাদেশে বৃষ্টিতে ভিজে মুসল্লিরা ময়দানে ও মসজিদে নামাজ আদায়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিত হলেও ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়ায় দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদুল আযহার ১৮৯তম জামাতে মুসল্লিদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়ে মুসল্লির উপস্থিতি ছিল কম। কেউ কেউ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে মুসল্লিদের উপস্থিতি কম বললেও কেউ কেউ বলছেন ‘রাজ আলেম’কে ঈমাম করার কারণে মুুসল্লিদের উপস্থিতি কমে গেছে। ঈদের পর দিন রাজধানী ঢাকা এবং বিভিন্ন জেলার বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। আর ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত জায়গায় কম কোরবানি দেয়া হলেও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পশু বর্জ্য অপসারণ করা হয়।
ঈদের দিন সকাল থেকেই বৃষ্টি। সকাল ৮টা ৫ মিনিটে ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে জাতীয় ঈদগায়ে ঈদের জামাত শুরু হয়। নামাজে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মিজানুর রহমান। প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ, মন্ত্রিসভার সদস্যরা, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ঈদের প্রধান জামাতে অংশগ্রহণ করেন। নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এছাড়াও ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, সিলেট, ময়মনসিংহ, মাগুরা, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুমিল্লা, নোয়াখালী, দিনাজপুর, পটুয়াখালি, মুন্সীগঞ্জ, খুলনা, বাগেরহাট, বগুড়া, নাটোর, জামালপুর, পঞ্চগড়, রাজবাড়ী, টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, ফেনী, যশোরসহ সারাদেশের জেলা-উপজেলায় যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হয়। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে দেশের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা বিঘিœত হলেও বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, কারাগার ও সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়
ঈদের দিন বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট মো: আবদুল হামিদ এবং গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ও আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া পবিত্র হজ পালন উপলক্ষে সউদী আরবে অবস্থান করায় তিনি দলীয় নেতাকর্মী ও কূটনীতিকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেননি। পবিত্র এ দিনটিকে উৎসবের আমেজ দিতে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহে জাতীয় ও ঈদ মোবারক খচিত পতাকা দিয়ে সুশোভিত করা হয়। পাশাপাশি সকল সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক খচিত পতাকা উত্তোলন এবং নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সরকারী ভবনগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়। রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে চার শতাধিক ঈদ জামাতের ব্যবস্থা করা হয়। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিট কর্পোরেশন এলাকায় জাতীয় ঈদগাহ’র প্রধান জামাতসহ ঈদুল আযহার ২২৯টি এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ১৮০টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
রাজধানীতে সিটি কর্পোরেশন পশু কোরবানি জায়গা নির্ধারণ করে দেয়া হলেও অধিকাংশ নাগরিকদের তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। তাছাড়া কোরবানির জন্য যায়গা নির্ধারণ করা হলেও সেগুলো কোরবানির উপযোগী করেনি সিটি কর্পোরেশন। তবে কোরবানির বর্জ্য অপসারণে ৪৮ ঘণ্টার অভিযানে ঈদের পরদিন রাজধানী ঢাকা অনেকটাই পরিচ্ছন্ন করে আনা গেছে বলে জানিয়েছেন সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, বুধবার বিকালের মধ্যেই রাজধানীর অধিকাংশ এলাকা থেকে কোরবানির পশুর বর্জ্য সরানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর কয়েকটি এলাকা ঘুরে কিছু কিছু জায়গায় বর্জ্র পড়ে থাকতে দেখা গেলেও বেশিরভাগ রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন দেখা গেছে। তবে তখনো পুরোদমে চলছিল তা সরানোর কাজ।
ইনকিলাবের জেলা প্রতিনিধিরা জানান, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যেই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনার মধ্য দিয়ে সারাদেশে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আযহা। রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি কক্সবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নরসিংদী, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, খুলনা, কুয়াকাটা, চট্টগ্রাম, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলার বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভিড়।
চট্টগ্রামে ঈদুল আজহা উদযাপিত
চট্টগ্রাম ব্যুরো : ভাবগম্ভীর ও উৎসবমুখর পরিবেশে বার আউলিয়ার পুণ্যভূমি চট্টগ্রামে ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। ঈদ জামাতগুলোতে ছিল মুসল্লীদের উপচেপড়া ভিড়। নামাজ শেষে সকল ভেদাভেদ ভুলে সকলে কোলাকুলি করেছেন। মহান আল্লাহর দরবারে দেশ জাতির কল্যাণ কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। ঈদের নামাজ শেষে নগরবাসী মহান আল্লাহর রাহে পশু কোরবানি দেন।
সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নগরীর জমিয়তুল ফালাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় ঈদের প্রধান জামাত। এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ১৬৭টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জমিয়তুল ফালাহ জামে মসজিদ ময়দানের পরপর দু’টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এ জামাতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান, সাবেক মেয়র মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন ও মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ, মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সরকারী কর্মকর্তা, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন। নামাজ ও খুৎবা শেষে দেশ ও জাতির উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এছাড়া নগরীর আন্দরকিল্লাহ শাহী জামে মসজিদ, বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ, হযরত শাহ আমানত খান দরগাহ জামে মসজিদ, আগ্রাবাদ জাম্বুরী মাঠ জামে মসজিদ, সিজিএস কলোনী জামে মসজিদ, মসজিদে বেলাল, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, অলিখাঁ জামে মসজিদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসহ প্রতিটি মসজিদ ও ঈদগাহে শত শত মুসল্লী ঈদের নামাজ আদায় করেন।
সিলেটে বৃষ্টির মধ্যেও ঈদের নামাজ আদায় করলো লাখো মানুষ
সিলেট অফিস: বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে সিলেটের বিভিন্ন ঈদ জামাতে ঈদের নামাজ আদায় করেছে লাখো মুসল্লি। সিলেটের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে নগরীর ঐতিহাসিক শাহী ঈদগাহে। গত মঙ্গলবার সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হওয়া ওই ঈদ জামাতে কয়েক হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করেন।
এ ঈদ জামাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ জামে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায়। সেখানে নামাজ আদায় করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
এছাড়া সিলেট কালেক্টরেট জামে মসজিদ, শেখঘাট শেখ ছানা উল্লাহ জামে মসজিদ, কালিঘাটস্থ নবাবী জামে মসজিদ ওয়াকফ এস্টেট, মাছিমপুরস্থ শেখ মৌলভী ওয়াকফ এস্টেট জামে মসজিদ, টিলাগড় শাহ মাদানী ঈদগাহ, পাঠানটুলা নবাবী শাহী ঈদগাহ এবং পশ্চিম পীরমহল্লা জামে মসজিদে সকাল ৮টায় ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেকটি ঈদ জামাতেই মুসল্লিদের ঢল নেমেছিল। নামাজ ও খুতবা শেষে বাংলাদেশ ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
রাজশাহীতে ঈদ উদযাপিত
রাজশাহী ব্যুরো: ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত ও অনাবিল আনন্দময় পরিবেশের মধ্যদিয়ে রাজশাহীতে উদযাপিত হলো পবিত্র ঈদুল আজহা। নগরীতে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় হযরত শাহ মখদুম (রূ:) কেন্দ্রীয় ঈদগাহে। এরপর বড় জামাত হয় সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট ও মোহাম্মদপুর ঈদগাহ ময়দানে। নগরীর বিভিন্ন ঈদগাহ ও মসজিদে পৌনে আটটা থেকে সাড়ে আটটার মধ্যেই নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। কেন্দ্রীয় ঈদগাহে অন্যান্যের মধ্যে নামাজ আদায় করেন ফজলে হোসেন বাদশা এমপি, সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু প্রমুখ। প্রত্যেক জামাতে দেশ ও মানুষের কল্যাণ শান্তির জন্য আল্লাহর রহমত কামনা করা হয়।
দক্ষিণাঞ্চলে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে সর্ববৃহৎ জামাত
বরিশাল ব্যুরো : সারা দেশের সাথে দক্ষিণাঞ্চলেও যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও এবাদত বন্দেগীর মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে ঈদুল আজহার সর্ববৃহৎ জামাত অনুষ্ঠিত হয় ফরিদপুরের বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে। সারা দেশ থেকে লক্ষাধিক জাকেরান ও আশেকান বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে সমবেত হয়ে ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে ফাতেহা শরিফ পাঠান্তে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পীর ছাহেব হজরত মাওলানা শাহসুফি খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের রওজা শরিফ জিয়ারতসহ মুসলিম বিশ্বের কল্যাণ কামনায় মহান আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের দরবারে দোয়া করা হয়। এবারো নকশবন্দীয়া মোজাদ্দেদীয়া তরিকার এ দরবার শরিফে মহান আল্লাহর নামে তিনদিন ধরে বিপুল সংখ্যক পশু কোরবানি দেয়া হয়েছে। বরিশালের চরমোনাই দরবার শরিফ, পিরোজপুরের ছারছিনা দরবার শরিফ, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে হজরত ইয়ারউদ্দিন খলিফা (রঃ) দরবার শরিফ, বরগুনার মোকামিয়া দরবার শরিফসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন পীরানে পীর ছাহেবগণের দরবার শরিফ প্রাঙ্গণ ও মসজিদেও বড় বড় ঈদ জামাতে বিপুল সংখ্যক মুসল্লীয়ানগণ ঈদের নামাজ আদায় করেন।
বিভাগীয় সদর বরিশালে প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে হেমায়েত উদ্দিন কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে। বিভিন্ন সংসদ সদস্যবৃন্দসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাগণ এখানে ঈদ জামাতে নামাজ আদায় করেন। এছাড়া নগরীর জামে এবাদুল্লাহ মসজিদ, কেন্দ্রীয় জামে কসাই মসজিদ, জামে বায়তুল মোকাররাম মসজিদ ও পুলিশ লাইন্স মসজিদে দুটি করে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগরীর নবগ্রাম রোড-চৌমুহনী মসজিদ-এ নূর, করিম কুটির মসজিদ, বায়তুল মামুর মসজিদ, বটতলা হাজী উমর শাহ মসজিদ, বিএম কলেজ মসজিদ, সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ মসজিদ, বরিশাল কলেজ মসজিদ, ল কলেজ মসজিদ, ফরেষ্ট্রার বাড়ী মসজিদ, নথুল্লাবাদ জামে মসজিদ, বাংলাবাজার মসজিদ, চাঁদমারী মসজিদ, ওয়াপদা মসজিদ, কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মসজিদ, আকন ভিলা মসজিদ, স্ব-রোড মসজিদ, কলমী লজ মসজিদ, পাওয়ার হাউজ মসজিদ, হরিণাফুলিয়া মাদ্রাসা মসজিদ, বাজার রোড মসজিদ সহ চরহোগলা জামে মসজিদেও বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
যথাযোগ্য মর্যাদায় খুলনায় ঈদুল আজহা উদযাপিত
খুলনা ব্যুরো : যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে খুলনায় পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়কদ্বীপ বাংলা ও আরবীতে ঈদ মোবারক খচিত ব্যানারে সজ্জিত করা হয়।
মহানগরী খুলনায় প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় খুলনা টাউন জামে মসজিদে সকাল ৮টায়। এ বিশাল জামাতে ইমামতি করেন, খুলনা টাউন জামে মসজিদের খতিব আলহাজ্ব মাওলানা মোহাম্মদ সালেহ। এতে খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মুহাম্মদ মিজানুর রহমান মিজান, সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু, খুলনা সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ আনিসুর রহমান বিশ্বাস, খুলনা জেলা পরিষদ প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আব্দুস সামাদ, জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. শফিকুল আলম মনা ও বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলাম জহিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লি খুলনা টাউন জামে মসজিদে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় পূর্বনির্ধারিত খুলনা সার্কিট হাউজ ময়দানে ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি।
নগরীতে ঈদের দ্বিতীয় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় খুলনা টাউন জামে মসজিদে সকাল ৯টায় এবং তৃতীয় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় টাউন জামে মসজিদে সকাল ১০টায়। এছাড়াও নিউমার্কেট সংলগ্ন বায়তুন-নুর-জামে মসজিদ, ডাকবাংলো জামে মসজিদ, ময়লাপোতা বায়তুল আমান জামে মসজিদ, টুটপাড়া মরিয়াম জামে মসজিদ, নগরীর খুলনা আলীয়া মাদরাসা, পিটিআই জামে মসজিদ, কেডিএ নিরালা জামে মসজিদ, সিদ্দিকীয়া মাদরাসা ময়দান, তালিমুল মিলাত মাদরাসা, দারুল উলুম মাদরাসা ময়দান, আন্তঃজেলা বাসটার্মিনাল মসজিদ, শিপইয়ার্ড, লবণচরা, চাঁনমারী, রূপসা, টুটপাড়া, মিয়াপাড়া, শেখপাড়া, বসুপাড়া, করবস্থান জামে মসজিদ, জেলা পুলিশ লাইন ময়দান, জোড়াগেট সিএন্ডবি কলোনী মসজিদ, বয়রা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন মাঠ, খালিশপুর ক্রিসেন্ট জুট মিলস মাঠ, দৌলতপুর রেলওয়ে ময়দান, বিএল কলেজ মাঠ, দেয়ানা ঈদগাহ ময়দান এবং ফুলতলাসহ নগরীর বিভিন্ন মসজিদ ও ময়দানে ঈদের জামাত অনুুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা সিটি করপোরেশনের ৩১টি ওয়ার্ডে পৃথকভাবে ওয়ার্ড কাউন্সিলরগণের তত্ত¡াবধানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। তাছাড়া ৯টি উপজেলা ও দু’টি পৌরসভায় ঈদগাহ ময়দান ও মসজিদ মিলে এবার খুলনার এক হাজার ৭৪ স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
দিবসটি উপলক্ষে খুলনার বিভিন্ন হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু সদন, ভবঘুরে কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার খুলনা বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে।
নারায়ণগঞ্জে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা
নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার : ত্যাগের মহিমায় সারা দেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা। গত মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টির মধ্যেই নগরীর বিভিন্ন ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদের জামাত। মূষলধারে বৃষ্টিতে ভিজে নামায আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা। পরে পশু কোরবানির মধ্যদিয়ে পালন করছে পবিত্র ইসলাম ধর্মের দ্বিতীয় বৃহত্তম এ উৎসব। টানা বৃষ্টির মধ্যে পশু কোরবানী দিতে চরম ভোগান্তির পোহাতে হয়েছে তাদের। রাস্তার মধ্যে পানি জমে যাওয়ার কারণে অনেকই কোরবানী নিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন।
নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় ঈদগাহে পবিত্র ঈদুল আজহার দুইটি জামাতের আয়োজন করা হয়। প্রথম জামাত সকাল সাড়ে ৭টায় এবং দ্বিতীয় জামাতটি সাড়ে ৮ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া একই দিন কাশীপুর ঈদগায়ে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে সকাল সাতটায় এবং দ্বিতীয় জামাত আটটায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়াও আল্লামা ইকবাল রোড, গলাচিপা জামে মসজিদ ও গলাচিপা বাইতুল মামুর জামে মসজিদে সকাল আটটায় একটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও নগরীর গোরস্থান জামে মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

দিনাজপুরে ঈদুল আজহা উদযাপিত
দিনাজপুর অফিস : দিনাজপুরে সুষ্ঠু ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড়ময়দানে ঈদের প্রধান জামাতে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, জেলা পরিষদের প্রশাসক আজিজুল ইমাম চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম ও পুলিশ সুপার মোঃ হামিদুল আলমসহ বিপুল সংখ্যক মুসল্লি অংশ নেন। শহরের পুলিশ লাইন, বিজিবি কুঠিবাড়ী, ঈদগাহবস্তী, রামনগর, লালবাগ, সুইহারী, রাজবাড়ী, ইন্সটিটিউট, উপশহর ৩নং, ঘাসিপাড়া, কাঞ্চন কলোনী, একাডেমি স্কুল, মহারাজা স্কুল, ৮নং উপশহর ঈদগাহ, পুলহাট, কেবিএম কলেজসহ বিভিন্নস্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেকটি ঈদের নামাজে অগণিত মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন। দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
মাদারীপুরে ঈদুল আজহা পালিত
মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা ঃ মাদারীপুরে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৭টায় ও ৮টায় পৌরসভা ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়। এতে যথাক্রমে নামাজের ইমামতি করেন জেলা সদর জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ইলিয়াস হাবিবুল্লাহ ও জমাদ্দারবাড়ী জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা রেজাউল করিম।
গোপালগঞ্জে ঈদের জামায়াত
গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে গোপালগঞ্জে হাজারও মুসল্লির অংশগ্রহণে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৮টায় গোপালগঞ্জ কেন্দ্রীয় পৌর ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে দেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় মোনাজাত করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। সেই সাথে জঙ্গিবাদের যাতে উত্থান না হয় তার জন্যও মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা হয়। এছাড়াও দোয়া করা হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রুহের মাগফিরাত কামনায়। দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করা হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। মোনাজাত পরিচালনা করেন গোপালগঞ্জ কোর্ট মসজিদ মাদ্রাসার মোহতামিম মুফতি মাওলানা হাফিজুর রহমান। এছাড়াও গোপালগঞ্জ আলীয়া মাদ্রাসা মসজিদ, মিয়াপাড়া জামে মসজিদসহ বিভিন্ন স্থানে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গফরগাঁওয়ে ঈদুল আজহা উদযাপিত
গফরগাঁও উপজেলা সংবাদদাতা ঃ গফরগাঁও উপজেলায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। গফরগাঁও উপজেলার প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে সকাল সাড়ে ৯টা দিকে গফরগাঁও পৌরসভার আয়োজনে ঈমামবাড়ী ঈদগাহ মাঠে। অবিরাম বৃষ্টির ফলে মসজিদে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদের নামাজের পর কোরবানি দেওয়ার ধুম পড়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন