মঙ্গলবার বগুড়া –নাটোর সড়কের জোড়া বীর গ্রাম এলাকায় ঘাতকের পিস্তলের গুলিতে নিহত হলেন বগুড়ার বাবা হুজুর বলে সবার কাছে পরিচিত মোজাফফর হোসেন (৫৬) । নিহত মোজাফফর হোসেন বগুড়ার পাশ^বর্তি সিংড়া উপজেলার সুকাশ গ্রামের মরহুম সাইদুল আমিনের ছেলে ।
তিনি বগুড়ার নিশিন্দারা কারবালা এলাকায় আল জামিয়া আল আরাবিয়া হেদায়া কওমি হাফেজী মাদ্রাসা নামে একটি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ছিলেন ।
সকাল পৌনে ১০ টার দিকে একটি সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে বগুড়ার দিকে আসার পথে উল্লেখিত জোড়া বীর এলাকায় পরিত্যক্ত কৃষি কলেজের পাশে মোটর বাইকের দুই আরোহী তাকে বহনকারী সিএনজিটি থামায় । এরপর কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই মোটর বাইকের আরোহীদের একজন খুব কাছে থেকে তার বুকের বাম পাশে গুলি করে।
নির্ভুল নিশানার কারনে অটো রিক্সার চালক ও অন্যান্য যাত্রীরা অক্ষত থাকেন। হুজুর গুলিতে লুটিয়ে পড়ার পরপরই কমান্ডো স্টাইলে মোটরবাইকে চড়ে ৩/৪ রাউন্ড ফাঁকা ফায়ার করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে ঘাতক দু’জন ।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আহত মোজাফফরকে শহীদ জিয়া মেডিকেলে নিয়ে যায় । কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করলে ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয় ।
শাহজাহানপুর থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের জানান, প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে মোজাফফর হোসেনের সাথে থাকা সিএনজির একজন নারী ও পুরুষ যাত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তারা ঘাতকদের সোর্স হিসেবে কাজ করতে পারে বলে পুলিশের ধারনা।
এদিকে ঘটনাটির গুরুত্বের বিচারে সিআইডি সহ বিভিন্ন সংস্থা ছায়া তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে ।
ঘটনার পর দুপুরে নিশিন্দারা কারবালা এলাকায় গিয়ে দেখা করোনার কারনে বন্ধ মাদ্রাসায় তালা দেওয়া আছে । যে বাড়িতে তিনি ৭ বছর ধরে ভাড়া থাকতেন ওই বাড়িটিও তালা দেওয়া । বাড়ির মালিক সাংবাদিকদের জানান , নিহত মোজাফফর ওপরে বাবা হুজুরের ২ জন স্ত্রী। তার বড়– স্ত্রী ছেলে মেয়ে নিয়ে সিংড়াতেই থাকেন। এখানে তিনি ছোট স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। তিনি একজন ধন্যাঢ্য ব্যক্তি সিংড়ায় তার বিপুল পরিমানে জায়গা জমি আছে । ধান কাটার সময় হওয়ায় তিনি ছোট স্ত্রীকে নিয়ে সিংড়া গিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার সকালে তিনি সিংড়া থেকে সিএনজি অটো রিক্সায় বগুড়া আসার পথে গুলিতে খুন হলেন । নিশিন্দারা এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েক ব্যক্তি জানালেন , বাবা হুজুর জি¦ন ভুত ছাড়ানো সহ সহ বিভিন্ন বিষয়ে দোওয়া ,তাবিজ কবজ, ঝাড় ফুঁ দিতেন । বলে সবার কাছে বাবা হুজুর বলে পরিচিত হয়ে উঠতেন । তার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসার একটি কক্ষে বসেই এসব করতেন । এলাকায় তিনি জনপ্রিয়ও ছিলেন ।
কেন খুন হলেন বাবা হুজুর সে প্রসঙ্গে বগুড়ার শাজাহানপুর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, পারিবারিক বিষয় ঝাঁড় ফুঁ সহ বিভিন্ন দিকে সামনে রেখে হত্যার কারন জানার চেষ্টায় আছে পুলিশ। চলছে নিবিড় তদন্ত কার্যক্রম ।
এদিকে সিংড়া চলনবিল ও নন্দীগ্রাম শেরপুর অঞ্চলে সম্প্রতি সর্বহারা পার্টির ব্যাপক তৎপরতা শুরু হওয়ায় অনেকের ধারণা এই হত্যাকান্ডের পেছনে সর্বহারা দলের হাত থাকতে পারে । কারন যে ভাবে কমান্ডো স্টাইলে হত্যা মিশন সম্পন্ন করা হয়েছে সেটা কেবল সর্বহারাদের পক্ষেই সম্ভব বলে জানান একজন পুলিশ কর্মকর্তা।
চাঁদাদিতে অস্বিকার বা সর্বহারাদের বিরোধিতার কারনে তিনি খুন হতে পারেন । আবার ভাড়াটে কিলার হিসেবেও কাজ করতে পারে সর্বহারা বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন