৩০ ঘণ্টার পর অবশেষে নিয়ন্ত্রণে এসেছে সুন্দরবনের আগুন। ফায়ার সার্ভিস, বন বিভাগ, সিপিজি সদস্য, স্থানীয়দের চেষ্টা ও বৃষ্টির পানিতে গতকাল দুপুর ৩টার দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। বিকাল ৫টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিভে গেছে বলে জানান সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন । তিনি বলেন, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকায় লাগা আগুন নিভে গেছে। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানাতে শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, শরণখোলা রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান, ধানসাগর স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম। সাত কার্য দিবসের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, আগুন নেভানো সম্ভব হয়েছে। লোকালয় থেকে ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে বনের গহীনে আগুন নেভাবে বেগ পেতে হয়েছে । তিনি জানান, আগুনে বনের এক একর জমির গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ পুড়ে গেছে। তবে কি কারণে আগুন লেগেছে তার কারণ উদঘাটনে আমরা কাজ করছি।
তবে আগুনে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বন বিভাগ ও প্রত্যক্ষদর্শী গ্রামবাসীর হিসেবে বিস্তর পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে। আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত থাকা দক্ষিণ রাজাপুর, মাঝেরচর ও রসুলপুর গ্রামের আফজাল চাপরাশি, রেজাউল, সালাম ও সুমন বলেন, প্রায় ৯/১০ একর জায়গায় আগুন ছড়িয়েছিল।
সুন্দরবন সুরক্ষা কমিটির সদস্য সোনাতলা গ্রামের খলিলুর রহমান বলেন, বনের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। ৮/১০ একর জায়গার লতাপাতা ছোট গাছ পুড়ছে বলে তিনি জানান।
বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বাগেরহাটের উপ-সহকারী পরিচালক মো. গোলাম সরোয়ার বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দ্বিতীয় দিনে পানি দিয়ে আগুন নেভানো শুরু করা হয়। দুপর ১২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির পানি ও সবার সম্মিলিতভাবে চেষ্টায় আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
বনের কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মুলত লতা পাতা বা গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ আগুন পুড়ে গেছে কোন মূল্যবান গাছের কোন ক্ষতি আমাদের চোখে পড়েনি।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের তথ্য মতে, গত ২০ বছরে সুন্দরবনের পূর্ব বন বিভাগে ২৫ বার অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এসব অগ্নিকান্ডে সুন্দরবনের প্রায় ৭৫ একর শতাংশ বনভূমির গাছ, বিভিন্ন ধরনের ঘাস, লতাপাতা পুড়ে যায়। সর্বশেষ ২০২১ সালের ৮ ফেরুয়ারি ধানসাগার স্টেশন এলাকায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন