বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

দামুড়হুদায় বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনগুলো অরক্ষিত : চুরি ও নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান সম্পদ

প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নুরুল আলম বাকু, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) থেকে : চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পুরাতন ও পরিত্যক্ত ভবনগুলো অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকায় ভবনগুলোর জানালা, দরজা, ইট, চালের টিনসহ অনেক জিনিস চুরি ও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। চোখের সামনে এসব ঘটলেও ভনগুলো অপসারণ বা রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্টদের। জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাইমারি স্কুলের পুরাতন ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় পুরাতন জরাজীর্ণ ভবনগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে নতুন ভবন তৈরি হওয়ায় পরিত্যক্ত ভবনগুলো আর ব্যবহার করা হয় না। ফলে দীর্ঘদিন অব্যবহৃত ও অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে চোরচক্র ঘরের জানালা-দরজা, দেয়ালের ইট, চালের টিনসহ বিভিন্ন জিনিস চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের চোখের সামনে এসব ঘটলেও পরিত্যক্ত ভবনগুলো ও এর জিনিসপত্র রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেই। উল্লেখ্য, ০৯/০১/২০১৩ ইংরেজি তারিখে প্রধানমন্ত্রী দেশের সব বেসরকারি প্রাইমারি স্কুলগুলোকে জাতীয়করণের ঘোষণা দেন যা, ০১/০১/২০১৩ তারিখ থেকে কার্যকরী হয়। ফলে বর্তমানে এসমস্ত স্কুলের পরিত্যক্ত ও পুরাতন ভবনগুলোও সরকারি সম্পদ হিসাবে বিবেচিত। সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন আগে উপজেলার চÐিপুর, জিরাট, ছাতিয়ানতলা, চন্দ্রবাস, দর্শনা কাস্টমস্ ও আজমপুর সরকারি স্কুলসহ বিভিন্ন স্কুলের পুরাতন ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী হওয়ায় সেগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সেই থেকে বিদ্যালয় চত্বরেই অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দীর্ঘদিন এভাবে খোলা অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে ভবনগুলোর দরজা-জানালা, চালের টিন, দেয়ালের ইট ইত্যাদি চুরি ও রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে দিন দিন এগুলোর বিক্রয়মূল্য কমে যাচ্ছে। অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকা এ ভবনগুলো বিক্রির ব্যবস্থা করলে এখনো অনেক অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব। যা দিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনেক উন্নয়নের কাজ হতে পারে। অনেক বিল্ডিং আছে যেগুলোর পুরাতন ইট ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীর, টয়লেট, গ্যারেজ ইত্যাদি নির্মাণ করা যেতে পারে। বিদ্যালয় চত্বরের এসব জানালা-দরজাবিহীন ঘরে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় জরাজীর্ণ ছাদ ও দেয়াল ধসে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিশেষ করে স্কুল ছুটি থাকলে ও রাতের বেলায় এসব পরিত্যক্ত ভবনের ঘরের মধ্যে জুয়া, মাদক সেবন ও নানারকম অসামাজিক কার্যকলাপ চলে। যার ফলে স্কুল ও পার্শ¦বর্তী এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। পরিত্যক্ত ভবনের ভাঙা ইট-পাটকেলের মধ্যে সাপ পোকা-মাকড়ের আখড়া হয়। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এসব জায়গায় খেলতে গিয়ে বিষধর সাপসহ বিষাক্ত পোকামাকড়ের আক্রমণের শিকার হতে পারে। অনেক পরিত্যক্ত ভবনের স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাদের বাইসাইকেল মোটরসাইকেল ইত্যাদি রাখার গ্যারেজ হিসাবে ব্যবহার করে থাকে যা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পরিত্যক্ত ভবনগুলো স্কুলের অনেকখানি জায়গাজুড়ে থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের চলাফেরা ও খেলাধুলা করতে অসুবিধা হয়। সচেতন মহল মনে করেন, বিভিন্ন্ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবহারের অনুপযোগী পুরাতন ও পরিত্যক্ত এসব ভবন বিক্রির করা হলে একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওয়া যাবে, অপরদিকে স্কুলের শিক্ষার্থীরা নিরাপদে চলাফেরাসহ খেলার জায়গা পাবে এবং সেইসাথে এসব পরিত্যক্ত ভবনে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ হয়ে স্কুল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরে আসবে। এ ব্যপারে দামুড়হুদা উপজেলা শিক্ষা অফিসার (প্রাথমিক) নুরজাহান বলেন, ইতোমধ্যেই ৭টি স্কুলের পরিত্যক্ত বিল্ডিং নিলামে দিয়ে দিয়েছি। এখনো ১০/১২টি স্কুল আছে, বর্তমানে সেগুলোও নিলামে দেয়ার প্রক্রিয়া চলমান আছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন