সরকার ঘোষিত ‘কঠোর লকডাউন’র মধ্যেই বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলে ঈদের বাজারে নূন্যতম সামাজিক দূরত্ব দূরের কথা, মাস্ক পড়ার বিষয়টিও যথাযথভাবে মানা হচ্ছে না। লকডাউনের বাস্তব অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাসমূহের অভ্যন্তরীণ রুটে গণপরিবহন চলাচল শুরু হওয়ায় আন্তঃজেলা যোগাযোগ বন্ধের বিষয়টি অনেকটাই গৌন হয়ে পড়েছে। তবে এরপরেও দক্ষিণাঞ্চলের সাথে উত্তরবঙ্গের সড়ক পরিবহন কার্যত বন্ধ রয়েছে।
কিন্তু দক্ষিণাঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও খুলনা বিভাগের প্রায় সব জেলাতেই সড়ক পরিবহন চালু হয়েছে নানা বিকল্প ব্যবস্থায়। আর জেলাগুলোর অভ্যন্তরীণ রুটে যে পরিবহন ব্যবস্থা চালু হয়েছে, তাতেও সমাজিক দূরত্বসহ স্বাস্থ্যবিধি বলতে কিছুই নেই। দূরপাল্লার সড়ক পরিবহন বন্ধ থাকলেও দক্ষিণাঞ্চল সবগুলো জেলা উপজেলায় সব ধরণের যানবাহন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বরিশাল মহানগরী থেকে থ্রিহুইলারে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে ঢাকার কাছে ১৩০ কিলোমিটার দূরের কাঠালবাড়ি ঘাটেও। এদিকে সারাদেশে দোকানপাট খুলে দেয়ার সুবাদে দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্রই ঈদের বাজারে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে নারী-পুরুষ। ফলে বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও লকডাউনের দৃশ্যমান অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে প্রায় প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনেই মাস্ক পড়ার অনুরোধ সম্বলিত কাগজ ঝুলছে। কিন্তু ক্রেতা-বিক্রেতা কারো মাঝেই করোনা মহামারি নিয়ে উদ্বেগ বা সচেতনতা বিন্দুমাত্র নেই।
অথচ দক্ষিণাঞ্চল করোনা সংক্রমন আর মৃত্যুর মিছিল থেমে নেই। শুধুমাত্র এপ্রিল মাসেই দক্ষিণাঞ্চলে সরকারিভাবে করোনা সংক্রমনের সংখ্যা ৩ হাজার ২শ’ জনের মধ্যে মারা গেছেন ৫০ জন।
চিকিৎসা বিজ্ঞান ‘করোনা প্রতিরোধে লাকডাউনের বিকল্প নেই’ বলে চিৎকার দিলেও তা পাত্তা দিচ্ছে না বিবেকহীন মানুষ। এসব বিকেহীনের কর্মকান্ডে এ অঞ্চলের জনস্বাস্থ্যই ক্রমাগত ঝুঁকির কবলে বলে মন্তব্য করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। তাদের মতে, ‘গত বছর ঈদের পরে করোনা সংক্রমন যেভাবে বেড়েছিল, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার পরিস্থিতি সামাল না দিলে আরো ভয়াবহ পরিনতির সম্মুখিন হতে হবে’।
এমনকি পরিস্থিতি সামাল দিতে দক্ষিণাঞ্চলের বেশীরভাগ স্থানীয় সরকার প্রশাসনের ভূমিকা এখনো পুরোপুরি জনকল্যান মুখি নয় বলেও অভিযোগ রয়েছে সরকারি প্রশাসনেরও। পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসনকেও সরকারের কঠোর লকডাউন বাস্তবয়নে পুনরায় কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগণ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন