বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

দিল্লির করোনা রোগী কে বাঁচবে আর কে নয়

বেছে নিতে হচ্ছে ইন্টার্ন রোহনকেই

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

এখনও পড়াশোনার পাঠ চোকেনি। প্রশিক্ষণ চলছে। কিন্তু দিল্লির এক হাসপাতালে তার নজরদারিতেই চলছে করোনা চিকিৎসা। রোহন আগরওয়াল। দেশের অন্যতম সেরা হাসপাতালগুলির মধ্যে একটি রাজধানীর এই ‘হোলি ফ্যামিলি’ হাসপাতাল। সেখানে এখন কে মরবেন আর কে বাঁচবেন, তা আপাত ভাবে ২৬ বছরের রোহনকেই বেছে নিতে হচ্ছে। অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা কোনও রোগীকে সামনে পড়ে থাকতে দেখেও অনেক সময় তার কিছু করার থাকছে না। হাসপাতালে শয্যা, অক্সিজেন কিছুই নেই। রোহন বলছেন, ‘‘কাকে বাঁচানো যাবে আর কাকে যাবে না, তা ঈশ্বর ঠিক করে দেন।’’

গোটা হাসপাতাল চত্বর জুড়েই করোনা আক্রান্তদের পরিবারের ভিড়। অধিকাংশের মুখে কাপড়ের মাস্ক। ওই হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে রোগী ও তাঁদের পরিবার প্রত্যেকেই জানেন হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা নেই। অক্সিজেন, ভেন্টিলেটরের অভাব। ওই হাসপাতালের যে ঘরে বর্জ্য ফেলা হয়, সেখানেও এক রোগী মাটিতে শুয়ে অক্সিজেনের অভাবে কাতরাচ্ছেন এমন ছবিও দেখা গিয়েছে। রোহন নিজেও জানেন না, তিনি কোভিড আক্রান্ত হলে এই হাসপাতালে শয্যা পাবেন কি না। জানুয়ারিতে কোভিড-যোদ্ধাদের টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু হয়েছিল দেশ জুড়ে। সেই সময়ে তিনি অসুস্থ থাকায় টিকা নেওয়া হয়ে ওঠেনি। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘ভাইরাস চলে গিয়েছে, এই ধারণাই সর্বনাশ ডেকে আনল।’’

কখনও কখনও প্রয়োজনে টানা ২৭ ঘন্টাও কাজ করতে হয় রোহনকে। সারা দিনের কাজের পর রাতে যখন ঘুমোতে যান, তখনও যেন শুনতে পান মনিটরে হৃদস্পন্দনের শব্দ। তার দেখভালে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের ভুলতে পারেন না তিনি। চেষ্টায় কোনও খামতি ছিল না। কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসার সরঞ্জাম নেই হাসপাতালে। কোন রোগীর আগে চিকিৎসা করবেন, তা নিয়ে সর্ব ক্ষণ তার ভিতরে দ্ব›দ্ব চলতে থাকে। জানান, ‘কোনও রোগীর হয়তো জ্বর হয়েছে। আমি জানি তিনি অসুস্থ। কিন্তু তার অক্সিজেনের প্রয়োজন নেই বলে তাঁকে ভর্তি করতে পারি না। করোনায় আক্রান্ত একজন বৃদ্ধ এবং একজন যুবকের মধ্যে কাকে ভর্তি নেব, বুঝতে পারি না। দু’জনেরই হয়তো অনেকটা অক্সিজেন প্রয়োজন, কিন্তু শয্যা একটাই।’ হাসপাতালের পরিবেশ দেখে হতাশাগ্রস্ত তরুণ চিকিৎসক। তার কথায়, ‘মাঝে মাঝে ঘণ্টাখানেকের জন্য একটু বেড়িয়ে আসতে ইচ্ছে করে। কারণ আমি জানি, আমায় এখনও টানা ২৪ ঘণ্টা ওই হাসপাতালেই থাকতে হবে।’ সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন