দেশের শীর্ষস্থানীয় ৩০জন আলেম ঈদের আগেই গ্রেফতারকৃত আলেমদের মুক্তি এবং ঈদুল ফিতরের পরপরই কওমি মাদরাসা খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আজ শনিবার একযুক্ত বিবৃতিতে তারা এই আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, পবিত্র রমজান রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের মাস। আল্লাহর দয়া লাভের মাধ্যমে মানুষের পরিশুদ্ধ হয়ে ওঠার মাস। মানুষের প্রতি মানুষের সহমর্মিতার মাস। আল্লাহপাক তার বান্দাদের ভালোবাসেন। কোরআনে এসেছে নিশ্চয়ই আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে উলামায়ে কেরাম তাকে বেশি ভয় করে। ঐশী জ্ঞানের অধিকারী ও নবীর ওয়ারিস ওলামায়ে কেরাম পথহারা মানুষকে পথের দিশা দেন। তারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। কিন্তু আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি যে, সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা কিছু ইসলামবিদ্বেষী ব্যক্তি সরকারের কর্মকা-কে ইসলাম বিরোধী প্রমাণ এবং সরকারের ভাব-মর্যাদা ক্ষুন্ন করে জনগণকে সরকারের উপর ক্ষুব্ধ করার আত্মঘাতী তৎপরতায় মেতে উঠেছে। অসংখ্য নিরপরাধ আলেমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেশের নানাপ্রান্তে সহজ সরল আলেমদের বাড়ি বাড়ি পুলিশী তল্লাশির কারণে তাদের পরিবারের নারী-শিশু সদস্যরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন এবং গ্রেফতার আতঙ্কে আলেম ও ইমামরা মসজিদ-মাদরাসায় যেতে পারছেন না। এসব কারণে মাদরাসা শিক্ষা ও আলেম-ওলামাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী যে অবদান রেখে চলেছেন, তা ম্লান হতে চলছে।
বিবৃতিতে ওলামায়ে কেরামরা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে আদর্শ মানুষ তৈরির প্রতিষ্ঠান কওমি মাদরাসা খুলে দিয়ে মানুষকে আল্লাহর দিকে ধাবিত হবার পথ সুগম করে দিন। করোনা দুর্যোগের কারণে জাতীয় জীবনে যে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে উত্তরণে ইসলামের সঠিক নির্দেশনার আলোকে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগী, কোরআন তিলাওয়াত, তওবা-ইস্তেগফার ও দোয়ার অনুকূল পরিবেশ দরকার। এজন্যে কওমি মাদরাসাগুলো খুলে দেয়া নেহায়েত প্রয়োজন। কওমি মাদরাসা জাতিকে সঠিক ধর্মীয় দিশা দেয়ার সাথে সাথে লাখ লাখ এতিম, অসহায় ও সামাজিকভাবে অবহেলিত প্রজন্মকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে কেন্দ্রের ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু বর্তমানে মাদরাসা বন্ধ থাকার কারণে লাখ লাখ এতিম, গরিব,অসহায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ও জীবনযাত্রা থমকে যাবার অবস্থা তৈরি হয়েছে।
সে কারণে আমরা প্রধানমন্ত্রীর নিকট সনির্বন্ধ আহ্বান জানাই, ঈদের আগেই গ্রেফতারকৃত নিরপরাধ আলেমদের মুক্তি দিন এবং ঈদের পরপর মাদরাসাগুলো খুলে দেয়ার অনুমতি দিন। আমরা দোয়া করি আল্লাহ রাব্বুল আলামীন দেশজাতিকে করোনা মহামারিসহ সকল আজাব থেকে রক্ষা করেন। করোনাভাইরাস ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় দূর করে মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেন।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করে, মাওলানা নুরুল হক (সভাপতি, কওমি মাদরাাসা সংগঠন কুমিল্লা), শায়খুল হাদীস মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী (সিলেট), মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মুফতি গোলাম রহমান (দারুল উলুম ঢাকা), মাওলানা আনোয়ারুল করিম (যশোর), ড. মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, (জামিয়া আরাবিয়্যা নতুনবাগ ঢাকা), প্রফেসর মাওলানা তৈয়বুর রহমান নিজামী, (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়), মাওলানা শহিদুল ইসলাম আনসারী, মাওলানা জামালুদ্দিন মাহমুদ, (কাটাখালী মাদরাসা রাজশাহী), মাওলানা আব্দুর রহিম ইসলামাবাদী, (নাজিরহাট চট্টগ্রাম), মাওলানা আব্দুল মাবুদ (হাকিমপুর বাগেরহাট), মাওলানা মনিরুল হক কাসেমী (কুমিল্লা), মুফতি আরিফ বিল্লাহ, (জামিয়া কারিমিয়া ডেমরা), মাওলানা আব্দুল হক কাওসারী (জামিয়া আশরাফিয়া মাদানিয়া, পটুয়াখালী), মুফতি রেজাউল করিম, (শায়খুল হাদীস, জামিয়া কারিমিয়া, ডেমরা ঢাকা), মুফতি আব্দুল হামিদ (কুষ্টিয়া), মাওলানা মনির আহমদ নদিম (চন্দনাইশ চট্টগ্রাম), মাওলানা শামসুল আলম (সাতকানিয়া চট্টগ্রাম) মাওলানা সৈয়দ মাসউদ আহমদ (মৌলভীবাজার), মুফতি রশিদ বিন ওয়াক্কাস (মাদানী নগর যশোর), মুফতি আহমদ আলী (মিফতাহুল উলুম ময়মনসিংহ), মাওলানা মাহমুদুল হাসান সালমানী (গফরগাঁও ময়মনসিংহ), মাওলানা আব্দুল মালেক চৌধুরী (দারুল উলুম সিলেট), মাওলানা মেরাজুল হক (জামালপুর), মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক (ফুলপুর ময়মনসিংহ), মাওলানা জাবের হোসাইন (ধলহারা মাগুরা), মুফতি শিহাবুদ্দিন কাসেমী (গোপালগঞ্জ), মুফতি গোলাম কিবরিয়া (দর্শনা চুয়াডাঙ্গা), মাওলানা ওসমান গনি (ঝিনাইদহ), মাওলানা রেজাউল করিম (দিনাজপুর), মাওলানা ফজলুল করিম (বগুড়া) ও মাওলানা রশিদ আহমদ (জামালগঞ্জ সুনামগঞ্জ)।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন