শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

স্বজনদের সাথে ঈদ করার জন্য চরম দূর্ভোগ মাথায় নিয়ে বাড়ি ফিরছে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ

কোন বাঁধাই থামাতে পারছে না

মাদারীপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০২১, ৬:৫৫ পিএম

ঈদকে সামনে রেখে শত কষ্ট মাথায় নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রাজধানী ঢাকা ছাড়ছে দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। নাড়ীর টানে কোনো বাঁধাই থামাতে পারছে না স্বজনপ্রিয় মানুষদের। হঠাৎ করেই ফেরি বন্ধের ঘোষণার খবর না পেয়ে হাজার হাজার যাত্রী শনিবার ভোরে এসে ভিড় জমায় মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটের পদ্মার পাড়ে। অথচ ফেরি ছাড়ছে না। সময় যত বাড়ছে একই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে সাধারণ যাত্রী, অ্যাম্বুলেন্স ও ছোট গাড়ির সংখ্যাও। ঠিক একই চিত্র মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট এলাকায়। প্রয়োজনীয় কাজে ঢাকাগামী যাত্রীর সংখ্যাও এই ঘাটে হাজার হাজার। একই সাথে ভোর থেকেই ঘাট এলাকায় দেখা যায় বেশ কিছু রোগীসহ অ্যাম্বুলেন্স, কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি, রয়েছে পণ্যবাহী ট্রাকও।

ভোর থেকে ফেরি ছাড়ার অপেক্ষায় ঘাটের পন্টুনে অপেক্ষা করে হাজার হাজার যাত্রী। ফেরিঘাটের রাস্তায় বাড়তে থাকে গাড়ির সিরিয়াল। ফেরি ছাড়বে কিনা তখনও জানা নেই কারো। একটি রোরো ফেরি সহস্রাধিক যাত্রী নিয়ে দুপুর ১টার দিকে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে এসে নোঙর করে। এর কিছু সময় পরে আরও দুটি ফেরি শিমুলিয়া ঘাট থেকে বাংলাবাজার ঘাটে এসে পৌঁছে। এছাড়াও বাংলাবাজার ঘাট থেকে অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরী কিছু গাড়ি পার করার জন্য একটি ফেরি পন্টুনে প্রস্তুত করলে প্রায় এক হাজার যাত্রী ফেরিটিতে উঠে যায়। পরে ঘাট কর্তৃপক্ষ কিছু যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স পার হবার ব্যবস্থা করে দেয় ঘাট কর্তৃপক্ষ।

বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, সকাল থেকে ঢাকাগামী প্রচুর মানুষ বাংলাবাজার ঘাট এলাকায় জড়ো হতে থাকে। মানুষের সাথে সাথে রোগী বহনকারী এ্যাম্বুলেন্সও ঘাটে আসতে থাকে। পরবর্তীতে বাংলাবাজার ঘাট থেকে কুমিল্লা নামের একটি ফেরি এ্যাম্বুলেন্স ও যাত্রী নিয়ে ছেড়ে গেছে শিমুলিয়ার উদ্দেশ্যে। এর পরেই শাহ পরান নামের একটি রোরো ফেরি যাত্রী নিয়ে বাংলাবাজার ঘাট ছেড়ে যায়।

ঘাট সূত্রে আরো জানা যায়, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে স্বাভাবিক অবস্থায় ১৬টি ফেরি চলাচল করে। লকডাউনে কারণে ১৪ এপ্রিল থেকে সীমিত করা হয় ফেরি চলাচল। লকডাউনের শুরুতে জরুরী সেবায় ছোট ৭ ফেরি চলাচল করলেও। শুক্রবার ঘরমুখী যাত্রী ও জরুরি প্রয়োজনে আসা যানবাহনের প্রচন্ড চাপ থাকায় সব কয়টি ফেরি চলাচল স্বাভাবিক ছিলো। রাত থেকে ফেরী পুনরায় চলবে।

ফুলঝুড়ি বেগম নামের খুলনা এক যাত্রী বলেন, শিমুলিয়া ঘাটে ভোরে এসেছি। আর দুপুরে এসে পৌঁছালাম বাংলাবাজার ঘাটে। ফেরি ছাড়বে না ছাড়বে না করে একটা ফেরি ছাড়লো। হাজার হাজার যাত্রী নিয়ে। এখন এই পাড়ে এসে তো বাড়ি যাওয়ার গাড়ি পাচ্ছি না। বাস তো বন্ধই। মাইক্রোবাসও নাই। অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে আছি। কিভাবে বাড়ি যাবো জানি না। রোজা রেখে এতো কষ্ট সহ্য করা যায় না।ইদ্রিস ফকির নামের গোপালগঞ্জের এক যাত্রী বলেন, ঘাটে কোন গাড়ি নাই। তিন চাক্কার গাড়িতে এতো দূরে যাওয়াও ঝুঁকি। তারপরও মাহিন্দ্রা (থ্রিহুইলার) ঠিক করেছি তিনগুন ভাড়া বেশি দিয়ে।

মো. ইব্রাহিম আকন নামের এক যাত্রী বলেন, ঈদের আগে বাড়ি যেতে হয়। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা আছেন। আজকে পদ্মা পার হতে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্তের কোন কিছুই বুঝি না। ফেরি চলবে না তা একদিন আগেই জানিয়ে দিতো।

বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরী গাড়ি পার করার জন্য ফেরি খুলে দিলে যাত্রীরা ফেরিতে উঠে পড়ে। ঘাট এলাকায় অসংখ্য যাত্রী রয়েছে। তাদের ঠেকানো যাচ্ছে না।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ফেরি চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ক্রিটিক্যাল রোগীদের পার হবার জন্য অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে সকালে একটি ফেরিতে উঠানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু যাত্রীদের চাপে ব্যর্থ হলে ফেরিটি বন্ধ রাখা হয়। পরে চেষ্টা করে ঘাটে আটকে থাকা অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে পার করা হয়েছে। তবে এর পরেই যাত্রীদের চাপ বেশি থাকায় একটি রোরো ফেরি যাত্রীদের নিয়ে বাংলাবাজার ঘাট ছেড়ে গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন