বেনাপোল বন্দরে ভারতীয় চালক-শ্রমিকরা করোনা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। ফলে করোনার নতুন ধরনের ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণের ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে বেনাপোলের কয়েক লাখ লাখ মানুষ। বেনাপোল বন্দর সূত্র জানায়, ভারত থেকে বেনাপোল বন্দরে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬শ’ পণ্য বোঝাই ট্রাক আমদানি হয়ে থাকে। ট্রাকের সাথে আসা চালক ও হেলপার মিলে গড়ে প্রতিদিন এক হাজার মানুষ যাতায়াত করছে বন্দরে। ভারত থেকে বন্দরে প্রবেশের সময় অধিকাংশ চালক ও হলেপারদের মুখে মাস্ক ও পিপি থাকে না। বন্দরে ট্রাক রেখে তারা ঘুড়ে বেড়ায় যত্রতত্র। বন্দর কর্তৃপক্ষের অবহেলায় অধিকাংশ চালকও হেলপারদের বন্দর থেকে বের হয়ে মাস্কবিহীন বেনাপোল বাজারে প্রকাশ্যে দলবদ্ধভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। বন্দরের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা সত্তে¡ও বন্দর কর্তৃপক্ষের অবহেলায় তাদের বেনাপোল বাজারে অবস্থান করেতে দেখা যায়। ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে বেনাপোলবাসী। বর্তমানে বেনাপোল বন্দর অভ্যন্তরে কাস্টমস ও বন্দরের অফিসারসহ ১০ হাজার লোক বিভিন্ন কর্মকান্ডে জড়িত। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে খুব দ্রুত সব ধরনের সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
বন্দর এলাকায় বসবাসকারীরা জানান, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে ট্রাক চালকরা আমদানি পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে আসছেন। তারা স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করছে। এমনকি বন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরাও অনেকে দায়িত্ব পালন করছেন মাস্ক ছাড়া।
বন্দর সূত্র জানায়, ভারতে করোনার নতুন সংক্রমণে মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়ায় প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে সরকার বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত বন্ধ করে দেন। দেশের শিল্প-কলকারখানাগুলোতে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখতে বেনাপোল বন্দরকে লকডাউনের আওতামুক্ত রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চালু রাখে। এতে স্বাভাবিকভাবে রেল ও স্থলপথে বেনাপোল-পেট্রাপোল দুই দেশের মধ্যে চলছে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম। বন্দরে বাণিজ্য সম্পাদনায় কাজ করছেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকসহ প্রায় ১০ হাজার কর্মজীবী মানুষ। তবে বন্দরটিতে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি বেড়ে চলেছে। বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার সাইদুর রহমান জানান, আগে করোনা সংক্রমণ রোধে রেলস্টেশনে বন্দরের পক্ষে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা কাজ করতেন। এখন আর কেউ আসেন না। তিনি বলেন, বর্তমানে ভারত থেকে রেলে পণ্য আসছে। নিরাপত্তার জন্য প্রতিরোধ ব্যবস্থা সচল রাখা জরুরি।
ভারত বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান জানান, ভারতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে ট্রাক চালকেরা বেনাপোল বন্দরে আসছেন, আবার বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকেও পণ্য নিয়ে ট্রাক চালকেরা ভারতে যাচ্ছে, তাই এসব ট্রাক চালকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। বন্দরের উপ পরিচালক মামুন তরফদার বন্দরের অপারেশনের দায়িত্বে থাকায় তার অবহেলায় করোনা স্বাস্থ্যবিধি ভেঙে পড়েছে। বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল বলেন, আগে বন্দরে প্রতিরোধ ব্যবস্থাসহ সবকিছুই ছিল। তবে জনবল সঙ্কটে এখন কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে ট্রাকচালক ও বন্দরের শ্রমিকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিষয়টি তদারকি করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রæত সব প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে। যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন জানান, বন্দর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমাদেরকে অবহিত করলে সব ধরনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন