সম্পর্ক উন্নয়নে গত শুক্রবার তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সউদী আরব গিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের আমন্ত্রণে তিনি এই সফরে যান। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ইমরান খানকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে সপ্তম দফার সফরে উষ্ণ অভ্যর্থনাও জানানো হয়।
দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে সউদী আরব ও পাকিস্তান শনিবার একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। কাশ্মির প্রশ্নে এ দুই ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশের মধ্যে মাসের পর মাস ধরে চলা সম্পর্কের টানাপড়েনের পর তারা এমন চুক্তি করল। সউদী যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমান ও ইমরান খানের মধ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনায় তারা সহযোগিতা সম্প্রসারণ ও জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সউদী আরব সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ত্রাণ ও ঋণ দিয়ে পাকিস্তানকে সহায়তা করলেও কাশ্মির ইস্যুতে তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। সউদী ক্রাউন প্রিন্স সালমান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরানের প্রচেষ্টায় সেই সম্পর্কের আবারও উন্নতি হচ্ছে।
সউদীল রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানায়, উভয় দেশের কর্মকর্তারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড মোকাবেলায় পশ্চিমাঞ্চলীয় জেদ্দা নগরীতে দু’টি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। তারা মাদক চোরাচালানের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি জ্বালানি, অবকাঠামো, পরিবহন, পানি ও যোগাযোগ প্রকল্পে অর্থায়নের ব্যাপারে দু’টি সমঝোতাস্বারক স্বাক্ষরের বিষয়েও সম্মত হন। এ দুই দেশ একটি শক্তিশালী সমন্বয় পরিষদ গঠনের ব্যাপারেও সম্মত হয়েছে। এ সফরকালে ইমরান খান রিয়াদের সাথে সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়ে এবং সউদী আরবে প্রায় ২৫ লাখ পাকিস্তানি কর্মীর চাহিদার ওপর বেশি গুরুত্ব দেন।
সউদী আরব ও পাকিস্তানের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। তবে সম্প্রতি দেশ দুটির সঙ্গে সম্পর্ক অবনতি ঘটে। গত বছর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি কাশ্মীর ইস্যুতে সউদী আরব যথার্থ ভূমিকা রাখতে পারেনি বলে রিয়াদের কড়া সমালোচনা করেছিলেন। তার এই বক্তব্যের জবাবে সউদী আরব পাকিস্তানকে সুদমুক্ত ১০০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার বিষয়টি থেকে সরে যায। একই সঙ্গে পাকিস্তানকে বাজারদরের চেয়ে কম দামে তেল সরবরাহ করার একটি চুক্তি নবায়ন করা হবে না বলেও জানিয়ে দেয়া হয়।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, প্রায় এক বছর পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে রিয়াদে ডেকে নেওয়া দুই দেশের সম্পর্ক ঝালাইয়ের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট মানবাধিকার ইস্যুতে সউদীর বিরুদ্ধে কড়া অবস্থানের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন। তাই এই মুহূর্তে ছোট কিংবা বড় যেটাই হোক না কেন পুরোনো কোনো মিত্রের সঙ্গে বিবাদ জিইয়ে রাখতে চাইছে না সউদী। সূত্র: ডন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন