বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

শ্রমিক সঙ্কটে কৃষক

বোরো ধানের বাম্পার ফলন

সাইদুর রহমান, মাগুরা থেকে | প্রকাশের সময় : ১০ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

জেলার মাঠে মাঠে এখন বোরো ধান বাতাসে দোল খাচ্ছে। মাঠের সোনালি পাকা ধান ইতোমধ্যে কৃষকরা কাটতে শুরু করেছে। কৃষি বিভাগ বলছে, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি মৌসুমে জেলায় এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় জেলার কৃষকরা ৬০ শতাংশ ধান কেটে ফেলেছে। এবার জেলায় মোট বোরো ধানের চাষ হয়েছে ৩৯ হাজার ৮২১ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে মাগুরা সদর উপজেলায় ১৮ হাজার ৮৭৫ হেক্টর, শ্রীপুর উপজেলায় ১ হাজার ৪২০ হেক্টর, শালিখা উপজেলায় ১৩ হাজার ৭০৬ হেক্টর ও মহম্মদপুর উপজেলায় ৫ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। এবার উৎপাদন লাখ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫৯৩ মেট্রিকটন।

এদিকে, বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও ধান কাটা শ্রমিকের অভাব থাকায় জেলার কৃষকরা সময় মতো ধান কাটতে বিড়ম্বনার সম্মুখিন হচ্ছে। করোনা মহামারি ও বার বার লকডাউনের কারণে কাজের সন্ধানে শ্রমজীবী মানুষ বের হতে না পারায় কৃষকরা শ্রমিক পাচ্ছে না। ফলে অনেক কৃষকের জমির ধান পুরোপুরি কেটে ঘরে উঠাতে অনেক সময় লাগছে।

সরেজমিনে মাগুরা সদরের মঘী গ্রামের উত্তরপাড়া মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠে মাঠে বোরো ধান বাতাসে দোল খাচ্ছে। মাঠের অধিকাংশ ধান পেকে যাওয়ায় কৃষকরা ধান কাটা শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে কৃষকরা ধান কেটে মাঠে ফেলে রেখেছেন। অনেক কৃষক জানান, এবার ধান কাটা শ্রমির অভাবে তারা যথাসময়ে ধান কাটতে পারছেন না। ধান কাটা শ্রমিক না পাওয়ার ফলে তাদের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। যেখানে ৩-৪ দিনের মধ্যে ধান কাটা সম্পন্ন হয়। সেখানে একটি ধানের ফসল কাটতে ১-২ সপ্তাহ লাগছে। তারা আরো জানান, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ধানকাটা শ্রমিক এবার করোনা মহামারি ও লকডাউনের ফলে শ্রমিক না আসাতে এ কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

কৃষক আনাস মোল্যা জানান, চলতি মৌসুমে ২৮ শতক জমিতে সে বোরো ধান চাষ করেছে। আশা করছে এবার ১৫-১৬ মণ ধান পাবে। পাকা ধান কাটার শ্রমিক না পাওয়াতে নিজে নিজে কাজ করছে কৃষকরা। তার সাথে সাথে কাজ করছে তার ৮ বছর বয়সী ছেলে বায়জিদ।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত কুমার প্রামানিক জানান, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার জেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বোরো ধানের আবাদের জন্য জেলার কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদান করা হয়েছে। এ চাষে সহযোগিতা করতে কৃষি বিভাগ থেকে জেলার কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। কোন দুর্যোগ ছাড়াই ইতেমিধ্যে ৬০ শতাংশ ধান কৃষকের ঘরে উঠে গেছে। বাকি ৪০ শতাংশ ধান কিছুটা পেকেছে। আশা করা হচ্ছে জেলার কৃষকরা পুরোপুরি ধান ঘরে তুলতে পারবে। তবে বেশ কিছু দিন আগে হিট শটে জেলার প্রায় ৩০৩ হেক্টর জমির ধান আক্রান্ত হয়েছে। অতিরিক্ত গরম বাতাস যেসব ধান গাছে লেগেছে সে ধানগুলো চিটায় পরিণত হয়েছে। এ হিট শটে সদরের মঘি, জগদল ও ছোনপুর এলাকার কিছু ধান আক্রান্ত হয়েছে। বাকি সব এলাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
শওকত আকবর ১০ মে, ২০২১, ১০:০৯ এএম says : 0
এই কৃষকরা ই আমাদের খাদ্য সংকট দুর করে।এদের শ্রমেই ফলে ফসল,আমরা তা ভোগ করি।অথচ আমরা তাদের চিনিনা। কৃষক এ দুঃখ রাখিবে কোথায়??
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন