বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

লকডাউনেও অধিক লাভের আশায় স্পিডবোট চালু

সেই স্পিডবোট মালিক গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম

সম্প্রতি মাওয়ায় স্পিডবোট দুর্ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যুতে দায়েরকৃত মামলার এজহারনামীয় আসামি স্পিডবোট মালিক চান মিয়া ওরফে চান্দুকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। অধিক লাভের আশায় লকডাউনের মধ্যেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্পিডবোটে করে যাত্রী পারাপার অব্যাহত রেখেছিলেন গ্রেফতার হওয়া চান মিয়া ওরফে চান্দু মোল্লা ওরফে চান্দু। তবে মাওয়া ঘাটে দুর্ঘটনা কবলিত স্পিডবোটসহ তার মালিকানাধীন তিনটি স্পিড বোটের একটিরও বৈধ কোনো কাগজপত্র বা অনুমোদন নেই বলে জানিয়েছে র‌্যাব।
গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। এর আগে গত ৩ মে মাওয়া ফেরিঘাট এলাকায় একটি যাত্রীবাহী স্পিডবোট দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে নোঙর করে থাকা বালু বোঝাই বাল্ক হেডের ওপর আছড়ে পড়ে দুর্ঘটনায় ২৬ জন যাত্রী নিহত হন। এ ঘটনায় ৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ৪ মে মাদারীপুর জেলার শিবচর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে গতকাল রাজধানীর ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানাধীন তেঘড়িয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহার নামীয় ২ নম্বর আসামি স্পিডবোটের মালিক চান্দুকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, লকডাউনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অধিক মুনাফা লাভের আশায় চান্দু স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার অব্যাহত রেখেছিলেন। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চান্দু বিষয়টি স্বীকার করেছের। তিনি জানান, দুর্ঘটনার শিকার ওই স্পিডবোটের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হয়েছিল। এছাড়া স্পিড বোটে যাত্রী পরিবহনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থাদির ঘাটতি ছিল। গ্রেফতার জিজ্ঞাসাবাদে আমরা আরও জেনেছি, অতিরিক্ত মুনাফার লোভে তারা অবৈধভাবে স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার তো। ঝুঁকি নিয়ে স্পিডবোট পারাপার করার বিষয়ে যাত্রীদের ও উৎসাহ ছিল।
তিনি আরও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, আসামি চান মিয়া ওরফে চান্দু ৫ বছর ধরে স্পিডবোটের মাধ্যমে যাত্রী পরিবহনের ব্যবসার করে আসছিল। তার তিনটি স্পিডবোটের কোনোটির অসুমোদন ছিলো না। দুর্ঘটনার পরপরই আসামি চান্দু আত্মগোপনে চলে যান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আল মঈন বলেন, এ মামলায় চারজন আসামি। প্রধান আসামির চালক তিনি পুলিশের তত্ত¡াবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন হাসপাতালে। মামলার বাকি দুই আসামি ইজারাদার আরেকজন পলাতক রয়েছে তাদের গ্রেফতারের বিষয়ে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
অবৈধভাবে যারা স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার করছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাওয়া ও দোলোদিয়া ফেরিঘাট স্পিড ব্যবসা পরিচালিত হয় তা বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। বিআইডব্লিটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, জেলা প্রশাসক, ঘাট ইজারাদার ও মালিক সমিতির সম্মানিত তত্ত্বাবধায়নে এ ব্যবসা পরিচালিত হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে অবশ্যই যদি দেখে কোনো অনুমোদনহীন বোর্ড নদী পারাপার করছে যাত্রীদের তাহলে অবশ্যই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের লোকজনকে লুকিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে স্পিডবোটে যাত্রী পারাপার করতো। সাধারণ সময়ে তারা যাত্রী পারাপারের ১৫০ টাকা করে নিলেও সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের সময় তারা ২০০-৩০০ টাকা করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। স্পিডবোটতে ২০ জন যাত্রীর ধারণ ক্ষমতা থাকলেও এ দুর্ঘটনায় আমরা দেখেছি ৩২ জন যাত্রী ছিল। তবে এক্ষেত্রে ঘাট ইজারাদার ও ঘাট মালিক সমিতির গাফিলতি লক্ষ্য করা যায়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন