বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভারতের বাজারে আসছে ‌ট্রাম্পের কোভিড সারানো ভ্যাকসিন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ মে, ২০২১, ৭:০৯ পিএম

ভারতের বাজারে আসছে সুইস ওষুধ প্রস্ততকারক সংস্থা ‘‌রোচে’‌–র কোভিড প্রতিরোধক, যা কাজ করবে দ্রুত। ভারতীয় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের থেকে ছাড়পত্র মিলেছে জরুরি পরিস্থিতিতে ওষুধটি প্রয়োগের।

‘‌রোচে’‌–র এই ভ্যাকসিনকে বলা হচ্ছে ‘‌ওয়ান্ডার ড্রাগ’‌। আশ্চর্য ওষুধ। যা ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শরীরে গিয়ে দ্রুত কোভিড ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তখন এই ওষুধই তার ওপর প্রয়োগ করা হয়েছিল। সুইস ওষুধ সংস্থা ‘‌হফমান–লা রোচে’র তৈরি এই ওষুধটি আসলে কোভিড প্রতিরোধে সক্ষম একাধিক অ্যান্টিবডির ককটেল বা মিশ্রণ। আমেরিকায় কোভিড সংক্রমণ ছড়ানোর সেই শুরুর সময় এই ওষুধটি পরীক্ষার স্তরেই ছিল। সে হিসেবে ট্রাম্পের নিজস্ব চিকিৎসকেরা যথেষ্ট সাহসেরই পরিচয় দিয়েছিলেন এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেও রীতিমত ঝুঁকি নিয়েছিলেন। দেখা গেল, ওষুধটি সাফল্যের সঙ্গেই ট্রাম্পকে কোভিডমুক্ত করতে পেরেছিল।

সেই ওষুধই এবার ভারতে তাদের সহযোগী সংস্থা সিপ্‌লা–র মাধ্যমে বাজারে আনছে রোচে ইন্ডিয়া। জরুরি পরিস্থিতিতে, আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে এই ওষুধটি প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ১২ বছরের বেশি বয়স এবং ৪০ কেজির ওপর ওজন হলে, হাল্‌কা থেকে মাঝারি তীব্রতার কোভিড সংক্রমণের ক্ষেত্রে এই ওষুধ দেয়া যাবে। সদ্য কোভিড হয়েছে, সংক্রমণ সেভাবে ছড়ায়নি, অথবা কোভিড হওয়ার সম্ভাবনা আছে, এমন লোক উপকৃত হবেন এই ওষুধে। ৬০ বছরের ওপর বয়স, হার্টের অসুখ, ফুসফুসের রোগ, কিডনির সমস্যা, ডায়াবেটিস আছে, এমন ‘‌কোমর্বিডিটি’ থাকা রোগীদের জন্যও এই ওষুধ নিরাপদ বলে জানাচ্ছে প্রস্তুতকারী সংস্থা রোচে ইন্ডিয়া।

কীভাবে কাজ করবে এই অ্যান্টিবডি ককটেল সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাঃ শান্তনু চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কোভিড ভ্যাকসিন দেয়ার পর শরীরে কোভিড প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হতে কিছুটা সময় লাগে। অন্তত সপ্তাহ দুয়েক। কারণ ভ্যাকসিন আসলে সামান্য পরিমাণে মৃত ভাইরাস বা ভাইরাসের প্রোটিন অংশ, যা শরীরের ভিতরে গেলে শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা সক্রিয় হয়ে উঠে উপযুক্ত অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা ভবিষ্যতে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। তার বদলে এই ওষুধ সরাসরি অ্যান্টিবডি ঢুকিয়ে দেয় শরীরে, যা তৎক্ষণাৎ সংক্রমণ ঠেকাতে পারে। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকতে যখন তার কোভিড ধরা পড়েছিল, তখন ভ্যাকসিন বলতে সেভাবে পরীক্ষিত কিছু ছিল না। ফলে কিছুটা নিরুপায় হয়েই এই ওষুধটি তার ওপর প্রয়োগ করা হয় এবং তাতে কাজ হয়।

তবে এই ওষুধটির ক্ষেত্রে একটা জরুরি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। ডাঃ শান্তনু চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘এটা কিন্তু একটা সাময়িক ব্যবস্থা। অ্যান্টিবডি শরীরে দেয়া হলেও, সেটা ক্রমে দুর্বল হয়ে যাবে। সেখানে ভ্যাকসিন একটা স্থায়ী সমাধান। কাজেই যখন কারও হঠাৎ করে কোভিড হল, তখন এটা দিয়ে সংকটটা সাময়িকভাবে কাটিয়ে ওঠা যাবে। বা আমাদের দেশে যেখানে ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না, সেক্ষেত্রে এটা দিয়ে কিছুটা সামাল দেয়া গেল।’

অর্থাৎ আচমকা কোভিড আক্রান্ত হলে এই অ্যান্টিবডি ককটেল চিকিৎসার জন্য কিছুটা বাড়তি সময় পাইয়ে দেবে ডাক্তারদের, চলতি পরিস্থিতিতে যেটা স্বস্তিদায়ক। তবে এই ওষুধ কখনোই ভ্যাকসিনের বিকল্প হবে না, ভ্যাকসিনই আসল সমাধান। বলছেন চিকিৎসকরা। সূত্র: ডয়চে ভেলে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন