বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দেবে গেছে মহাসড়ক

ফরিদপুরে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন

কামাল আতাতুর্ক মিসেল : | প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

অসতর্ক হলেই ঘটবে দুর্ঘটনা। তাই যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। ফরিদপুর মহাসড়কের প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকা দেবে উঁচু-নিচু হয়ে গেছে। মহাসড়কটির কোথাও কোথাও কাপেটিং ওঠে খানাখন্দক সৃষ্টি হয়েছে। দেবে যাওয়া অংশটিতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। গাড়ি উল্টে যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্য পণ্যবাহী বড় ট্রাক ও যাত্রীবোঝাই দূরপাল্লার বাসের গতি কমিয়ে নিয়মিত চলাচল করছে। এতে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়তই। ঈদের আগে ওই মহাসড়টি সংঙ্কার না করায় ঘরমুখো মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যানবাহনের চালকেরা।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ ফরিদপুর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফরিদপুর সদরের বাহিরদিয়া সেতু থেকে মুসলিম মিশন কলেজ পর্যন্ত এক কিলোমিটার মহাসড়কটি সর্বশেষ সংস্কার কাজ হয়েছে আড়াই বছর আগে। ফলে ইচ্ছে থাকলেও ফরিদপুর সড়ক বিভাগের কোনো উপায় নেই। সংস্কার কাজ করতে আরও প্রায় ৬ মাস অপেক্ষা করতে হবে। ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন চালকরা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, পাথর ভর্তি দশ চাকার ট্রাক চলায় সড়কের এ সর্বনাশ হয়েছে। ফলে সড়ক উঁচু-নিচু হয়ে গেছে। বেড়েছে ভোগান্তি। ঈদে এই ভোগান্তি আরও বেড়ে যাবে আশঙ্কা করছেন।

স্থানীয়রা জানান, সড়কটির মধ্যভাগে ট্রাকের চাকার চাপে সড়কটি দুই ফুট করে দেবে গেছে। দেবে যাওয়া ওই অংশের গভীরতা দুই থেকে তিন ইঞ্চি পর্যন্ত। সড়কের পাশে নেই কোনো অ্যাপ্রোচ সড়ক। ফলে দ্রতগামী বড় বড় যানবাহনের পাশাপাশি ছোট ছোট যানবাহন চলাচল ও পথচারীদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে সীমাহীন দুর্ভোগের মুখে পড়তে হচ্ছে। কিবরিয়া নামের এক পথচারী দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, গতকাল ভোরে একটি পণ্যবাহী কাভার্ড ভ্যান ফরিদপুর সদরের বাহিরদিয়া সেতু এলাকায় বিকল হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। ওই অংশে চরম ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করতে হয়। রাজবাড়ী এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী ওমর ফারুক বলেন, গত দেড় বছর ধরে সড়কের ওই অংশ দেবে আছে। অথচ মহাসড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি সড়ক বিভাগ। অথচ বর্তমানে প্রতিনিয়ত মহাসড়টিতে গাড়ির চাপে দেবে যাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে।

ট্রাক চালক বিল্লাল হোসেন বলেন, সড়কটির কারণে অনেক কষ্ট হচ্ছে। গাড়ির এক সাইট নামানোর পরে নিয়ন্ত্রণ করা কষ্ট হয়ে যায়। লোড গাড়ি (মাল বোঝাই) নিয়ন্ত্রণ করা কত কষ্ট আমরা বুঝি। প্রায় সিএনজি উল্টে যায়। দ্রুত এর সমাধান দরকার। সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক খালেদ আহমদ বলেন, দেড় বছর ধরে রাস্তাটি দেবেছে। হালকা যানবাহন উল্টে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। খুব ঝুঁকি নিয়ে আমরা গাড়ি চালাই। দিন দিন রাস্তার দেবে যাওয়া বাড়ছে। রাস্তাটি মরণফাঁদে পরিণত হলেও মেরামতের দিকে যেন কারো নজর নেই। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে যে কোনো সময় বড়ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, বাহিরদিয়া সেতু থেকে দক্ষিণে মুসলিম মিশন কলেজ পর্যন্ত এক কিলোমিটার মহাসড়কের ওই অংশে প্রতিদিনই ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। মানুষ আহত হচ্ছে, ইজিবাইক উল্টে যাচ্ছে। মহাসড়ক দেবে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জায়গাটি জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা প্রয়োজন।

এ প্রসঙ্গে ফরিদপুর সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল হোসেন বলেন, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি টিম সরেজমিনে বাহিরদিয়া সেতু থেকে দক্ষিণে মুসলিম মিশন কলেজ পর্যন্ত এক কিলোমিটার সড়ক দেবে যাওয়া জায়গাটা পরিদর্শন করেছে। এই জায়গাটার অনেক নিচের মাটিতে বড়ধরনের সমস্যা আছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই জন্য সড়কের এ অংশটি দেবে গেছে। তিনি আরো বলেন, মহাসড়কে সংস্কার কাজ একবার হলে তিন বছরের মধ্যে আর করা যায় না। ওই অংশে সর্বশেষ সংস্কার কাজ হয়েছে আড়াই বছর আগে। ফলে ইচ্ছে থাকলেও আমরা সংস্কার কাজ করতে পারছি না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন