বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ না দেয়া নজিরবিহীন : জেডআরএফ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম

করোনা পরবর্তী শারীরিক নানা জটিলায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন আছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা প্রদানের জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার। আইন মন্ত্রণালয় সেই আবেদন নাকচ করে দিয়েছে। ফলে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণের আর কোন সুযোগ থাকছে না।

এদিকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ না দেয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)। গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে জেডআরএফের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া একজন ৭৬ বছরের বয়স্কা নারী। তার শ্বাসকষ্ট হলে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। তার অবস্থা বেশ সঙ্কটাপন্ন। খালেদা জিয়ার ভাই শামীম এস্কান্দার পরিবারের পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সাথে দেখা করে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য আবেদন জানায়।

তিনি বলেন, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, বর্তমান বিধি মোতাবেক খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় তাকে বিদেশে পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার কোনো সুযোগ নেই। সুতরাং আমরা তার পরিবারের আবেদনটি মঞ্জুর করতে পারছি না। এই ঘটনায় থেকেই প্রমাণিত হয় যে, বর্তমান সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তারা তাকে বিদেশে উন্নত ও সুচিকিৎসার সুযোগ দিচ্ছে না। অথচ মানবতার কাছে আইন কোনো বিষয় নয়। আমরা সরকারের এহেন অগণতান্ত্রিক ও বেআইনী সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

বিবৃতিতে ডা. হালিম বলেন, খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির চেয়ারপারসন নন তিনি বাংলাদেশের তিন তিনবারের নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী। বর্তমান সরকার মহামারী করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিষয়টি মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিতে পারতো। তার স্বামী বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এবং সেক্টর কমান্ডার ও সেনা বাহিনীর সাবেক প্রধান। আজ তিনি গুরুত্বর অসুস্থ হলেও তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ না দেয়াটা সত্যিই বেদনাদায়ক, অমানবিক ও নজিরবিহীন ঘটনা।

জেডআরএফের বিবৃতিতে বলা হয়- বিশেষ বিবেচনায় অতীতে হিংস্র খুনি থেকে কুখ্যাত মাস্তানদের পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের ক্ষমা পাওয়ার নজির রয়েছে। অথচ দেশে দেশে রাষ্ট্রপ্রধান কর্তৃক এই ক্ষমা করার বিধান রয়েছে শুধু চরম মানবিক বিষয় বিবেচনার জন্য। নয়, দণ্ড স্থগিত করে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠানো নজিরবিহীন ঘটনা নয়। থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, পাকিস্তান সহ অনেক দেশে চিকিৎসার জন্য অনেক সাবেক রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানের বেলায় এমনটি ঘটেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে ৭ বছরের সাজা হলেও লাহোর হাইকোর্ট তাকে জামিন ও সাজা স্থগিত করে বিদেশ ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে দুটো মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে সেগুলো প্রাতিষ্ঠানিক বা রাষ্ট্রীয় কোনো কেঙ্কোরির মতো বিষয় নয়।

সরকারের প্রতি সংগঠনটির পক্ষ থেকে আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, খালেদা জিয়া এমন কোনো মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নন। তার প্রতি মানবিক হোন। তিনি বয়স্কা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি তার ছোটো ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে হারিয়েছেন। তার বড় ছেলে তারেক রহমানও নির্বাসনে। তাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও পরিকল্পিত এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দি রাখা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে খালেদা জিয়া কতটা অসহায় সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা বিশ্বাস করি সরকার মানবিক দিক বিবেচনা করে খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিবে। তা না হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় সরকারকেই বহন করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন