বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

রূপ পরিবর্তন কমপক্ষে ৬ হাজার ৬০০ বার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

চীনের উহান প্রদেশে প্রথম করোনাভাইরাস ধরা পড়ে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর। করোনায় বিশ্ব টালমাটালের গতকাল ছিল এক বছর ৪ মাস ১২ দিন। এই সময়ে করোনা মহামারি তার রূপ পরিবর্তন করেছে কমপক্ষে ৬ হাজার ৬০০ বার।
সিঙ্গাপুরের এজেন্সি ফর সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড রিসার্স-এর বায়ো-ইনফরমেটিক্স ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. সেবাস্তিয়ান মুয়ারের-স্ট্রোহ করোনার রূপ পরবির্তনের ওই তথ্য দিয়েছেন। কেন এমন রূপান্তর ঘটেছে এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি।

ড. সেবাস্তিয়ান বলেছেন, যখনই নিজের প্রতিকৃতী সৃষ্টির সময় কোনো রকম একটি ভুল হয়ে যায়, তখনই এই ভাইরাস রূপান্তরিত হয়। এর ফলে তার জিনগত কোডে নতুন কিছু যুক্ত করা, কিছু বাদ দেয়া বা পরিবর্তন করতে পারে। তার এই ভুল তাকে আরো বেশি বেঁচে থাকার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। যখনই অধিক পরিমাণে ভুল হয়, ততই তার রূপান্তরিত রূপটি টিকে থাকার সুযোগ বৃদ্ধি পায়।

তিনি বলেন, কখনো কখনো তা মূল ভাইরাসকে অতিক্রম করে যায়। ধরুন ডি৬১৪জি রূপান্তরের কথা। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে এর বিস্তার লাভ দ্রুততার সঙ্গে শুরু হয়েছিল। কিন্তু এখন করোনার সব নমুনায় এই রূপান্তরটি পাওয়া যায়। করোনা যেকোনো রূপান্তরই হোক না কেন, তাতে এই রূপান্তরিত ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়। কারণ, এই ভ্যারিয়েন্টটি এত বেশি পরিব্যাপক যে, একে একটি পারিবারিক নাম দেয়া হয়েছিল এবং চিহ্নিত করা হয়েছিল জি বংশ হিসেবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক রিপোর্টে এই জি বংশীয় ভাইরাস অনেক বেশি হারে সংক্রমণ ঘটায় এবং ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ থেকে আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থা গুরুতর হয় না। এমনকি তা চিকিৎসা পদ্ধতি বা কোনো টিকার কোনো ক্ষতি করতে পারে না।
ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন হিসেবে একে শ্রেণিকরণের বিষয়ে ড. সেবাস্তিয়ান বলেছেন, কয়েকটি বিষয়ের মধ্যে কমপক্ষে একটি বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেখাতে হয় রূপান্তরিত ভাইরাসকে। তার মধ্যে এই ভাইরাস যদি খুব সহজেই বিস্তার লাভ করতে পারে। অধিক ভয়াবহ অসুস্থতা সৃষ্টি করতে পারে। অ্যান্টিবডির নিষ্ক্রিয়করণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দিতে পারে। চিকিৎসার কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। টিকা বা চিকিৎসা পদ্ধতির কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। তাহলে একটি ভ্যারিয়েন্টকে শ্রেণিকরণ করা যেতে পারে।

তিনি বলেন, সব রকম রূপান্তরিত ভাইরাস রোগের ক্ষেত্রে তেমন কোন পরিবর্তন করে না। ভ্যারিয়েন্ট সাধারণত ৫ থেকে ১৫ রকমের রূপান্তরের সমন্বয়। এসব মিলে একটি ভ্যারিয়েন্টকে অধিক সুবিধা দেয়। তিনি আরো বলেন, ভাইরাসের যে স্ট্রেইন ভারতকে পর্যুদস্ত করে দিচ্ছে তাকে বর্ণনা করতে ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ অথবা ‘ট্রিপল মিউট্যান্ট’ ভ্যারিয়েন্ট শব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে। একে নামের ভুল প্রয়োগ বলে তিনি মনে করেন।

তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে এসব ভ্যারিয়েন্টে আরো অধিক পরিমাণ রূপান্তর দেখতে পাওয়া যায। সৌভাগ্য এই যে, বর্তমানে তিনটি ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ আছে। তবে প্রচুর ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ (ভিওআই) আছে।
তিনি আরো বলেন, এসবের মধ্যে ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্নের বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। কিন্তু এই মুহূর্তে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ নেই এ বিষয়ে। এটা পরিবর্তনও হতে পারে। এর মধ্যে দুটি ভ্যারিয়েন্ট আছে। তা প্রথমেই শনাক্ত করা হয় ভারতে। এই দুটি ভ্যারিয়েন্টের কারণে ভারতে গত মাসে করোনা সার্জ দেখা দিয়েছে।

ড. সেবাস্তিয়ানের মতে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম এই করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। তখন থেকে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাস তার স্পাইক প্রোটিনে কমপক্ষে ৬ হাজার ৬০০ বার রূপান্তর ঘটিয়েছে। সূত্র : দ্য স্ট্রেইটস টাইমস, অনলাইন এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Md Khelafat Hossain ১২ মে, ২০২১, ২:০০ এএম says : 0
হে আল্লাহ তুমি আমাদের করোনা থেকে হেফাজত করো আমিন
Total Reply(0)
রেজাউল করিম ১২ মে, ২০২১, ২:০১ এএম says : 0
তার মানে করোনা ভাইরাসের নিয়ন্ত্রণ মানুষের হাতে নেই।
Total Reply(0)
Uzzal Hoshen ১২ মে, ২০২১, ৯:৩৩ এএম says : 0
আল্লাহ্ সহায় না থাকলে জাতি এতদিনে আরো অনেক বড় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যেত। আল্লাহ্ মহান।
Total Reply(0)
Saddad Hossain ১২ মে, ২০২১, ১০:৫৫ এএম says : 0
সবাইকে সচেতন হতে হবে।
Total Reply(0)
বুলবুল আহমেদ ১২ মে, ২০২১, ১০:৫৬ এএম says : 0
একমাত্র আল্লাহই আমাদেরকে এই মহামারী থেকে হেফাজত করতে পারেন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন