করোনা সংক্রমণ সতর্কতার কোন আওয়াজও যেন কানে উঠছে না সিলেটিদের। চিরায়িত চিত্রের মতো দলে দলে ঈদ বাজারে উপচে পড়া মানুষের ভিড়। বিপনী বিতান ও শপিংমলগুলোতে নেই স্বাস্থ্যবিধির রক্ষার কড়াকড়ি। অনেকে প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধির কথা বললে চোখ যেন কপালে উঠে কাস্টমারদের। বিরক্তির চাপও দেখা যায়। বলতে গেলে গত এক সপ্তাহ থেকে সিলেট নগরীতে ঈদ বাজারকে কেন্দ্র করে একই অবস্থা। নগরীর প্রতিটি ধূলো কণার সমান যেন মানুষের পা। কোথাও পা ফেলার একটুও জায়গা নেই। গতকাল (মঙ্গলবার) নগরী বিপনী বিতানগুলোতে ঠাসা ভিড় ক্রেতাদের। একই সাথে ক্রেতাদের উপস্থিতি ফুটপাতে সীমাহীন। সামনে পিছে কেবল মানুষ আর মানুষ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ১৬ মে পর্যন্ত দেশব্যাপী ‘লকডাউন’ বলবৎ থাকলেও স্বাস্থ্যবিধির কোন তোয়াক্কা যেন নেই সিলেটে। যে যেমন পারছে তেমনই চলছে। এতে ক্রেতাদের পাশাপাশি বিক্রেতারাও মানছেন না প্রশাসনিক নির্দেশনা। তবে গুটি কয়েক মার্কেটের বাইরে জীবাণুনাশক স্প্রে মেশিন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবস্থা দেখা গেলও সেগুলো ব্যবহারে তেমন নজরধারী নেই।
এদিকে এমন পরিস্থতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, গত মাসে যেভাবে করোানা আক্রান্ত ও মৃত্যু বেড়ে ছিল। বর্তমানে এর থেকে কিছুটা কম থাকলেও দিনদিন যেভাবে লোকজন বেপরোয়া হচ্ছেন এর ফল নাও হতে পারে ভালো। বিগড়ে গেলে সিলেটের পরিস্থিতি কঠিন রূপ নিতে পারে।
নগরীর হাসান মার্কেট, হকার্স মার্কেট, শুকরিয়া, ওয়েস্ট ওয়ার্ল্ড, বøু-ওয়াটার, সিটি মার্কেট, কাজী ম্যানশন, আল-হামরা শপিং, প্লাজা মার্কেট, গুলোতে মূলত স্বাস্থ্যবিধির রক্ষার কোন আলামত নেই। মার্কেটের দোকানগুলোতে ক্রেতা বিক্রেতার একই অবস্থা। সেইলস ম্যানরা মাস্ক খুলে, ক্রেতাদের মনযোগতে ইনিয়ে বিনিয়ে কথার ফুলঝুরি ছড়াচ্ছে। আবার অনেকে মাস্ক পরলেও কেনাকাটা করছেন তা থুতনিতে নামিয়ে। এছাড়া আবার কোনো বালাই নেই শারীরিক দূরত্বেরও। যদিও কয়েকটি জুতার দোকানে দেখা গেছে, স্বাস্থ্যবিধির কড়াকড়ি। মাস্ক ছাড়া দোকানগুলোতে প্রবেশ করতে বিনয়ের সাথে না করা হচ্ছে। কিন্তু ক্রেতাদের ভিড়ে তা সব সময় রক্ষা করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
বিশেষ করে দিনের কিছু কিছু সময় ক্রেতাদের চাপ বেশি থাকায় কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়। তবে বাজারে ক্রেতাদের ভিড়ে ঠাসা থাকলেও বিক্রি আশানুরূপ নয় বলে জানিয়েছেন একাধিক ব্যবসায়ী। কিন্তু মানুষের এ উপচে পড়া ভিড়ের খেসারত ঈদের পর দিতে হতে পারে সিলেটবাসীকে।
কারণ, করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খোলার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন ব্যবসায়ী সংগঠন ও নেতৃবৃন্দ। তাদের সেই প্রতিশ্রæতিতে সরকার কিছু শর্তে নির্ধারিত সময়ের জন্য দোকানপাট খোলার অনুমতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই অনুমতির শর্ত কতটুকু রক্ষা হচ্ছে, তা নিয়ে কোন পদক্ষেপ নেই যেন সংশ্লিষ্টদের। কার শর্ত কে দিচ্ছে. যে যেমন পারছেন তেমন চলছে সিলেটে। তাই ভয়ঙ্কর কোন দশার মুখে পড়তে পারে সিলেটবাসী, এমন শঙ্কা অমূলক নয় মনে করছেন অনেকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন