বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

রামগতি-কমলনগরের মেঘনাপাড়ে লাখো দর্শনার্থীর উপস্থিতি-করোনা সংক্রমনের আশংকা

রামগতি/কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০২১, ১:৫৩ পিএম

কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার মেঘনাপাড়ে। উপস্থিতি অতীতের সকল রেকর্ড ভেংগে লাখো লোকের সমাবেশ। সচেতন মহলের আশংকা করোনা ভাইরাস সংক্রমণে ঝুঁকিতে পড়তে পারে রামগতি ও কমলনগর উপজেলা।

সরেজমিনে আলেকজান্ডার মেঘনার তীরে গিয়ে দেখা যায়,করোনা মহামারীর এই কঠিন মুহুর্তে মেঘনানদীর তীরে লাখো জনতার উপচেপড়া ভীড়।নারী পুরুষ শিশু ও বৃদ্ধা সহ সব শ্রেনী পেশার হাজার হাজার মানুষ সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার ও কমলনগর উপজেলার মাতাব্বরহার ও মতিরহাট সহ মেঘনার তীরের বিভিন্ন স্পটে ঢোল বাধ্য বাজিয়ে আনন্দ উল্লাসের নামে মহা যন্ত্রণা দিচ্ছে এলাকাবাসীকে। ঈদ আনন্দের নামে সড়ক ও বাজারগুলোতে শত শত গাড়ীর বহর ও ঢোল বাধ্যের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।মাস্ক,স্বাস্থ্য বিধির বালাই নেই।থানা ট্রাফিক পুলিশের সামনে দিয়েই উচ্চ আওয়াজের বাদক দল নাচানাচি করে পিক-আপ ভর্তি হয়ে অবাধ চলাচল রীতিমতো বিরক্তিকর। অপরদিকে চলমান করোনা পরিস্থিতির উদ্বেগজনক অবস্থায় এহেন অনিয়ন্ত্রিত উৎসবকে 'তামাশা' বলে মনে করছে রামগতি -কমলনগরবাসী লক্ষ্মীপুর,নোয়াখালী,ফেনী,চাঁদপুর,কুমিল্লা ও রামগতি-কমলনগরের বিভিন্ন ইউনিয়ন-ওয়ার্ড থেকে প্রায় লাখো মানুষের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ করা গেছে। মেঘনার তীরে মানুষের উপস্থিতি কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের মত। চলমান লকডাউনকরোনা মহামারীতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজনের অবাধ যাতায়াত রামগতি-কমলনগরের জন্য এক অশনিসংকেত।
এসবের বিরুদ্ধে এবং চলমান লকডাউন কার্যকর করতে পুলিশকে দেওয়া বিচারিক ক্ষমতার সফল বাস্তবায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে।


ঈদের দিন এবং ঈদের পরদিন ব্যাপক সংখ্যক দর্শনার্থীর উপস্থিতি ঘটেছে।আশপাশের জেলা উপজেলা থেকে বাস, ট্রাক, সিএনজি অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে দর্শনার্থীরা মেঘনার সৌন্দর্য দেখতে আসছেন। ট্রলারে, স্পিডবোটে করে নদী ও চরে ঘুরছেন। লকডাউন জেনেও এবারের ঈদে বেড়ীবাঁধ এলাকায় হোটেল রেস্তোরাঁর সংখ্যা বেড়েছে। নতুন করে স্থাপিত হয়েছে বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ।

ব্যাপক জনসমাগম হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানার ন্যুনতম বালাই ছিলনা কোন দর্শনার্থীর । মাক্স পরতেও দেখা যায়নি কাউকে।

বেড়েছে বাইকারের সংখ্যাও। বেড়ীবাঁধ এলাকায় ছবি তোলার জন্য আছেন ত্রিশজনের একটি ফটোগ্রাফার টিম। নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে ছবি তুলে দিচ্ছেন তারা।



নেয়াখালীর মাইজদী থেকে ঘুরতে আসা মোঃ সাইদ হোসেন, রিয়াদ, আজগর বলেন লকডাউন জেনেও এখানে আসছি। এতো লোক হবে ধারনা ছিলো না।



সোস্যাল এক্টিভিস্ট মাসুদ সুমন জানান, লকডাউনে এতো বেশি জনসমাগম কাম্য ছিলো না। এ ব্যাপারে প্রসাশনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। রামগতিতে করোনার মৃত্যু ঘটেছে। হয়তো কয়েকদিন পর হাসপাতালেও জায়গা দেয়া যাবেনা।

ব্যাপক জনসমাগম নিয়েও সোস্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনরা নানান মন্তব্য করেছেন। স্থানীয় প্রসাশনের দুর্বলতাও দেখছেন কেউ কেউ। অন্যদিকে প্রশাসনের কড়াকড়ি আরোপের কথাও বলেছেন অনেকেই।

আলেকজান্ডার উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন মোঃ আব্দুল্লাহ আল নোমান ও সংবাদকর্মী দেলোয়ার হোসেন বলেন,ঈদের দিন সকাল থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থী শত শত গাড়ীর বহর নেয়ে ঢোল বাধ্য বাজিয়ে নদীর পাড়ে আসেন।করোনা মহামারীতে লাখো জনতার অবাধ যাতায়াত
এখানকার মানুষ আতংকিত।

কমলনগরের মতিরহাট এলাকার শাহরিয়ার কামাল, আনিছুর রহমান সহ অসংখ্য লোকজন সাংবাদিকদের নিকট ক্ষোভ প্রকাশ করে উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরব ভূমিকাকে দায়ী করেন।

এব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রামগতি-কমলনগরবাসী ।

রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সোলাইমান বলেছেন, ইতিমধ্যে পুলিশের ফোর্স পাঠানো হয়েছে। এখন থেকে আর কাউকে বেড়ীবাঁধ এলাকা উঠতে দেয়া হবে না।

রামগতি উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোঃ আবদুল মোমিন বলেছেন, ঈদের দিন বিকেলে প্রচুর লোক চলে আসছে। আজ (রোববার) থেকে আর হবে না। আনসার সদস্যের একটা টীম পাঠানো হয়েছে। এখন থেকে জনসমাগম বন্ধ থাকবে।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান বলেন,এব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের নজরদারী রয়েছে।আজ থেকে নদীর তীরে কোন সমাগম যাতে না হয়,সেজন্য এসিল্যান্ডের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন