শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

আজই কি শিরোপার নিষ্পত্তি?

স্প্যানিশ লা লিগা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০২১, ৭:১৭ পিএম | আপডেট : ৭:৩১ পিএম, ১৬ মে, ২০২১

লিগে আর দুটি করে ম্যাচ বাকি। শেষ পর্যন্ত এ নাটকের শেষ দৃশ্যে কার উৎসব থাকছে? সমীকরণ কী বলে, সম্ভাবনার নিক্তিতে কাকে এগিয়ে রাখা যায়?

সামনের সূচি
প্রতিটি দলেরই দুটি করে ম্যাচ বাকি।

অ্যাটলেটিকোর বাকি ম্যাচ—ওসাসুনা (নিজেদের মাঠে) ও ভায়াদোলিদের (প্রতিপক্ষের মাঠে) বিপক্ষে।

রিয়ালের সূচিটাই কাগজে-কলমে একটু বেশি কঠিন। তাদের ম্যাচ যথাক্রমে অ্যাথলেটিক বিলবাও (প্রতিপক্ষের মাঠে) ও ভিয়ারিয়াল (নিজেদের মাঠে)।

বার্সেলোনার বাকি ম্যাচের প্রতিপক্ষ যথাক্রমে সেলতা ভিগো (নিজেদের মাঠে) ও এইবার (প্রতিপক্ষের মাঠে)।

অ্যাটলেটিকো
সহজ হিসাব। বাকি তিন ম্যাচ জিতলেই লিগ নিশ্চিত। রিয়াল আর বার্সা একটি করে ম্যাচে পা হড়কালে কাজটা আরও সহজ হয়ে যাবে। তখন তিন ম্যাচের দুটি জিতলেও হবে, সাত বছর পর লিগ জিতবে দিয়েগো সিমিওনের দল।

রিয়াল মাদ্রিদ
নিজেদের সব ম্যাচ জিততে তো হবেই, পাশাপাশি প্রার্থনা করতে হবে যাতে অ্যাটলেটিকো অন্তত একটা ম্যাচে পয়েন্ট হারায়। রিয়াল দুই ম্যাচেই জিতলে তাদের পয়েন্ট হবে ৮৪, অ্যাটলেটিকো একটি জয়ের পাশাপাশি একটি ড্র করলে তাদেরও পয়েন্ট হবে ৮৪। কিন্তু মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে থাকায় শিরোপা জিতবে রিয়াল।

বার্সেলোনা
বাকি দুই ম্যাচ তো জিততেই হবে, পাশাপাশি ভাগ্যের কাছে একটু বেশিই ধরনা দিতে হবে মেসিদের। অ্যাটলেটিকোর অন্তত একটা ম্যাচে হার আর রিয়ালের অন্তত একটা ম্যাচে পয়েন্ট হারানোও (ড্র বা হার যা-ই হোক) কামনা করতে হবে। বার্সা বাকি দুই ম্যাচ জিতলে তাদের পয়েন্ট হবে ৮৪।
এর চেয়ে কম পয়েন্ট অ্যাটলেটিকোর তখনই হবে যদি তারা অন্তত একটা ম্যাচে হেরে যায় (বাকি এক ম্যাচ ড্র হলে তখন অ্যাটলেটিকোর পয়েন্ট হবে ৮১)। আর রিয়াল এক ম্যাচে না জিতলেই তাদের আর ৮৪ পয়েন্ট হওয়ার সুযোগ থাকবে না।

পয়েন্ট তালিকায় কে কোথায়
৩৬টি করে ম্যাচ শেষ হয়েছে তিন দলের। ৮০ পয়েন্ট নিয়ে অ্যাটলেটিকো শীর্ষে। দুইয়ে রিয়াল মাদ্রিদ, তাদের পয়েন্ট ৭৮। ৩ নম্বরে থাকা বার্সেলোনার পয়েন্ট ৭৬। তার মানে, তিন দলই যদি নিজেদের বাকি সব ম্যাচ জেতে, তাহলে লিগ জিতবে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। দ্বিতীয় হবে রিয়াল মাদ্রিদ। বার্সেলোনা হবে তৃতীয়।

পয়েন্ট টেবিল

দল ম্যাচ জয় হার ড্র পয়েন্ট
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ৩৬ ২৪ ৮০
রিয়াল মাদ্রিদ ৩৬ ২৩ ৭৮
বার্সেলোনা ৩৬ ২৩ ৭৬
সেভিয়া ৩৬ ২৩ ৭৪
রিয়াল বেটিস ৩৬ ১৫ ১০ ১১ ৫৬

মুখোমুখি লড়াইয়ের হিসাব

স্প্যানিশ লিগে দুটি দলের পয়েন্ট সমান হলে গোলের ব্যবধান নয়, ব্যবধান গড়ে দেয় দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের ফল। আর সেখানে সবচেয়ে এগিয়ে আছে রিয়াল মাদ্রিদ, সবচেয়ে পিছিয়ে বার্সা। লিগে বার্সার বিপক্ষে দুই ম্যাচের দুটিতেই জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ, অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে দুই ম্যাচের একটিতে জিতেছে, অন্যটিতে করেছে ড্র। রিয়াল মাদ্রিদের কাছে দুই ম্যাচেই হেরে যাওয়া বার্সেলোনা লিগে অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে দুই ম্যাচের একটিতে হেরেছে, অন্যটিতে করেছে ড্র।

তার মানে, তিন দলের পয়েন্ট যদি সমান হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে লিগ জিতবে রিয়াল মাদ্রিদ। দ্বিতীয় হবে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। বার্সেলোনা তৃতীয়।

রেকর্ড কী বলে
অ্যাটলেটিকো
রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে লিগে আগের ম্যাচে ২-০ গোলে জিতেছে অ্যাটলেটিকো। নিজেদের মাঠে লিগে সোসিয়েদাদের কাছে অ্যাটলেটিকো সর্বশেষ হেরেছে ২০১২-১৩ মৌসুমে। এরপর থেকে লিগে নিজেদের মাঠে সোসিয়েদাদের ৭ ম্যাচের ৬টিতেই জিতেছে, ড্র করেছে শুধু গত মৌসুমে।

ওসাসুনার বিপক্ষে লিগে সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচের সব কটিতেই অবশ্য জিতেছে অ্যাটলেটিকো। আর নিজেদের মাঠে সর্বশেষ হেরেছে সেই ২০০৮-০৯ মৌসুমে। এরপর থেকে ৭ ম্যাচে ৬ জয়ের পাশাপাশি অ্যাটলেটিকোর একমাত্র ড্র ২০১১-১২ মৌসুমে।

ভায়াদোলিদের বিপক্ষে অবশ্য লিগে ২০০৮-০৯ মৌসুমে সর্বশেষ হারের পর ১১ ম্যাচের ১০টিতেই জিতেছে আতলেতি, একমাত্র ড্র গত মৌসুমে ভায়াদোলিদের মাঠে।

রিয়াল
কী ঘরের মাঠে, কী পরের মাঠে- গ্রানাদার বিপক্ষে লিগে সেই ২০১২-১৩ মৌসুমে একটা হারের পর ১১ ম্যাচের সব কটিই জিতেছে রিয়াল। লিগে সর্বশেষ ১৮ ম্যাচে ১৭ জয়। তবে ২০১২-১৩ মৌসুমে একমাত্র হারটি ছিল গ্রানাদার মাঠে।

বিলবাওয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচেই হেরেছে রিয়াল, তবে সে হার ছিল স্প্যানিশ সুপারকোপার সেমিফাইনালে নিজেদের মাঠে। লিগেও অবশ্য বিলবাওয়ের বিপক্ষে রিয়াল অত দাপুটে নয়। ২০১৪-১৫ মৌসুমের পর হারেনি, তবে এরপর ১১ ম্যাচের ৪টিতে পয়েন্ট হারিয়েছে। এর দুটি বিলবাওয়ের মাঠে। ২০১৫ সালের মার্চে সর্বশেষ হারটিও বিলবাওয়ের মাঠেই।

ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে তো রিয়াল যত জেতে, তার চেয়ে বেশি ম্যাচে পয়েন্ট হারায়। সর্বশেষ ১২ ম্যাচের রেকর্ড বলে, এর মধ্যে মাত্র ৪ ম্যাচে জিতেছে রিয়াল, হেরেছে ২টি, ড্র করেছে ৬টি! এই ১২ ম্যাচের সব কটিই ছিল লিগে। নিজেদের মাঠে ম্যাচ বলেও যে রিয়াল স্বস্তিতে থাকবে এমন নয়। নিজেদের মাঠে সর্বশেষ ৫ ম্যাচে ২ জয়ের বিপরীতে ২ ড্র ও ১ হার রিয়ালের।

বার্সেলোনা
লিগে এর পরের ম্যাচটা বার্সাকে খেলতে হবে লেভান্তের মাঠে, এটাই বার্সা সমর্থকদের ঘাম ছুটিয়ে দিতে যথেষ্ট। সেখানে সর্বশেষ ৪ ম্যাচের ৩টিতেই হেরেছে বার্সা! এর দুটি লিগে, অন্য হারটি গত মৌসুমে কোপা দেল রের শেষ ষোলোতে।

লিগে দুই হারের একটি তো বার্সা–সমর্থকদের এখনো পীড়া দেয়! ২০১৭-১৮ মৌসুমে লিগের ৩৭তম ম্যাচে সেদিন বার্সা নেমেছিল ততদিন পর্যন্ত মৌসুমে অপরাজিত থাকার রেকর্ড নিয়ে। কিন্তু মেসিকে ছাড়া খেলতে নেমে সেদিন বার্সার পুরো লিগ মৌসুম অপরাজিত থাকার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় লেভান্তের কাছে ৫-৪ গোলে হেরে! গত মৌসুমেও সেখানে হেরেছে বার্সা।

সেল্টা ভিগোর বিপক্ষে বার্সার রেকর্ডও তেমন আহামরি কিছু নয়। বিশেষ করে ২০১৪-১৫ মৌসুমের পর থেকে। ২০১৪ সালের নভেম্বরে নিজেদের মাঠে সেলতার কাছে হেরেছিল বার্সা, সে থেকে এ পর্যন্ত ১৫ ম্যাচে বার্সার জয় ৭টি। ২০১৪ সালের ওই ম্যাচসহ হেরেছে ৪ ম্যাচে।

ম্যাচটা নিজেদের মাঠে, এটা অবশ্য মেসিদের জন্য স্বস্তির হতে পারে। এখানে সর্বশেষ ৩ সাক্ষাতে জয়সহ সর্বশেষ ১১ ম্যাচে ৯ জয় বার্সার, হার একটি-২০১৪ সালে।

এইবারের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত অবশ্য ১৩ ম্যাচে কখনো হারেনি বার্সা। জিতেছে ১১টিতে। তবে দুই ড্রয়ের দুটিই এসেছে দুই দলের সর্বশেষ চার সাক্ষাতে, এটা মেসিদের ভাবাতে পারে।

কিন্তু এত সব হিসাব তো ম্যাচের আগের তথ্য কপচানো। ম্যাচে কী হয়, সেটি আগে বলে দিতে পারলে খেলার দরকার কী! ফুটবলে ভবিষ্যদ্বাণী করা এমনিতেই কঠিন। তবে এবারের স্প্যানিশ লিগে যেকোনো ভবিষ্যদ্বাণীই হয়ে উঠেছে অর্থহীন।

আজ রাতে মুখোমুখি

অ্যাথ.বিলবাও-রিয়াল মাদ্রিদ, রাত সাড়ে ১০টা
অ্যাট. মাদ্রিদ-ওসাসুনা, রাত সাড়ে ১০টা
বার্সেলোনা-সেল্টা ভিগো, রাত সাড়ে ১০টা
সোসিয়েদাদ-ভ্যালাদলিদ, রাত সাড়ে ১০টা
আলাভেস-গ্রানাদা, রাত সাড়ে ১০টা
ভিয়ারিয়াল-সেভিয়া, রাত সাড়ে ১০টা
গেতাফে-লেভান্তে, রাত সাড়ে ১০টা
রিয়াল বেতিস-হুয়েস্কা, রাত সাড়ে ১০টা
ভালেন্সিয়া-এইবার, রাত সাড়ে ১০টা
কাদিস-এলচে, রাত সাড়ে ১০টা
সরাসরি : ফেসবুক লাইভ

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন