বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঈদুল ফিতর উদযাপিত

লাখো মসজিদে ‘করোনা মুক্তির’ বিশেষ দোয়া

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে মসজিদে মসজিদে ঈদের জামাত

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের পাদুর্ভাবে ঘরবন্দি মানুষ; তারপরও এক মাস রোজা রাখার পর গত শুক্রবার ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাধকতায় ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে যথাযথ মর্যাদায়। সরকারের পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়েছিল, মহামারিকালের ঈদের জামাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আত্মীয়-স্বজনের বাসায় না গিয়ে পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে পালন করতে হবে ঈদুল ফিতর। খোলা মাঠ ও ঈদগা ময়দানের বদলে শুধু মসজিদে ঈদের জামাত করতে হবে। ফলে এবারও রাজধানীর জাতীয় ঈদগা ময়দান, দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ ঈদগাঁ ময়দান, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাসহ কোনো ঈদগাহ ময়দানে ঈদ জামাত হয়নি। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়েছে মসজিদে মসজিদে। অনেক মসজিদে কয়েকবার করে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেও মসজিদে মসজিদে ঈদ জামাতে মুসল্লিদের ঢল নেমেছিল। ঢাকাসহ বড় বড় শহরের অনেক মসজিদের বাইরেও মানুষ ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।

বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মুসল্লিরা সব ভেদাভেদ ভুলে ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেছেন। খুতবা শেষে মোনাজাতে দেশ ও বিশ্ব মুসলমানের শান্তি, সমৃদ্ধি, করোনা মহামারি থেকে পরিত্রাণের কামনা ও দোয়া করা হয়। ফিলিস্তিনের জনগনের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদও করা হয়। ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজে অংশ নেন সর্বস্তরের মানুষ। এবার বায়তুল মোকাররম মসজিদে প্রবেশে ছিল পুলিশি কড়াকড়ি। মাস্ক পরা ও হ্যান্ডস্যানিটাইজার দিয়ে জীবাণুনাশক নিশ্চিত করে মুসল্লিদের প্রবেশ করানো হয় মসজিদে। ঈদগাহের পরিবর্তে জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হওয়া এই ঈদ জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররমের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।

রাজধানীর মসজিদগুলোতে জায়গা সঙ্কুলান না হওয়ায় রাস্তার ওপর হাজার হাজার মুসল্লির ঈদ জামাত আদায় করতে হয়েছে। মুসলিম স¤প্রদায়ের মধ্যে ঈদকে ঘিরে আনন্দ-উচ্ছ্বাসকে এবার ম্লান করে দিয়েছে করোনাভাইরাস। তবে প্রতিটি মসজিদে ঈদের নামাজে ইমাম ও খতিবরা পবিত্র আল আকসায় ইহুদিবাদী ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের জান-মাল রক্ষায় বিশেষ দোয়া করেন। ঈদের আগের রাতে এশার নামাজের পর থেকেই মসজিদগুলোর মাইক থেকে ঈদ জামাতের সময়সূচি ও করোনাভাইরাসের স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে দফায় দফায় ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদের ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল ৭টায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের প্রধান জামাত বায়তুল মোকাররম মসজিদেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ তার পরিবারের সদস্য এবং কয়েকজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে বঙ্গভবনের দরবার হলে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। রাজধানীর মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজম কমপ্লেক্সেও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ৪টি ঈদ জামাতে মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন।

পবিত্র রমজান মিতব্যয় অনুশীলনের যে সুযোগ নিয়ে আসে, তার তুলনা হয় না। রোজা শুধু ইন্দ্রিয়ের কৃচ্ছ্রসাধনা নয়, মানুষকে আত্মিক বিশুদ্ধতা অর্জনেরও পথ দেখিয়ে দেয়। এক মাসের রোজার পর তাই ঈদুল ফিতরের উৎসব কেবল ভোজনের মাধ্যমে ইন্দ্রিয় তৃপ্তির উৎসব নয়, বিশুদ্ধ আত্মা নিয়ে জীবনকে নতুন করে সাজানোর অঙ্গীকারেরও উৎসব। আত্মিক পরিশুদ্ধির ফলে দূর হয়ে যাবে সব সঙ্কীর্ণতা ও ভেদাভেদ। পুরো রমজান মাস আমরা যে সংযমের অনুশীলন করেছি, তা আমাদের জীবন চলার সব ক্ষেত্রে সীমা লঙ্ঘনের নেতিবাচক প্রবণতা থেকে রক্ষা করবে এমনই প্রত্যাশা। ঈদ যে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে, তার মর্মমূলে আছে শান্তি ও ভালোবাসা। পরস্পরের বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী হয়ে ওঠার এক মহান উপলক্ষ ঈদ। ঈদুল ফিতরের আগমনী সুরে বেজে চলেছে মানুষে মানুষে মিলনের এই আকুতি। কিন্তু করোনা মহামারিতে গোটা বিশ্ব যেন লন্ডভন্ড। লকডাউনের মাঝেই উদযাপিত হয়েছে ঈদুল ফিতর।

ফজর নামাজের পর থেকেই ঈদ জামাতে অংশ নিতে মুসল্লিরা মাস্ক পরে জায়নামাজ নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদে জড়ো হতে থাকেন। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল ৯টায় তৃতীয় জামাত চলার সময় বিপুল সংখ্যক মুসল্লিকে মসজিদের বাইরে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। মসজিদে জায়গা না পেয়ে দক্ষিণ গেটের বাইরে স্টেডিয়ামের সামনের সড়কে অনেককে নামাজে অংশ নিতে দেখা গেছে।

প্রত্যেকটি জামাতেই দক্ষিণ গেট ও উত্তর গেট দিয়ে মুসল্লিদের সারি ধরে আর্চওয়ে দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। প্রতিটি জামাত ও খুৎবাহ শেষে মোনাজাতের সময় আবেগে আপ্লুত মুসল্লিরা গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য কান্নায় ভেঙে পড়েন। করোনা দূর করে স্বাভাবিক জীবনের জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানান তারা। তবে ঈদের নামাজ শেষে মুসল্লিদের কোলাকুলি ও হাত মেলানোর চিরাচরিত চিত্রটি দেখা যায়নি। নামাজ শেষে যে যার মতো বেরিয়ে গেছেন। এদিকে রাজারবাগ পুলিশ লাইনের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে পরপর ৪টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি মিজানুর রহমান ঈদুল ফিতরের জামাতের পূর্বে বয়ানে বলেন, হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করলেন, তখন মদিনাবাসীদের মধ্যে (উৎসব উদযাপনে) বিশেষ দু’টি দিন (প্রচলিত) ছিল। সেই দুই দিনে তারা খেলাধুলায় মেতে উঠত। রাসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞাসা করলেন, (তাদের আনন্দ-উৎসবের) এ দুইটি দিনের তাৎপর্য কী? মদিনাবাসীরা জানালেন, হে আল্লাহর রাসুল! (সা.) আমরা জাহেলি (অন্ধকার) যুগ থেকে এ দুই দিন খেলাধুলা (উৎসব) করে আসছি। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আল্লাহ তায়ালা এ দুই দিনের পরিবর্তে এর চেয়েও উত্তম দু’টি দিন তোমাদের দান করেছেন। আর সেই দিন দু’টি হলো ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা।’ (আবু দাউদ, নাসাঈ)। তখন থেকেই প্রতি বছর মুমিন মুসলমান আরবি শাওয়াল মাসের ১ তারিখ পবিত্র ঈদুল ফিতর এবং জিলহজ মাসের ১০ তারিখ ঈদুল আজহা ঈদ উদযাপন করে আসছেন।
পেশ ইমাম বলেন, ‘ঈদ’ মুসলিম উম্মাহর জাতীয় উৎসব। এক মাস সিয়াম সাধনার পর শাওয়ালের এক ফালি উদিত চাঁদ নিয়ে আসে পরম আনন্দ ও খুশির ঈদের আগমনী বার্তা। সিয়াম পালনের দ্বারা রোজাদার ব্যক্তি ইসলামের আত্মশুদ্ধি, সংযম, ত্যাগ-তিতিক্ষা, দানশীলতা, উদারতা, ক্ষমা, মহানুভবতা, সাম্যবাদিতা ও মনুষ্যত্বের গুণাবলি দ্বারা বিকশিত হন। এ ধারাবাহিকতা অক্ষুণœ রেখেই আসে পবিত্র ঈদুল ফিতর। সাদকায়ে ফিতর আদায়ের মাধ্যমে প্রকাশ পায় সহমর্মিতা। আর ধনী-গরিব কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঈদের জামাতে উপস্থিত হওয়ার মাধ্যমে সাম্যবাদিতা আর মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়।
ঢাকার লালমাটিয়া মসজিদে বায়তুল হারামের খতিব মাওলানা কাজী আবু হোরায়রা ঈদ জামাতের পূর্বে বয়ানে বলেন, ঈদ মানে আনন্দ। নিয়ামতের সবচেয়ে বড় মাস মাহে রমজান চলে গেল। খতিব বলেন, হযরত ওমর ফারুক (রা.) ঈদের দিন শুধু ক্রন্দন করে চলেছেন, লোকেরা জিজ্ঞাসা করল এই খুশির দিনে ক্রন্দনের তাৎপর্য কী? তিনি বললেন, রমজান এসেছিল মাগফিরাত ও নাজাতের জন্য। কিন্তু আমি ক্ষমাপ্রাপ্তদের মধ্যে আছি কি না আমার সে চিন্তা। এ জন্য আমি ক্রন্দন করছি। আজ আমাদেরও একই আকুতি মাহে রমজান থেকে আমরা কতটুকু উপকৃত হতে পেরেছি? ঈদের দিনকে ‘ইয়াওমুল জায়েজাহ’ অর্থাৎ পুরস্কার প্রাপ্তির দিন বলা হয়েছে। আমাদের ফলাফল আজ কী দাঁড়ায় তা কেবল আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন। সুতরাং আজ শুধু আনন্দ নয়, ক্রন্দন করে আল্লাহর কাছে ক্ষমাও চাইতে হবে। রমজানের ত্রæটি-বিচ্যুতির জন্য আল্লাহর নিকট রোনাজারি করতে হবে।

করোনার মহামারির ছোবলে হতদরিদ্র গরিব অসহায় মানুষ দিশেহারা। ঈদের আনন্দ ¤øান হয়ে যাবে যদি আমরা তাদের খোঁজখবর না নেই। তাদের সঙ্গে নিয়েই ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে হবে। আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানাতে হবে তিনি যেন করোনার মতো মহাবিপদ তথা এ গজব তুলে নেন। আল্লাহ সকলের নেক বাসনা পূরণ করুন। আমীন! মিরপুরের বাইতুল আমান সেন্ট্রাল জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী ঈদুল ফিতরের খুৎবা-পূর্ব বয়ানে বলেন, দ্বিতীয় হিজরিতে রাসুল (সা.) প্রথম ঈদের নামাজ আদায় করেন। একই হিজরিতে শাবান মাসে রমজানের রোজা ফরজ হয় এবং সদকায়ে ফিতর, ঈদুল আজহা ও কোরবানি ওয়াজিব হয়। তিনি আরো বলেন, আজ ‘আল্লাহু আকবার’-এর প্রেরণায় উজ্জীবিত হওয়ার দিন। আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের যে কল্যাণকর বিধান দান করেছেন এবং তা পালন করার তাওফিক দিয়েছেন, সেজন্য আল্লাহর শোকর গোজারী করা এবং তাঁর মহত্ত্ব ও বড়ত্ব বর্ণনা করাই হলো ঈদুল ফিতরের অন্যতম তাৎপর্য। ঈদুল ফিতর উদযাপনের পুরো বিষয়টিই ‘আল্লাহু আকবার’-এর চেতনা ও মর্মবাণীকে প্রকাশিত করে। এ জন্য মৌখিকভাবেও ‘আল্লাহু আকবার’ বলা এ দিনের একটি বিশেষ আমল। সাহাবায়ে কেরাম ও সালাফে সালেহীন ঈদের রাতে ও ঈদের সকালে তাকবির পাঠ করতেন। ঈদের নামাজের অতিরিক্ত তাকবির এবং ঈদের খুৎবার তাকবিরগুলো ঈদুল ফিতরের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এই বিধানগুলো পালনের সঙ্গে সঙ্গে জগতের সকল মিথ্যা বড়ত্বের দাবিদারকে পরিত্যাগ করে লা শরীক আল্লাহর বড়ত্বকে স্বীকার করে নেয়া মু’মিনের ঈমানের দাবি। তাই আসুন, এই দিনে আমরা ‘আল্লাহু আকবারের’ প্রেরণায় উজ্জীবিত হই এবং সকল মিথ্যা ‘ইলাহ’র দাসত্ব পরিত্যাগ করে এক আল্লাহর পূর্ণ আনুগত্যে সমর্পিত হই। আমীন!

ঢাকা ঊত্তরা ৩ নং সেক্টরস্থ মসজিদ আল মাগফিরার খতিব মুফতি ওয়াহিদুল আলম ঈদ জামাতের পূর্বে বয়ানে বলেন, ঈদের দিনটি মূলত আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে বান্দার প্রতি দয়া ও করুণা প্রকাশের দিন। বান্দার প্রাপ্য পুরস্কার বান্দাকে প্রদান করার দিন। এ দিন আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদের মাধ্যমে বান্দাদের মাগফেরাত ও ক্ষমার ঘোষণা দেন। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঈদুল ফিতরের দিন সব রাস্তার মাথায় ফেরেস্তারা দাঁড়িয়ে থাকে। তারা ঘোষণা দিতে থাকে, হে মুসলমানেরা! তোমরা তোমাদের করুণাময় প্রভুর দিকে এগিয়ে যাও। তিনি তোমাদের কল্যাণ দান করবেন। বিরাট পুরুস্কার দিবেন। তিনি তোমাদের রমজানের রাতে নামাজ পড়তে বলেছিলেন, তোমরা তা করেছ। দিনে রোজা রাখতে বলেছিলেন, তোমরা তা রেখেছ। তোমরা তার কথামতো কাজ করেছ। নাও এবার পুরুস্কার নাও। ঈদের নামাজ শেষ করার পর একজন ফেরেশতা ঘোষণা করেন শোন! শোন! তোমাদের রব তোমাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন। তোমরা তার পক্ষ হতে প্রাপ্ত হেদায়াত সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরে যাও।

দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা রেজাউল করিম ঈদুল ফিতরের জামাতের বয়ানে মুসল্লিদের উদ্দেশে বলেন, এক মাস সিয়াম সাধনার পর রোজাদারের খুশির দিন হচ্ছে ঈদুল ফিতর। ধনী-গরিব রাজা-প্রজা সকল ভেদাভেদ ভুলে, শুকরিয়ার দুই রাকাত নামাজ আদায় করে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন। কিন্তু ফিলিস্তিনি ভাইদের জন্য বড়ই অপরাধী মনে হয় নিজেকে। ঘরহারা, সন্তানহারা, মাহারা, বিভীষিকাময় ফিলিস্তিন। রাব্বি কারীম তাদের সুদিন দাও। সবার স্লোগান হোক আজ, মসজিদে আল-আকসাসহ ফিলিস্তিন মুক্তি পাক। ইহুদিবাদ নিপাত যাক।

রাজধানী ঢাকাসহ যে লাখ লাখ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়েছে; প্রত্যেকটি মসজিদের ঈদের নামাজের পর খতিব ও ইমামগণ ইসরাইলি বাহিনীর হামলার প্রতিবাদসহ করোনাভাইরাস থেকে পরিত্রাণে আল্লাহর অনুকম্পা ও মুসলিম জাহানের শান্তি কামনা করেছেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, ধর্মীয় ভাবগম্ভীর এবং সেই সাথে উৎসবমুখর পরিবেশে বারো আউলিয়ার চট্টগ্রামে পবিত্র ঈদ উল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। এক মাস সিয়াম সাধনার পর ধর্মপ্রাণ মানুষ ঈদ জামাতে শামিল হন। মসজিদে মসজিদে ছিলো মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড়। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে ইমাম ও খতিবগণ মুসল্লিদের সাথে নিয়ে করোনা মহামারি থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ দোয়া করেন। মোনাজাতে করোনায় নিহতদের মাগফিরাত ও অসুস্থদের আরোগ্য কামনা করা হয়। সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে। সেখানে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ, লালদীঘি শাহী জামে মসজিদ, বায়তুশ শরফ মসজিদ, চন্দরপুরা জামে মসজিদ, এনায়েত বাজার শাহী জামে মসজিদ, জাম্বুরি ময়দান জামে মসজিদসহ নগরী ও জেলার সব মসজিদে ছিলো বিপুল মুসল্লির উপস্থিতি।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন