শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

দীর্ঘ যুদ্ধে জিতবে হামাস : জেরুজালেম পোস্ট

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০২১, ১:১৭ পিএম

টানা আট দিন ফিলিস্তিনের গাজায় সব ধরণের হামলা অব্যাহত রেখেছে। এতে নিরীহ ফিলিস্তিনিরা জীবন দিচ্ছেন। ইতোমধ্যে ২০০ বেশি মানুষ নিহত হয়েছে ইসরাইলী হামলায়।

এদিকে হেস্তনেস্ত না হওয়া পর্যন্ত হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাবে ইসরাইলি সেনারা ঘোষণা দিয়েছে। গত সোমবার থেকে হামাস ও ইসরাইলি সেনা পরস্পরকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। তা নিয়ে বাংলাদেশসহ একাধিক দেশ ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যুদ্ধ থামিয়ে শান্তি ফেরানোর বার্তা দিয়েছে সকলে।

কিন্তু ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সাফ বক্তব্য, আমরা কোনও অপরাধ করিনি। যারা আমাদের আক্রমণ করে চলেছে, যাবতীয় অপরাধবোধের দায় তাদেরই। সপ্তাহব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ২০০-র কাছাকাছি প্রাণ গেলেও সিদ্ধান্তে অনড় ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী। গাজায় ইসরাইলি সেনার হানায় শনিবারই আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস এবং আল জাজিরার ১২তলা ভবন গুঁড়িয়ে গিয়েছে।

তাতে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়লেও নেতানিয়াহু জানান, অভিযান চলবে। যত দিন প্রয়োজন, তত দিন পর্যন্ত অভিযান চলবে। হামাসের মতো ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ নাগরিকদের নিশানা করছি না আমরা। বরং নিরীহ নাগরিকদের এড়িয়ে সন্ত্রাসবাদীদের উপরই সরাসরি আঘাত হানছি। ইসরাইল অধিকৃত গাজা ভূখ- এবং জেরুজালেমের একাংশে হঠাৎই হামলা চালিয়েছিল হামাস। আকাশের ওপার থেকে ছুটে এসেছিল ঝাঁকে ঝাঁকে রকেট। ইসরাইলি সেনার মতে, অন্তত শ’দেড়েক তো হবেই। বিশেষ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সাহায্যে অধিকাংশ রকেটের অভিমুখ ঘুরিয়ে দেয়ায় ক্ষয়ক্ষতি অনেকটা আটকানো গিয়েছে। পাল্টা জবাব দিতে শুরু করেছে ইসরাইলও।

সাম্প্রতিক বছরগুলির মধ্যে সবথেকে খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে দেশটি। ২০১৪ সালের পর গাজার উগ্রপন্থিদের সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধ শুরু হয়েছে ইসরাইলের। তেল আবিবে আল-আকসা মসজিদে ইসরাইলি পুলিশ ও ফিলিস্তিনিদের খ-যুদ্ধের পর জেরুজালেম লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালায় হামাস। প্রত্যাঘাত করে ইসরাইলি সেনা। এখনও পর্যন্ত প্রায় দু’শ মানুষ মারা গিয়েছে গাজায়। আহত প্রায় ৯০০।

এদিকে হামাসের মুখপাত্রের দাবি, ইসরাইলের হামলা সত্ত্বেও তাদের মনোবল ভাঙেনি। এখনও লড়াইয়ের জন্য তৈরি তারা। ২০০৬ সালের পর থেকে ফিলিস্তিনি অংশ দুটি প্রধান দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে: ফাতাহ এবং হামাস। এর মধ্যে ফাতাহ-ই বর্তমানে সবচেয়ে বড় দল। এর ফলে দেশের কেন্দ্রীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক শাসিত মূল ভূমি ব্যবহারিক অর্থে দুই ভাগে ভাগ হয়ে গেছে: পশ্চিম তীরে ফাতাহ এবং গাজা উপত্যকায় হামাস প্রভাব বিস্তার করেছে।

এতে সমস্যা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ ইসরাইলসহ অনেকগুলো দেশই হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে। তার মানে, ২০০৬ এর নির্বাচনে হামাস সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হলেও তাদেরকে কোন আন্তর্জাতিক সমঝোতা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেয়া হয়নি। ২০০৮ এর শেষ নাগাদ একটি চিরস্থায়ী শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হয়েছিল।

অংশগ্রহণকারী দলগুলো বলেছে, ৬টি প্রধান বিষয় আছে যেগুলোর সমাধান না হলে শান্তি আসবে না। এগুলো হচ্ছে: জেরুজালেম, শরণার্থী, আবাসন, নিরাপত্তা, সীমান্ত এবং পানি। এই বিষয়গুলো নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। ইসরাইল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে এই সংঘাত নিয়ে বিভিন্ন রকম মতামতের সৃষ্টি হয়েছে। এর মাধ্যমে বোঝা যায়, সংঘাতটা শুধু ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে নয়, উভয়ের অভ্যন্তরেও অনেক অন্তর্দ্বন্দ্ব বিদ্যমান। এই সংঘাতের সবচেয়ে বীভৎস দিক হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি সহিংসতা। সহিংসতা দ্রুত অন্যান্য শহরে ছড়িয়ে পড়েছে ।

আরব বাসিন্দারা রাস্তায় এবং তাদের বাড়িতে ইহুদিদের উপর হামলা চালিয়েছে, উপাসনালয়গুলি জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং বিশাল অঞ্চলে ভাঙচুর করেছে। ইহুদি চরমপন্থি গোষ্ঠীগুলি সারা দেশজুড়ে লোকদের বাইরে গিয়ে যেকোনো আরববাসীর মুখোমুখি হয়ে লড়াই করার জন্য উদ্বুদ্ধ করছে। যদিও ইহুদিদের রক্ষা করার নামে তারা আদতে আরব বিরোধী সংঘর্ষ চালিয়ে যাচ্ছে।

করোনা ভাইরাস সংকট থেকে অর্থনৈতিক চাপসহ ইসরাইল এবং ফিলিস্তিন উভয় অঞ্চলেই চলমান রাজনৈতিক কলহ ও অস্থিতিশীলতা দাবানলের কাজ করেছে।

ইজাদাদিন আল-কাসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু-উবাইদা বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জানান, এই সংঘর্ষ আসলে আমাদের জনগণের সংহতির প্রতি আঘাত। হামাস যে গতিতে এগোচ্ছে তাতে অনেকেই মনে করছেন তাদের পাল্লা ভারী। কারণ লেবানন, জর্ডনের মতো দেশগুলির সমর্থন তাদের দিকে আছে। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা বাহিনীকে সহিংসতার বিরুদ্ধে আরো কঠিনভাবে কাজ করতে হবে এবং অবশ্যই একটি শান্তিপূর্ণ আলোচনার প্রয়োজন বলে আছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা, তবেই এই হিংসা, রক্তপাত, প্রাণহানির বিরাম ঘটতে পারে বলে মনে করছেন তারা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Md. Obaeidul Hussain Al-Sami ১৭ মে, ২০২১, ২:১৭ পিএম says : 0
রব কামিয়াবি করবেই ইনশাআল্লাহ
Total Reply(0)
Mahbub Alam Kazal ১৭ মে, ২০২১, ২:১৮ পিএম says : 0
ইনশাআল্লাহ মুসলমানদের জয় হবে আল্লাহর রহমতে।আল্লাহর সর্বশক্তিমান।
Total Reply(0)
Mohsin Khan ১৭ মে, ২০২১, ২:১৮ পিএম says : 0
ইনশা-আল্লাহ,মুসলিম রাষ্ট্র গুলো ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ালে ইজরায়েল নামক দেশের অস্তিত্ব থাকবেনা।
Total Reply(0)
Sarwar Hossen ১৭ মে, ২০২১, ২:১৯ পিএম says : 0
গেরিলা যুদ্ধ আর প্রচলিত যুদ্ধের মধ্যে পার্থক্য প্রচুর। হামাস এবং হিজবুল্লাহ এরা গেরিলা যোদ্ধা, গেরিলা যুদ্ধে আফগানিস্তানে নাটো ও আমেরিকা টিকতে পারে নাই,ভিয়েতনাম এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টিকতে পারে নাই, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধের সামনে পাকিস্তান টিকতে পারে নাই, দীর্ঘদিন যুদ্ধ ইসরাইল ও টিকতে পারবেনা। কারন প্রচলিত যুদ্ধে মিসাইল তার লক্ষ্যবস্তুর কম বা বেশী যেতে পারে না, কিন্তু গেরিলা যোদ্ধারা কম বেশী যে কোন স্থানে যেতে পারে তা না হোলে ৭০ বতসর ফিলিস্তিনি দের টিকার কথা না।
Total Reply(0)
Belal Hossain ১৭ মে, ২০২১, ২:২০ পিএম says : 0
তার জলন্ত উদাহরণ আফগানিস্তান।
Total Reply(0)
হুমায়ূন কবির ১৭ মে, ২০২১, ২:২১ পিএম says : 0
তাহলে এবার ফিলিস্তিন ইহুদি মুক্ত করা হবে ইনশাআল্লাহ
Total Reply(0)
Dadhack ১৭ মে, ২০২১, ৯:২৬ পিএম says : 0
O'Allah give victory to Hamas and wipe out Barbarian Cancerous Israel from Palistinian Land. Ameen
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন