বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অনেক ঝড় মাথায় নিয়ে দেশে আসতে হয়েছিল

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ মে, ২০২১, ১২:০১ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর যেন দেশে ফিরতে না পারি সেজন্য তখনকার সরকার অনেক বাধা দিয়েছিল। অনেক ঝড়-ঝাপটা মাথায় নিয়েই আসতে হয়েছিল। সব বাধা অতিক্রম করেই দেশে ফিরেছি এবং আজকের এই অবস্থানে আসতে পেরেছি। গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে যুক্ত হন তিনি।
৪০ বছর আগে এই দিনে দীর্ঘ নির্বাসন শেষে নিজের দেশে ফেরার প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, দেশে আসার পর আমাদের অনেক ঝড়-ঝাপটা পার হতে হয়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আল্লাহ সবসময় সহযোগিতা করে এবং আল্লাহ মানুষকে কিছু কাজ দেয়। সে কাজটি যতক্ষণ শেষ না হয় ততক্ষণ কিন্তু আল্লাহ তাকে রক্ষা করে। এজন্য আজ একটা আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, যখন দেশে ফিরে আসি, তখন দেশের মানুষের ভালোবাসা ও দোয়া পেয়েছি। যার কারণেই তাদের ভাগ্য বদলাতে কাজ করতে পেরেছি। দেশের মানুষের শক্তিই বড় শক্তি। সেই শক্তিকে সাথে নিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতা কখনও ব্যর্থ হতে পারে না। অনেক ঝড়-ঝাপ্টা পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশ এখন উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, যা আওয়ামী লীগ সরকার করতে পেরেছে দেশের মানুষের ভালোবাসায়। এদেশের ইতিহাস আর কেউ মুছে ফেলতে পারবে না।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই বাংলাদেশ স্বাধীন বাংলাদেশ, স্বাধীন থাকবে এবং আমার বাবার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলব। আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র, অনেক চিঠিপত্র পাঠানো.. অনেক করা, বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা, অনেক কিছুই করা হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৫ আগস্ট পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হত্যা করার পর দীর্ঘ ছয় বছর প্রবাস জীবন শেষে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর দায়িত্বভার নিয়ে দেশের মাটিতে আসেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি সেই স্মৃতি হাতড়িয়ে বলেন, জানতামই যে খুনি এবং যুদ্ধাপরাধী তাদের বিচার আমার বাবা শুরু করেছিলেন। তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, তারা ক্ষমতায়। খুনিদের ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে, তারা ক্ষমতায়। ওই অবস্থায় কিন্তু আমি চলে আসছিলাম। আমি কোনো কিছু চিন্তা করিনি, আমি চলে এসেছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হতে পারে না, স্বাধীনতাকে আমাদের সফল করতেই হবে। ওইভাবে একটি প্রতিজ্ঞা আমার আর রেহানার সবসময় ছিল। চলেও এসেছিলাম। তবে এসেছি তো ঝড় মাথায় নিয়ে। সেদিন ৬০ মাইল বেগে ঝড় হচ্ছিল। তখন আমি ট্রাকে আর হাজার হাজার মানুষ রাস্তায়।
যারা ওই সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছিলেন, যারা দলের সভানেত্রী নির্বাচিত করেছিলেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
এ বিষয়ে তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় কথা জনগণের শক্তিটা হচ্ছে সব থেকে বড় শক্তি। কারণ আমি যখন বাবা-মা ভাইবোন হারিয়ে এই দেশে এসেছি; গ্রাম-গঞ্জে যেখানেই গেছি সাধারণ মানুষ, গ্রামের মানুষদের অনেক ভালোবাসা, স্নেহ পেয়েছি। শুধু আমাদের দেশের ভেতরে না, বাইরের সবকিছু মিলিয়েই অনেক ঝড়-ঝাপটা পার হয়েই আজকে এই জায়গাটায় আসতে পেরেছি। এটিই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা। আর ইতিহাস একেবারেই মুছে ফেলা হয়েছিল, পুরো পরিবর্তন করা হয়েছিল। এখন একটা আত্মবিশ্বাস এসে গেছে বাংলাদেশের ইতিহাস আর কেউ কোনোদিন বিকৃত করতে পারবে না, মুছতে পারবে না।
সে জন্য দেশের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা জানানোর পাশাপাশি দলের সেই সময়কার নেতাকর্মীসহ যারা সঙ্গে থেকে কাজ করেছেন তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, আমার ফিরে আসার ব্যাপারে সব থেকে আগে স্টেটমেন্ট দেয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ওবায়দুল কাদের। সে তখন ছাত্রলীগের সভাপতি। আর যুবলীগের চেয়ারম্যান ছিলেন তখন আমাদের আমির হোসেন আমু সাহেব। যুবলীগের পক্ষ থেকে তারা দিয়েছিলেন। আর জাতীয় সংসদে এই কথাটা তুলেছিলেন মিজানুর রহমান চৌধুরী। যদিও তিনি পরে অন্য দলে চলে যান। কিন্তু তিনিই প্রথম আমার আর রেহানার দেশে আসার বিষয়টা তিনি তুলেছিলেন। তিনি বলেন, এইটুকু বলতে পারি, আল্লাহ সবসময় সহযোগিতা করে এবং আল্লাহ কিছু কাজ দেয় মানুষকে। সে কাজটা যতক্ষণ শেষ না হয় ততক্ষণ কিন্তু আল্লাহ রক্ষা করে বলে দৃঢ়তা প্রকাশ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
বাংলাদেশে ফেরার পর বিভিন্ন সময় তার ওপর হামলা করে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়েছিল, সেদিকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আজকে যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, এগিয়ে যাবে, সেটি আশা করি। পাশাপাশি বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন