শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নির্মমতার শিকার জান্নাত সুস্থ হয়ে ওঠছে : গৃহকর্ত্রীসহ আটক ৩

প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চাঁদপুর জেলা সংবাদদাতা : অমানবিক নির্যাতনের শিকার ৯ বছরের শিশু জান্নাতের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ জন্য তিন সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। বাড়িতে মাকে দেখতে যাওয়ার ‘অপরাধে’ গৃহকর্মী জান্নাতকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। পুলিশ নির্যাতনকারী গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রীসহ ৩ জনকে আটক করেছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর বাড্ডার সাঁতারকুলের বোনের বাড়ি থেকে জান্নাতের গৃহকর্ত্রী মনি বেগমকে আটক করে পুলিশ। এর আগে আটক করা হয় গৃহকর্তা ওমর ফারুক ও তার ভায়রা মোস্তফা সর্দারকে। তাদেরকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। শুক্রবার দুপুরে গাজীপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মাহবুবা আক্তার এ নির্দেশ দেন।
গাজীপুরের ভুরুলিয়া এলাকায় ওমর ফারুক-মনি বেগম দম্পতির নির্যাতনের শিকার হয় গৃহকর্মী জান্নাত। তার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায়। এরপর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মোস্তফা সর্দার নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে শিশুটিকে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের হাইমচরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার শিশুটিকে প্রথমে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চাঁদপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক রায়হান মো. ফারুক জানান, তিন সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এতে দ্রুত শিশুটির শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটছে। পরিচর্যার জন্য সার্বক্ষণিক একজন নার্স দায়িত্ব পালন করছেন। শিশুটির মাথায় ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে গরম খুন্তি ও বিদ্যুতের তারের আঘাতে ক্ষত হয়ে গেছে। পুরোপুরি সুস্থ হতে ১৫-২০ দিন লাগবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জয়দেবপুর থানার এসআই আবদুল আজিজ জানান, শিশু নির্যাতনের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে থানায় মামলা হয়েছে। মামলার বাদী হয়েছেন শিশুটির প্রতিবেশী শাহজাহান ভুঁইয়া। গৃহকর্তা ওমর ফারুক ও তার ভায়রা মোস্তফা সর্দারকে ওই মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়।
শিশুটির চিকিৎসার জন্য ২৫ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল। শুক্রবার দুপুরে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে যান তিনি। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বিশেষ শিল্পাঞ্চলের চেয়ারম্যান, সচিব প্রবণ চৌধুরী ও তাঁর মেয়ে পল্লবী চৌধুরী আর্থিক সহায়তা দেন।
পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে তৃতীয় জান্নাত। রিকশাচালক বাবা মন্টু মাতাব্বর ও মা ফিরোজা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা পায় তা দিয়ে চলে সংসার। গত এক বছর আগে অভাব-অনটন থেকে মুক্তি মিলবে এমন আশার কথাই শুনিয়েছিলেন গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকার বাসিন্দা ওমর ফারুক ও মনি বেগম। ওমর ফারুক বিমান বন্দরে চাকুরি করেন। মনি বেগম স্কুল শিক্ষিকা। তাদের মাধ্যম হয়ে কাজ করেন জান্নাতের সম্পর্কীয় খালু মোস্তফা সরদার। মোস্তফা সরদারের শ্যালিকা হচ্ছে মনি বেগম ও ভায়রা হচ্ছে ওমর ফারুক। গত এক সপ্তাহ আগে জান্নাতকে তার খালুর মাধ্যমে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন ওমর ফারুক ও মনি বেগম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন