শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভারতীয় করোনায় কাঁপছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া

দ্য ইকোনোমিস্ট | প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০২১, ১২:০২ এএম

গত ২৫ এপ্রিল ব্লুমবার্গ সিঙ্গাপুরকে বিশ্বের সেরা দেশ হিসাবে স্থান দিয়েছিল, কারণ দেশটিতে স্থানীয় কোনো সংক্রমণ ছিল না। এর দু’দিন পর দেশটির ট্যান টক সেঙ হাসপাতালের ৪৬ বছর বয়সী এক নার্সের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে এবং তারপর, কয়েক ডজন সংক্রমণের খবর প্রকাশ পায়। এক সপ্তাহের মধ্যে সিঙ্গাপুর সরকার বিমান ও নৌ বন্দরসহ অন্যান্য জনবহুল স্থানে নতুন ক্লাস্টার বা গুচ্ছ করোনা সংক্রমণ চিহ্নিত করে। সিঙ্গাপুরের কোভিড-১৯ টাস্কফোর্সের মন্ত্রী লরেন্স ওয়াং গেল ১১ মে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘আমরা এখন ছুরির ডগায় রয়েছি।’

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশিরভাগ অংশের এখন একই অবস্থা। সমগ্র অঞ্চল জুড়ে এমন সব জায়গায় ক্লাস্টারগুলো পাওয়া গেছে, যেখানে হাসপাতাল, কোয়ারেন্টাইন সুবিধা এবং সীমান্ত ক্রসিংসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সবচেয়ে দুর্বল। এসব জায়গার সমস্যা করোনা সংক্রমণকে আরো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে সহায়ক হয়েছে। গত বছরের তুলনায় মূল ভাইরাসটিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে নতুন প্রজাতির একাধিক মারাত্মক শক্তিশালী ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটেছে যেগুলো আরো সংক্রমণযোগ্য। সেগুলোর মধ্যে বি.১.৬১৭ ভারতে প্রথম চিহ্নিত হয়, যা কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়েছে।

মালয়েশিয়ায় ১২ মে ৪ হাজার ৭শ’ ৬৫ নতুন সংক্রমণ নিয়ে করোনায় আক্রান্তের গত মাসের তুলনায় তিনগুণ বেড়েছে। থাইল্যান্ডে দৈনিক সংক্রমণ এপ্রিলের শুরুতে ৫০ থেকে লাফিয়ে এক মাস পর ২ হাজারেরও বেশিতে পৌঁছেছে। কম্বোডিয়ায় ২০ হাজার সংক্রমণের রেকর্ড তৈরি হয়েছে, যেগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশ এপ্রিলের শুরু থেকে ঘটেছে। ভিয়েতনামের কমপক্ষে ৮টি হাসপাতাল ৫ মে থেকে ভাইরাসের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। ইন্দোনেশিয়ায় প্রতিদিনের সংক্রমণ প্রায় ৫ হাজারে দাঁড়িয়েছে (যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে) এবং দেশটি ব্যাপক সংক্রণের আশঙ্কা করছে। লাওস, ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে কোনো দেশই এর আগে করোনা বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়নি। দেশগুলো বহিরাগত সংক্রমণের দিকে ইঙ্গিত করছে। লাওস থাইল্যান্ড থেকে আসা সংক্রমিতদের দিকে এবং ভিয়েতনাম চীন, ভারত ও জাপান থেকে আগত সংক্রমিতদের দিকে আঙ্গুল তুলেছে। তবে, এসব সংক্রমণ ভারতের বি.১.৬১৭ ভাইরাসের কারণে ঘটছে বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।

দাক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো পুনরায় ব্যাপক বিধিনিষেধ এবং লকডাউনের মাধ্যমে করোনার এই নতুন প্রজাতিকে ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে। ভিয়েতনাম এবং সিঙ্গাপুর পর্যটকদের জন্য ২ থেকে ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন দীর্ঘায়িত করেছে এবং কিছু বিনোদনমূলক সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে। ১০ মে মালয়েশিয়া ৪ সপ্তাহের জাতীয় লকডাউন আরোপ করেছে। লাওস এপ্রিলে তার রাজধানী এবং সীমানা বন্ধ করে দিয়েছে।

কিছু দেশে টিকা দেয়ার হার বাড়ছে তবে সিঙ্গাপুর এবং কম্বোডিয়া বাদে প্রতিটি দেশে প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ১০ শতাংশেরও এরও কম লোক এক ডোজ করে টিকা পেয়েছে। সংক্রমণের ভয়াবহতার দিক থেকে ঘন-বসতিপূর্ণ ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইন এখন একটি বিশাল প্রশ্নের সম্মুখীন। অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামারী বিশেষজ্ঞ ডিকি বুডিম্যান বলেছেন, ‘ইন্দোনেশিয়া, যারা এখনও দ্বিতীয় ঢেউ দেখেনি, ভারতের মতো একই পরিস্থিতির আশঙ্কা করছে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
নূরুজ্জামান নূর ১৮ মে, ২০২১, ১:৫০ এএম says : 0
ভারতকে পুরো বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হোক।
Total Reply(0)
নিশা চর ১৮ মে, ২০২১, ১:৫০ এএম says : 0
ভারতের সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করতে হবে।
Total Reply(0)
মুক্তিকামী জনতা ১৮ মে, ২০২১, ১:৫১ এএম says : 0
মোদির স্বেচ্ছাচারিতা আর অযোগ্যতা-অবহেলার ফল ভোগ করছে গোটা এশিয়া।
Total Reply(0)
ক্ষণিকের মুসাফির ১৮ মে, ২০২১, ১:৫২ এএম says : 0
মোদিকে এর জন্য জবাবদিহিতা করতে হবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন