শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ায় জ্যোৎস্না উৎসব অনুষ্ঠিত

প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আজিজুল ইসলাম চৌধুরী, সুনামগঞ্জ থেকে : প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ স্থান হাওর কন্যা-খ্যাত সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরে নেমেছিল ঈদের পরই পর্যটকদের ভিড়। প্রাকৃতিক জীব-বৈচিত্র সংরক্ষণের মাধ্যমে পর্যটনে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে “প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখি, পর্যটনে এগিয়ে আসি”Ñএ ¯েøাগান নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে টাঙ্গুয়ায় জ্যোৎ¯œা উৎসব। তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জান কামরুলের সার্বিক তত্ত¡াবধানে তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এ উৎসবে যোগ দেন স্থানীয় ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পর্যটকসহ আশপাশের কয়েক হাজার প্রকৃতিপ্রেমী উৎসুক জনতা। উৎসবের প্রধান অতিথি ছিলেন সুনামগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জম হোসেন রতন। উৎসব উদ্বোধন করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট শামসুন নাহার শাহানা রব্বানী, সাবেক সংসদ সদস্য নজীর হোসেন। উৎসবের প্রথম দিন সকালে কিছুটা বৃষ্টিপাত হওয়ায় উৎসবের যাত্রা শুরু হয় বিলম্বে। তাহিরপুর থানাঘাট থেকে দুপুরে পর্যটকদের নিয়ে ব্রাকের বিশেষভাবে নির্মিত তরী (নৌকা) টাঙ্গুয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। সীমান্তঘেরা দৃষ্টিনন্দিত হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে সন্ধ্যার সময় নৌকাগুলো মিলিত হয় টাঙ্গুয়ার হাওরের মধ্যখানে স্থাপিত বিশেষ মঞ্চে। এর আগে অয়োজকরা পর্যটকদেও নৌকায় দুপুরের খাবার বিতরণ করেন। বিরাট কার্গোতে সামিয়ানার ভেতর নির্মিত মঞ্চের মধ্যে সঙ্গীত শুরু হয়। স্থানীয় বিশিষ্ট শিল্পীসহ ঢাকা থেকে আগত বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী আশিক সঙ্গীত পরিবেশন করেন। আশিকের কণ্ঠে বাউল স¤্রাট শাহ আব্দুল করিমের “আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম, আমরা আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম” এ গানটি শুরু হলে হাওরে দর্শক শ্রোতাদের মধ্যে দেখা দেয় হাওরের পানির উপর আলাদা এক বিনোদন তৃপ্তি ও আনন্দ। উৎসুক শ্রোতা ও দর্শকরা আনন্দে নেচে নেচে আশিকের সুরের সাথে এ গানটি গাইতে থাকেন। হাওরের চারদিক সঙ্গীতের মূর্ছনায় আলাদা এক পরিবেশ বিরাজ করে। বিভিন্ন ধরনের গান পরিবেশন করেন শিল্পীরা। সঙ্গীত চলে বেশ রাত পর্যন্ত। মধ্যরাতে পর্যটকরা হাওরের পানির উপর জ্যোৎ¯œা দেখেন। জ্যোৎ¯œা রাতে হাওরের উপর চন্দ্রের আলো দেখা এ যেন আলাদা আনন্দ। ভরা পূর্ণিমায় জ্যোৎ¯œার আলোয় হাওরের পানির উপর রাত্রি যাপন পর্যটকদের মনকে করেছে পুলকিত, দিয়েছে আলাদা এক উপভোগ্য মনের খোরাক। পরদিন সকালের নাস্তা পরিবেশনের পর পর্যটকদের নিয়ে আসা হয় আরেক দর্শনীয় স্থান বারেকের টিলায়। বারেকের টিলা ও পাহাড় থেকে নেমে আসা যাদুকাটা নদীর সৌন্দর্য দেখার পর শুরু হয় স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানের পর শেষ হয় দু’দিনের টাঙ্গুয়ায় জ্যোৎ¯œা উৎসব। উল্লেখ্য, টাঙ্গুয়ার হাওড়ে যাওয়ার উপায় হচ্ছে সুনামগঞ্জ কিংবা সিলেট থেকে সরাসরি গাড়িযোগে তাহিরপুর। সেখান থেকে ইঞ্জিনের নৌকা। ছোট-বড় নৌকা রয়েছে। পছন্দমত নৌকা ভাড়ায় নেয়া যায়। সুনামগঞ্জ থেকে তাহিরপুর সময় লাগে মাইক্রোবাসে এক ঘণ্টা। তাহিরপুর থেকে নৌকায় টাঙ্গুয়ায় যেতে সময় লাগে একঘণ্টা। স্পিডবোটও ভাড়ায় নেয়া যায়। তবে সকালে তাহিরপুর গেলে সারাদিন টাঙ্গুয়ার প্রাকৃতিক রূপ দেখার পর বিকেলে ফেরা যায় গন্তব্যে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন