বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আমার দেখা অবরুদ্ধ আল আকসা মসজিদ-১

মুহাম্মদ হবলোস | প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম

ফিলিস্তিনে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আমরা জর্ডান যাই। সেখান থেকে বাসে করে আমরা সামনে যেতে শুরু করি। সীমান্তের কাছাকাছি গেলেই ইসরাইলের পতাকা দেখতে পাবেন। অনেক উঁচুতে উড়ছে। এটা দেখেই আপনার হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাবে। তখন এক অদ্ভুত অনুভূতি টের পাবেন। কিছুটা ভয়, কিছুটা ক্ষোভ, কিছুটা হতাশা। যেহেতু আমি অস্ট্রেলিয়ান, তাই আমার অস্ট্রেলিয়ান পাসপোর্ট লাগবে। যখন আপনি প্রথমবারের মতো ইসরাইলিদের দেখবেন, হৃদয় ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যাবে। মনে হবে শরীরে যেন বিষক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। তাদের কাছে গেলে তারা হাসিমুখে আপনাকে স্বাগত জানাবে না। নিজেকে একজন নির্বাসিত ব্যক্তি ভাবতে ওরা আপনাকে বাধ্য করবে।

বর্ডারে পৌঁছলে ওরা আপনাকে বাস থেকে নামিয়ে দিবে এবং ভেতরে গিয়ে আপনাকে এক জায়গায় বসে থাকতে হবে। ৩ ঘণ্টা, ৪ ঘণ্টা, ৫, ৬, ৭, ৮ ঘণ্টা। এত সময় পরও আপনাকে প্রশ্ন করা হবে না। আপনি ফিলিস্তিনে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক, কিন্তু আপনাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখবে।

বসে থাকার সময় দেখবেন একজন ফিলিস্তিন নাগরিক যাকে আমরা চাচা বা হাজী বলে সম্বোধন করি, ৭০-৭৫ বছর বয়সী একজন বৃদ্ধ মানুষ। আর ১৭-১৮ বছর হবে এমন বয়সী ইসরাইলি নারী সেনা সেই বৃদ্ধ লোকটির সাথে কথা বলছে। এমনভাবে অর্ডার দিচ্ছে মনে হচ্ছে বৃদ্ধ লোকটি কোনো জন্তু জানোয়ার। মনে হয় লোকটি কোনো মানুষই নয়, যেন কোনো পশু। সেই ইসরাইলি নারীটি কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে বৃদ্ধ লোকটিকে অর্ডার দিচ্ছে।

আর আপনি কষ্টটা অনুভব করতে পারবেন। আর সেখানে দাঁতে দাঁত চেপে আপনাকে এটা সহ্য করতে হবে। এই লোকটি ফিলিস্তিনের অধিবাসী। এই ফিলিস্তিনি লোকটি যেখানে সম্মান পাওয়ার কথা সেখানে ১৮ বছরের একটি মেয়ে অর্ডার দিচ্ছে।

যাহোক, সেখানে বসে থাকার পর আপনাকে ডাকা হবে। সেখানে নারীর উপস্থিতি কাকতালীয় নয়, সে আপনাকে ডাকলে আপনি তার সাথে ভেতরে গিয়ে অন্য রুমে বসতে হবে। আপনাকে জিজ্ঞেস করবে তুমি কে? কেন ইসরাইলে এসেছ? তোমার এখানে কাজ কি? হজ শেষে বাড়ি না গিয়ে কেন এখানে এসেছ? এভাবে প্রশ্ন করতেই থাকবে আধা ঘণ্টা ধরে। আবার চলে যাবে। দুই তিন ঘণ্টা পর আবার এসে আবার প্রশ্ন করবে। এরপর আপনাকে আরেক জায়গায় পাঠাবে। সেখানে ১-২ ঘণ্টা বসে থাকার পর আবার আপনাকে একই প্রশ্ন করবে। এভাবে চলতে থাকবে। এরপর আপনার ফিলিস্তিনে যাওয়ার ইচ্ছে মরে যাবে। এবার তারা যেতে দিবে।

আপনি ইসরাইলে প্রবেশ করলেই তাদের শোষণ টের পাবেন। রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে মাইলের পর মাইল কংক্রিটের উঁচু দেয়াল দেখতে পাবেন। মাইলের পর মাইল কংক্রিটের দেয়ালগুলো ফিলিস্তিনিদের আলাদা করে রেখেছে। শহরের ভেতরের দেয়ালগুলোতে এমনভাবে গ্রাফিতি আঁকা হয়েছে যেন সব নরমাল মনে হয়।

এরপর যখন আপনি মাসজিদুল আকসায় প্রবেশ করতে যাবেন, দেখবেন ইসরাইলি সেনারা চার দিক ঘিরে আছে। তাদের কাছে আপনার পাসপোর্ট আইডি সব দেখাতে হবে। এক ইসরাইলি সেনা যার কাছে অটোমেটিক অস্ত্র রয়েছে তাকে বলতে হবে আমি কেন আল্লাহর ঘরে প্রবেশ করতে চাই।

যাহোক এগুলোর পর মসজিদে প্রবেশ করবেন। ভেতরে গিয়ে মনে হবে মসজিদের দেয়ালগুলো যেন কাঁদছে। সেখানে কোনো যুবক নেই। কারণ সেখানে তাদের প্রবেশাধিকার নেই। ভেতরে আপনি গ্লাসের তৈরি স্ট্রান্ড দেখতে পাবেন। যেখানে বোমা, গোলাবারুদ ইত্যাদি রাখা আছে। যেগুলো বিভিন্ন সময়ে এই মসজিদে নিক্ষেপ করা হয়েছে। বোমার গায়ে লেখা ‘মেড ইন ইউএসএ’।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
এ.আর. মোহাম্মদ. মজনু ২০ মে, ২০২১, ১:৫৭ এএম says : 0
জুলুমকারী যতো বড় শক্তিশালী হোকনা কেন একদিন তার নিশ্চিত পতন হবেই ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)
এ.এম. মনির হোসেন ২০ মে, ২০২১, ১:৫৭ এএম says : 0
The United States is involved in terrorist attacks anywhere in the world. No country in the world is benefiting the United States. Although they do any good for their own benefit. I hate USA.
Total Reply(0)
Ahasan Habib ২০ মে, ২০২১, ১:৫৭ এএম says : 0
আমার মনে হচ্ছে দাজ্জ্বাল এর আগমন খুব তারাতারি হবে। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো, আমাদের মুসলিম রাষ্ট্র এক হচ্ছে না,সেই জন্য ওরা এত সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে। সারাবিশ্ব এ ইহুদি এর সংখ্যা মাত্র ২ কোটি।
Total Reply(0)
Ratul Hasan ২০ মে, ২০২১, ১:৫৮ এএম says : 0
ইসরাইল জালিম দেখেই কাউকে তোয়াক্কা করে না। যত যাই হোক একদিন তো তাদেরকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির মুখোমুখি হতেই হবে। ইনশাআল্লাহ
Total Reply(0)
Adnan Noor ২০ মে, ২০২১, ১:৫৮ এএম says : 0
ইজরাইল যখন অবৈধ ভাবে ফিলিস্তিনিদের জমি দখল করে সেটা সন্ত্রাস নয়। ইজরাইল যখন হামলা করে ফিলিস্তিনিদের উপর শত শত মুসলিম মৃত্যুবরণ তখন সেটা সন্ত্রাস নয়। এবং ফিলিস্তিনিরা যখন আত্বরক্কার জন্য নেমে পড়ে তখন সনত্রাসবাদ ।
Total Reply(0)
Musarrat Jahan Munia ২০ মে, ২০২১, ১:৫৮ এএম says : 0
ইসরায়েল বলে কোন রাষ্ট্রই নেই |কাজেই জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী স্বীকৃতি দেবার প্রশ্নই উঠে না| জেরুজালেম একটি দখল হওয়া এলাকা এবং এটি শুধুই ফিলিস্তিনের রাজধানী | There is no state called Israel, so there is no question of recognizing Jerusalem as the capital of Israel. Jerusalem is an occupied territory and the only capital of Palestine?
Total Reply(0)
মোঃ+দুলাল+মিয়া ২০ মে, ২০২১, ২:৪৬ এএম says : 0
আসলেই হিটলার নাম শুনলেই সবাই রাগ হয়,এবং কি চমকে যায় এই হিটলার সব ইহুদিদের খতম করেছিল,সামান্য কিছু ইহুদি রেখে গিয়েছে,যেহেতু এই দুনিয়ার মানুষ বুঝতে পারে ইহুদি কতো দুষ্ট এবং জালেম এখন কাজে কর্মে দেখা যাইতেছে আসলে হিটলারের বুদ্ধিজীবি ছিল,হিটলার বুঝতে পেরেছেন এই ইহুদি দুনিয়ার সব কিছু ধ্বংস করবে,সেই জন্যই ইহুদিদের হত্যা করেছিল,সামান্য কিছু ইহুদি রেখে গিয়েছে আজ পুরা বিশ্স্ দেখতেছেন এই জালেমদের।
Total Reply(0)
salman ২০ মে, ২০২১, ৬:৩৩ এএম says : 0
Allah, ak din ai ZALIM der dhongsho korben, QURAN a tai e Mohan Allah bolesen. Allah Sob chaite boro KOWSHULI......ameen
Total Reply(0)
মাওলানা মামূনুর রশীদ ২০ মে, ২০২১, ৭:২০ এএম says : 0
ইসলাম সন্ত্রাসী ধর্ম নয়, তেমনি মনে মুসলমানরা সন্ত্রাসী নয়। ইহুদীরা সন্ত্রাসী,ইহূদীদের সমর্থন করায় আমেরিকা সন্ত্রাস। সুতরাং ইহুদি খ্রিস্টান সন্ত্রাসী ধর্ম।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন