দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর তাণ্ডবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া ফিলিস্তিনের গাজা পুনর্নির্মাণে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একইসঙ্গে গাজায় শান্তি ফেরাতে ‘নীরবে’ কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন তিনি। বাইডেন বলেছেন, তবে আমি মনে করি- ইসরাইলের পাশাপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই সেখানকার সঙ্ঘাত নিরসনে একমাত্র সমাধান।’ গত শুক্রবার হোয়াইট হাউজ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ কথা বলেন।
জো বাইডেন বলেন, ‘ইসরাইলের প্রতি আমার দায়বদ্ধতার কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে আমি স্পষ্টভাবে বলছি- দু’টি পৃথক রাষ্ট্র গঠনের মধ্য দিয়েই ওই অঞ্চলে সঙ্কট নিরসন সম্ভব। আমি মনে করি- শান্তিপূর্ণ ও সুরক্ষিতভাবে জীবনযাপনের অধিকার ইসরাইল এবং ফিলিস্তিন দু’দেশের নাগরিকদেরই রয়েছে। তাই আমি জোর দিয়ে বলছি- সেখানে ইসরাইলের পাশাপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন জরুরি।’
যুদ্ধবিরতির পর গাজা ও ইসরাইলের উপকূলীয় এলাকায় শান্তি ফিরেছে উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, ‘সঙ্ঘাত বন্ধ করে শান্তি ফেরানোয় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ। তিনি কথা রেখেছেন, সঙ্ঘাত থামিয়ে শান্তি এনেছেন।’
পূর্ব জেরুজালেমে আল-আকসা মসজিদ চত্ত্বরে ইসরাইলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষের জের ধরে গত ১০ মে থেকে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। টানা ১১ দিন তাণ্ডব চালিয়ে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে সম্মত হয় ইসরাইল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত ২৩২ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৬৫ জন শিশু। আহত হয়েছেন প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি। গাজার বড় এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। গৃহহীন হয়ে পড়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দাবি, গাজায় হামাস ও অন্যান্য ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো প্রায় ৪ হাজার ৩০০ রকেট ছুঁড়েছে। এসব রকেট হামলার ৯০ ভাগই আয়রন ডোমের মাধ্যমে প্রতিহত করা হয়েছে। তবে ইসরাইলি পুলিশ জানিয়েছে, হামাসের রকেট হামলায় ইসরাইলে ১২ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজন শিশু, একজন ইসরাইলি সেনা, একজন ভারতীয় নারী এবং দু’জন থাইল্যান্ডের নাগরিক রয়েছেন।
২০১৪ সালের পর ইসরাইল-ফিলিস্তিনের মধ্যে এবারের সঙ্ঘাতকে বলা হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ। ২০১৪ সালের ওই সঙ্ঘাতে দুই হাজার ২৫১ ফিলিস্তিনি নিহত হন। ইসরাইলের পক্ষে প্রাণহানি ছিল ৭৪, যাদের অধিকাংশই সেনাসদস্য।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন ফিলিস্তিনিদের যে অনুদানের পথ বন্ধ করেছিলেন তা পুনরায় চালু করছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। অনুদানের প্রথম দফায় ফিলিস্তিনকে সাড়ে ১২ কোটি ডলার বা ১ হাজার ৫৭ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বেশি সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যে মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়টি কংগ্রেসকে নিশ্চিত করেছে। ২০২০ সালের বাজেটের সঙ্গে সমন্বয় করে এ অনুদানের অর্থ ছাড় দেওয়া হবে বলে জানা গেছে। ইসরাইলের কথিত শান্তি প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ফিলিস্তিনিদের সব ধরনের অনুদান বন্ধ করে দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সূত্র : ডেইলি সাবাহ ও এপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন