বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর প্রভাবে নদী ও খালের পানিতে প্লাবিত বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল

বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০২১, ৮:৫০ পিএম

ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের মঙ্গলবার (২৫ মে) সকাল থেকে থেমে থেমে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হয়েছে। একই সাথে শরণখোলার বলেশ্বর, মোরেলগঞ্জের পানগুছি, মোংলার পশুর, বাগেরহাটের ভৈরব, দড়াটানাসহ সকল নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের থেকে দুই থেকে আড়াই ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই মধ্যে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে মোরেলগঞ্জ উপজেলার পৌর এলাকাসহ সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে। তবে এ উপজেলার পানগুছি নদীর তীরে থাকা শানকিভাঙ্গা ও বদনী ভাঙ্গা গ্রামের বেড়িবাঁধ না থাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয় মানুষের মধ্যে। যে কারণে ঝড়ের প্রভাব শুরুর আগে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এই দুই গ্রামের বাসিন্দারা।একই ভাবে জেলার বিভিন্ন এলাকায় জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলায় ৩৩৪ ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ও ৬২৯ স্কুল কলেজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ঘূর্ণিঝড়ের সময় করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রায় ৩ লাখ লোকের থাকাসহ গবাদীপশুও রাখা যাবে। একই সাথে এসব আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্কসহ পর্যাপ্ত পানি। এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট, নৌবাহিনী কোস্টগার্ডসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, সব মিলিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। একই সাথে নগদ টাকাসহ ২৮ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতি উপজেলায় শিশু খাদ্য ও পশুখাদ্য কেনার জন্য আলাদা ভাবে পাঠানো হয়েছে ১ লাখ টাকা করে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতা চালাতে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, রেডক্রিসেন্ট, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ পুলিশ সদস্যরা সব ধরনের পর্যাপ্ত যানবাহন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ৮৫টি মেডিকেল টীম প্রস্তুত রেখেছে। তবে গত রাতে জেলায় সামান্য বৃষ্টিপাত হলে আজ সকাল থেকেই আকাশ পরিষ্কার রয়েছে।
মোরেলগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা মাসুদ সরদার বলেন, “মোগো তো আর ঝড়ের প্রয়োজন হয় না। আমাবস্যা ও পূর্ণিমায় জোয়ারের পানিতে মোরা ডুইব্বা যাই। মোগো বাজারও তলাই যায়। তয় এবার পানির তোর একটু বেশি। সকাল থাইক্কা পানি উঠতে শুরু করছে”।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৌদ্ধ বলেন, পূর্ণিমার ও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে উপকূলীয় এলাকায় নদী-খালের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। দুপুর নাগাত এ পানি আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ভাটিতে এ পানি আবার নেমে যাবে। মোরেলগঞ্জের কিছু গ্রামে রয়েছে যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন বেড়িবাঁধ নেই। সে সব গ্রামের বাসিন্দারা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাদেরকে নিরাপদে সাইক্লোন শেল্টারে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

এদিকে গত সন্ধ্যা থেকে সাগর প্রচন্ড উত্তাল হয়ে উঠায় এবং ঝড়ো বাতাস বয়ে যাওয়াতে সুন্দরবনের বিভিন্ন সাইক্লোন শেল্টারসহ কোস্ট গার্ডের ক্যাম্পগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে বনবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নতুন করে সিগনাল না বাড়ায় এবং আবহাওয়া বেশি খারাপ না হওয়াতে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত ১১টি বিদেশী জাহাজের পণ্য ওঠানামা ও পরিবহণের কাজ স্বাভাবিক রয়েছে।

বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দীন বলেন, সিগনাল ৪ নম্বর না হওয়া পর্যন্ত বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে। ৪ নম্বর সিগনাল জারি কিংবা ক্রস করলেই সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হবে।

বাগেরহাটের নবাগত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, আবহাওয়া স্টেশনের মনে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এ আমাদের তেমন ক্ষতি হবে না। তারপরও এই ঝড় যেকোন সময় দিক পরিবর্তন করতে পারে। এজন্য জেলায় ৩৩৪ ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র ও ৬২৯ স্কুল কলেজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ঘূর্ণিঝড়ের সময় করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রায় ৩ লাখ লোকের থাকাসহ গবাদীপশুও রাখা যাবে। এই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট, নৌবাহিনী কোস্টগার্ডসহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, সব মিলিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতা চালাতে নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, রেডক্রিসেন্ট, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ পুলিশ সদস্যরা সব ধরনের পর্যাপ্ত যানবাহন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ৮৫টি মেডিকেল টীম প্রস্তুত রেখেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন