মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

ইহুদিদের সম্পর্কে মহানবী (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী

মাওলানা এইচ এম আব্দুল্লাহ | প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০২১, ১২:০০ এএম

আল্লাহ ইহুদিদের ওপর স্থায়ীভাবে লাঞ্ছনা, অপমান ও নির্যাতন নির্ধারিত করে দিয়েছেন। যুগে যুগে, ইতিহাসের বিভিন্ন অধ্যায়ে তাদের লাঞ্ছিত ও অপমানিত করেছেন। মিসরের ফেরআউন শাইশাক জেরুসালেম দখল করে এবং ইহুদিদের তাড়িয়ে দেয়। তারপর ব্যাবিলনের রাজা বখতে নসর জেরুসালেম দখল করে ইহুদিদের বন্দি করে নিয়ে আসে এবং তাদের দাস বানিয়ে রাখে। পরে পারস্য সম্রাট ইহুদি দাসদের সেখানে ফেরত পাঠান সত্য, কিন্তু তখন পারস্য সম্রাটেরই অধীন ছিল। ৬৬ খ্রি. রোমান সম্রাট তাইতুস জেরুসালেম দখল করে এবং ইহুদিদের ব্যাপক হারে হত্যা করে। উপরন্তু ৭০ খ্রি. রোমান বাহিনী হাজার হাজার ইহুদিকে বন্দি করে নিয়ে যায় এবং তাদের দাস বানায়।

এডলফ হিটলার জার্মানির নাৎসি নেতা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন তিনি ইহুদিদের হত্যা করেছিলেন। হিটলারের ইহুদিদের প্রতি ঘৃণার কারণ হিসেবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের জন্য ইহুদিদের দায়ী করার কথা বলা হয়। যদিও এটা একটা ধারণা মাত্র।

হিটলারের ইহুদি হত্যার আসল কারণ হলো, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মুহূর্তে ইহুদি নেতারা বিরাট সমস্যার সম্মুখীন হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইহুদিরা ওই সময় পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাস করে। ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে ইহুদিদের দেশত্যাগ প্রয়োজন। কিন্তু কোনো ইহুদি ইসরাইল রাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে দেশত্যাগ করতে প্রস্তুত ছিল না।

তখন ইহুদি নেতারা হিটলারের সাথে এক গোপন ইহুদি হত্যা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়। যাতে করে বিশ্বব্যাপী ইহুদিদের মধ্যে ভয় ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করা যায় এবং তারা ইসরাইলের উদ্দেশ্যে দেশত্যাগ করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিতে বাধ্য হয়। চুক্তি অনুযায়ী ৪ লাখ ৫০ হাজার ইহুদির মধ্যে মাত্র ৭ হাজারকে ইসরাইলে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয় এবং অবশিষ্টদের হত্যার নীলনকশা করা হয়। হিটলার ইহুদিদের গ্যাস চেম্বারে জড়ো করে গ্যাস বোমা মেরে হত্যা করে।

এরপরও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ইহুদিরা ইসরাইলের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করতে রাজি না হওয়ায় ইহুদি নেতারা বিশ্বের সর্বত্র ইহুদি হত্যার গোপন পরিকল্পনা হাতে নেয়। যাতে করে তাদের মধ্যে ভয়ভীতি ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়। ইহুদিরা ইসরাইলের হাইফা বন্দরে এসেও জাহাজ থেকে নামতে রাজি না হওয়ায় ইহুদি বোঝাই জাহাজটিকে তাদের নেতা ডেভিড গুরিওন বোমা মেরে সাগরে ডুবিয়ে দেয়। এভাবে আল্লাহর ঘোষণা সত্যে পরিণত হয়। (ইসলাম ও অন্যান্য মতবাদ : পৃ. ৮৪)।

এতদসম্পর্কে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, আরো স্মরণ করো, যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, তিনি কেয়ামত পর্যন্ত সবসময় বনি ইসরাইলের ওপর এমন লোককে প্রভাবশালী করবেন যারা তাদের নিকৃষ্টতম শাস্তি দান ও নির্যাতন করতে থাকবে। (সূরা আরাফ : ১৬৭)।

ইরশাদ হয়েছে, তাদের ওপর অপমান ও অভাব লাগিয়ে দেয়া হয়েছে এবং তারা আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও গজবের শিকার হয়েছে। কেননা, তারা আল্লাহর আয়াতের সাথে কুফরী করেছে এবং নবীদের হত্যা করেছে, এটা ছিল তাদের নাফরমানি এবং তারা ছিল সীমালঙ্ঘকারী। (সূরা বাকারা : ৬১)।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে আরো ইরশাদ করেন, যারা আল্লাহর আয়াতের সাথে কুফরী করে, নবীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করে এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারীদেরও হত্যা করে, তাদের কষ্টদায়ক আজাবের সুসংবাদ দাও। তারাই ওই সকল যাদের আমল দুনিয়া এবং আখেরাতে ব্যর্থ বেকার এবং যাদের কোনো সাহায্যকারী নেই। (সূরা আল ইমরান : ২১-২২)। আল্লাহ ইহুদিদের ব্যাপারে আরো বলেন, তারা মন্দ কাজ থেকে বিরত হয় না, যা তারা ইতঃপূর্বে করেছে এবং তারা যা করে তা কতই না খারাপ। (সূরা মায়েদা : ৭৯)।

তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে গজবপ্রাপ্ত জাতি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহর ঘোষণা অনুযায়ী তাদের ধ্বংস অনিবার্য। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণীমূলক হাদিসের আলোকে বলা যায়, বর্বর নৃশংস অত্যাচারী ইহুদিরা অবশ্যই ধ্বংস হবে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত হবে না যতক্ষণ না মুসলিমদের সঙ্গে ইহুদিদের যুদ্ধ হবে। মুসলিমরা ইহুদিদের হত্যা করতে থাকবে। তখন তারা (ইহুদিরা) পাথর ও গাছের পেছনে লুকিয়ে আশ্রয় নেবে। তখন পাথর ও গাছ বলবে, হে মুসলিম, হে আল্লাহর বান্দা, এই তো ইহুদি আমার পেছনে লুকিয়ে আছে। এসো, তাকে হত্যা করো। (সহীহ মুসলিম)।

তবে নির্দিষ্ট করে জানা নেই, সে চূড়ান্ত যুদ্ধটি কতদূরে। আর এর আগে ইহুদিদের হাতে ঝরবে কত মুসলমানের প্রাণ? আল্লাহ আপনি পরীক্ষার সময়টি দ্রুত সমাপ্ত করে সহসাই মুক্তি ও বিজয়ের চূড়ান্ত দিনটির সূর্য উদিত করুন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Burhan uddin khan ২৫ মে, ২০২১, ১১:২২ পিএম says : 0
Jews are lier they always killing myslims..Our nations doing hard duty So, we no need any sympathy by the jews....
Total Reply(0)
Zakir Aryan ২৬ মে, ২০২১, ৪:০৯ এএম says : 1
লেখাটি ভালো ছিল
Total Reply(0)
S M Ashiqur Rahman ২৬ মে, ২০২১, ৪:০৯ এএম says : 1
ধন্যবাদ
Total Reply(0)
মেঘদূত পারভেজ ২৬ মে, ২০২১, ৪:২৩ এএম says : 0
ইহুদিদের অনৈতিক অপরাধগুলো আলোচনা করে আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদের সেসব বিষয় থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
Total Reply(0)
তানিম আশরাফ ২৬ মে, ২০২১, ৪:২৫ এএম says : 0
ইহুদীদের ইতিহাস কয়েক হাজার বছরের পুরনো। ইসলাম ধর্ম মতে তারা বনি ইসরাঈলের উত্তরসূরী। হযরত মূসা (আ)-এর অনুসারী। এমনকি বিপথগামী এই জাতির বৃত্তান্ত বর্ণনা করতে গিয়ে পবিত্র কুরআনে বনি ইসরাঈল নামে একটি সূরাই নাজিল করা হয়েছে।
Total Reply(0)
সাইফ আহমেদ ২৬ মে, ২০২১, ৪:২৫ এএম says : 0
সংক্ষিপ্ত আলোচনায় ইহুদিদের সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা সম্ভব নয়। সারা পৃথিবী থেকে বিতাড়িত হয়ে যাযাবর ন্যায় ঘুরতে থাকা এক জাতি বর্তমানে গোটা দুনিয়া নিয়ন্ত্রণ করছে। সমাজ, রাষ্ট্র, অর্থনীতি, এবং বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রে রয়েছে ইহুদিরা।
Total Reply(0)
নোমান মাহমুদ ২৬ মে, ২০২১, ৪:২৫ এএম says : 0
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেলফোর এক ঘোষণার মধ্য দিয়ে স্বাধীন ফিলিস্তিনে দখলদারি এক রাষ্ট্র তৈরি করেছে তারা। ১৯৪৮ সাল থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত তাদের দখলদারিতে নিষ্পেষিত হয়েছে লক্ষ লক্ষ আরব মুসলিম। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে শত শত মসজিদ। এমনকি পবিত্র শহর জেরুজালেমও আজ তাদের দখলে।
Total Reply(0)
মো:+শফিউর+রহমান ২৬ মে, ২০২১, ১০:১১ এএম says : 0
মহান আল্লাহ সৃষ্টি কর্তা আর পিৃয় নবীজি আল্লাহর প্রেরিত নবী ও রসুল, অতএব মহান আল্লাহ যা যা নির্দেশ করেছেন তাহাই পরিপূর্ন হবে এতে এক চুলও বেতিক্রম হবেনা্ । আমরা মুসলমান জাতি বুঝেও বুজিনা । যদি বুজতে পারতাম তা হলে আমরা মুসলমান হয়ে একজন আরএকজনের ক্ষতি না করি ।
Total Reply(0)
RAHMAN ২৬ মে, ২০২১, ৪:২৩ পিএম says : 0
ইসরাইলের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইসহাক রবিন তার এক বইতে লিপিবদ্ধ করেছেন কিভাবে তারা মুসলমানদের দাবিয়ে রেখেছে, পড়ে গা শিউরে উঠার মত তথ্য সেখানে রয়েছে। বিভিন্ন অমুসলিম দেশ মুসলমানদের কিভাবে দাবিয়ে রাখা যায় তার জন্য ইসরাইলকে অনুস্বরণ করে। মুসলমানরা সেকালে এবং একালে বিভাজন হয়ে আছে, যারা কিছু করতে পারে তারা ইহুদী নাসারা আর মুশরিকদের সাথে মিলে আয়েশে গা ভাসিয়ে দিয়ে বুধ হয়ে আছে। ইহুদী নাসারা আর মুশরিকরা কিন্তু একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, আর মুসলমানরা ঘুমিয়ে আছে। মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইহুদী-নাসারা-মুশরিকরা মুসলিমদেরই ক্ষতি করার জন্য মুসলমানদের মধ্য থেকে কিছু দালালকে ঠিক করে তাদের মাধ্যমেই এগিয়ে যাচ্ছে।
Total Reply(0)
H m arif ৬ মার্চ, ২০২২, ৮:০০ পিএম says : 0
মুসলিমদের ইতিহাস অনুসরণ জরুরি
Total Reply(0)
Maliha Mehjabin ১৭ মে, ২০২২, ৪:১১ পিএম says : 0
এখানে হিটলারের সম্পর্কে কথাগুলো মেনে নিতে পারছি না।ইহুদিরাই যদি নিজেদের হত্যা করে। তবে সুরা আরামের ১৬৭ আয়াত কি করে সত্য প্রমাণিত হয়?এর ব্যাখ্যা দিন।হিটলারের উদ্দেশ্যই ছিল বিশ্বকে ইহুদিমুক্ত করা।আর এটাই জার্মানিদের কাছে ওকে জনপ্রিয় করেছিল।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন