সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

না’গঞ্জে নাট্যকার চঞ্চল হত্যা মামলার নারাজি পিটিশন মঞ্জুর

প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর তরুণ নাট্যকার দিদারুল ইসলাম চঞ্চল হত্যা মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দেয়া অভিযোগপত্রের (চার্জশিট) বিরুদ্ধে বাদীর না রাজী পিটিশন মঞ্জুর করেছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত মামলাটি পুনরায় তদন্ত করতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন। রোববার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অশোক কুমার দত্তর আদালত এসব আদেশ দেন।
গত বছরের ১৯ অক্টোবর চঞ্চল হত্যা মামলায় পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে তদন্তকারী সংস্থা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলোÑচঞ্চলের বন্ধু মেহেদি হাসান রুহিত, মীম প্রধান, রাকিব, রাশেদ এবং শফিক। তবে চার্জশিটের বিরুদ্ধে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আদালতে না রাজি পিটিশন দায়ের করেছিলেন মামলার বাদী খালেদা আক্তার রুবিনা যিনি চঞ্চলের মা।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. শাহআলম কবির জানান, বাদীর নারাজি পিটিশন আবেদন মঞ্জুর করে মামলাটি পুনরায় তদন্ত করে সিআইডিকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে মামলাটি পুনরায় তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ঢাকা মালিবাগ সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
না রাজি পিটিশনে বাদী উল্লেখ করেছিলেন, ২০১২ সালের ১৬ জুলাই গভীর রাতে বাসা থেকে বের হয় চঞ্চল। পরে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে লাশ উদ্ধার করা হয় তার। গত ২০১২ সালের ১৯ জুলাই বন্দর থানা পুলিশের এসআইস গোলজার হোসেন দিদারুল ইসলাম চঞ্চল নিহতের ঘটনায় মামলা দায়ের করেন। কিন্তু নিহতের মা সন্দেহভাজনদের নাম বলা সত্ত্বেও তাদের গ্রেফতার করেনি এবং জিজ্ঞাসাবাদও করেনি। পরে ওই বছর ১৪ আগস্ট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কাজী মেহেদী হাসান রুহিত, রাসেদ, রাকিব, শফিউল্লাহ শফি ও মিম প্রধানকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতে মামলাটি গ্রহন করে তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শুধু মাত্র রাকিব ও মিম প্রধানকে গ্রেফতার করলেও বাকী আসামীদের গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। এমনকি কোন স্থানে, কে ভিকটিম চঞ্চলকে ছুরি দ্বারা আঘাত করে হত্যা করেছে তাও চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়নি। ভিকটিমের ভাই জুবায়েদ ইসলাম পামেল তার ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬১ ধারা জবানবন্দি কালে জনৈক আফরিন এর নাম বলেন এবং উক্ত আফরিন চঞ্চলের বিপদ সম্পর্কে জ্ঞাত ছিল জবানবন্দিতে জানান। কিন্তু আফরিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। এছাড়া চার্জশিটে বিভিন্ন বিষয় ত্রুটিপূর্ণ রয়েছে।
চঞ্চলের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নিহত দিদারুল আলম চঞ্চল নারায়ণগঞ্জ সরকারি তোলারাম কলেজের অনার্স বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল। মাত্র ২০ বছর বয়সেই চঞ্চল একজন সফল নাট্যকার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে। সে নারায়ণগঞ্জ ঐকিক থিয়েটারের একজন সক্রিয় সদস্যও ছিল। ক্ষণজন্মা এই নাট্যকার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ‘শত মানুষের হাজার স্বপ্ন’, ‘হাড় তরঙ্গ’ এবং ‘বক্তাবলী’ নামে তিনটি নাটক রচনা করে। নিখোঁজ হওয়ার মাত্র তিন দিন আগে ২০১২ সালের ১৩ জুলাই মুক্তিযুদ্ধের ৪০ বছর উপলক্ষে ঢাকা শিল্পকলা একাডেমিতে যে ১০০টি মুক্তিযুদ্ধের নাটক মঞ্চস্থ হয় তার মধ্যে চঞ্চলের রচিত ‘বক্তাবলী’ নাটকটিও মঞ্চস্থ হয়। ওই নাটকের জন্য শ্রেষ্ঠ নাট্যকার হিসেবে পুরস্কৃত করা হয় তাকে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন