বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

চুমকি’র ঘোড়ার গাড়ি চলছে এখন নকলায়...

প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শেরপুর জেলা সংবাদদাতা : ভারতের বহুল আলোচিত ও জনপ্রিয় হিন্দি ছবি ‘সোলে’ পরবর্তীতে বাংলাদেশের ‘দোস্ত দুশমন’ ছবির বেশ জনপ্রিয় একটি গানের দৃশ্য ছিল ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে যাত্রী বহন। সেই ঘোড়ার গাড়ির সওয়ার ছিলেন ছবির নায়িকা নিজেই। ওই নায়িকার নাম ছিল চুমকি। সে কারণেই ছবি’র একটি গান ছিল ‘চুমকি চলেছে একা পথে, সঙ্গী হলে দোষ কি তাতে’। পরবর্তীতে সে গানটি’র অনেক রিমেক হয়েছে। ফলে গানটি আজো মানুষের মনে গেঁথে রয়েছে। ঘোড়ার গাড়ি দেখলেই মনে পড়ে যায় সেই চুমকি নামের ঘোড় সওয়ারের কথা, গানের কথা। সে চুমকি না হলেও সে চুমকি’র মতো ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে এসেছে নকলার সাইদুর নামে এক ব্যক্তি। শিশু ও তরুণদের ঈদ আনন্দের ঘোরাঘুরিতে বাড়তি আনন্দ যোগ হয়েছে সাইদুরের ঘোড়ার গাড়ি। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়ার গাড়ি এবার শেরপুরের নকলায় বিভিন্ন সড়কে শোভা পাচ্ছে। স্থানীয় শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণীরা বেশ মজা করে ঘুরে বেড়াচ্ছে ওই ঘোড়ার গাড়িতে। বিকেল হলেই নকলার বাইপাস সড়কে দাপিয়ে বেড়ায় সাইদুরের ঘোড়ার গাড়ি। শুধু বাইপাস সড়কই নয়, রিজার্ভ ভাড়ায় চলে শহরের যে কোন রাস্তায়।
ঘোড়ার গাড়ির মালিক নকলা পৌরসভার দরিপাড়া মহল্লার সাইদুর রহমান জানান, প্রায় ১০ বছর আগে তার খুব শখ ছিল পুরান ঢাকার মতো একটি ঘোড়ার গাড়ি এনে এলাকায় চালাবেন। টার্গেট ব্যবসা নয় শখ মেটানো। কিন্তু ওই সময় অর্থাভাবে তার সে শখ পূরণ সম্ভব হয়নি। তবে ১০ বছর পর তিনি প্রায় এক মাস আগে ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ঢাকা থেকে একটি মনোরম ১২ সিটের ঘোড়ার গাড়ি ক্রয় করে আনেন। এরপর আরো প্রায় ৩ লাখ টাকায় ৩টি ঘোড়া ক্রয় করে ওই গাড়ি বহনের জন্য। গাড়ি চালানোর জন্য একজন ঘোর সওয়ার রাখা হয় মাস ১৭ হাজার টাকা দিয়ে। মূলত সে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঈদের ছুটিতে শিশু-কিশোরদের আনন্দ দেয়ার জন্য প্রতিদিন শহরের বাইপাস সড়কে ওই ঘোড়ার গাড়ি চলাচল করে। এতে জন প্রতি ৫০ টাকা করে নেয়া হয়। তবে কেউ যদি বিয়ে, জন্ম দিন বা অন্য কোন উৎসবের জন্য রিজার্ভ নেয় সে ক্ষেত্রে দূরত্ব হিসেবে ন্যূনতম ৪ হাজার টাকা দিন ভাড়া নেন। যদিও বর্তমানে ঈদ উপলক্ষে তার প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা আয় হচ্ছে, কিন্তু এ আয় সবসময় হবে না। এছাড়া ৩টি ঘোড়ার খাওয়া ও রক্ষণাবেক্ষণ এবং ঘোড় সওয়ার-এর বেতনসহ অন্যান্য খরচ প্রায় ৪০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। তাই লাভের আশা খুব একটা নাই। তবে আগামী শীত মওসুমে নালিতাবাড়ি সীমান্তবর্তী গারো পাহড়ের মধুটিলা ইকো পার্কে পর্যটকদের বেড়ানোর জন্য নেয়া হলে কিছুটা লাভবান হওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন সাইদুর। এছাড়া পুরো জেলায় তার ঘোড়ার গাড়ি’র প্রচারণা হয়ে গেলে এবং মাসে ৮ থেকে ১০ টি বিয়ে বা অন্যকোন অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া হলে কোন রকমে পুষে যাবে। তারপরও সাইদুর লাভ নিয়ে খুব একটা চিন্তা করছে না। কারণ তার উদ্দেশ্য হচ্ছে শখের বশে এ ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে মানুষকে ক্ষণিকের জন্য হলেও বিনোদন ও আনন্দ দিবে এতেই সে খুশি।
এদিকে বর্তমানে কেবলমাত্র নকলা শহরেই চলাচল করায় নকলার শিশু-কিশোর ও তরুণসহ অন্যান্য বয়সের লোকদের বিনোদনের নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে সাইদুরের ঘোড়ার গাড়ি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন