শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মাদারীপুরে মেয়ে ধর্ষণের বিচার চাওয়ায় নির্যাতিতার বাবাকে ধরে নিয়ে মারধর, ধর্ষক আটক

মাদারীপুর থেকে স্টাফ রির্পোটার | প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০২১, ৫:১৬ পিএম

মাদারীপুরের শিবচরে ৯ম শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। ধর্ষণের বিচার চাওয়ায় অভিযুক্তর হাতে উল্টো মারধরের শিকার হয়েছেন নির্যাতিতার পিতা। বিষয়টি মানবধিকার লঙ্ঘন, বলছে মানবধিকার কর্মীরা।

স্বজন ও নির্যাতিতা জানান, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রচারণায় নামে মোস্তাফিজুর রহমান নাসির নামের ওই ছাত্রলীগ নেতা। প্রায় দেড় মাস আগে প্রচারকার্য চালানোর সময় ওই মাদ্রাসা ছাত্রীর বাড়িতে গেলে নাসিরের সাথে তার পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে নাসির মাদ্রাসা ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। গত ২১ মে সকালে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে নাসিরের এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ নির্যাতিতা ও তার পরিবারের। পরে পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে মাদ্রাসা ছাত্রীকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থল থেকে অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এলাকার মাদবরদের কাছে অভিযোগ দিয়ে কোন বিচার পায়নি নির্যাতিতার পরিবার। পরে বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগি পরিবার আদালতে মামলা দায়ের করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে অভিযুক্ত নাসির। বিষয়টি সমাধানের কথা বলে নির্যাতিতার বাবাকে শনিবার সকালে মাদারীপুর শহরের একটি আবাসিক হোটেলে ডেকে এনে মারধর করে নাসির। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে সদর মডেল থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে নাসিরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
নির্যাতিতা ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ করে বলেন, ‘নাসিরের কঠিন বিচার চাই। ওর বিচার না হলে সমাজে মুখ দেখাতে পারবো না।’
নির্যাতিতার বাবা বলেন, নাসির জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও মাদারীপুর ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক। সেজন্য এলাকায় তার খুব প্রভাব। মাদবরদের কাছে বিচার চেয়েও পাইনি। উল্টো নাসিরের হাতে মার খেতে হয়েছে।’
শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মিরাজ হোসেন বলেন, ‘এই ঘটনায় মেয়েটির পরিবার এখনো থানায় আসেনি। ইতিমধ্যে সদর ওসি অভিযুক্ত নাসিরকে আটকের কথা মোবাইলে জানিয়েছেন। নাসিরকে থানায় নিয়ে আসতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নির্যাতিতার পরিবার অভিযোগ দিলে মামলা হবে।’
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর.এম.ও) মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ধর্ষণের শিকার একটি মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে আমরা তাকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছি। তার শরীর থেকে আলামত সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে।

পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, একটি ধর্ষনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ শহরের একটি হোটেলে বসেছিল। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান নাসিরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আটককৃত নাসিরকে আদালতে প্রেরণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন