শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

এবারের ‘জীবন-জীবিকায় প্রাধান্যের বাজেট’ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে যে প্রতিক্রিয়া

আবদুল মোমিন | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০২১, ১০:১৫ পিএম

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে অনেকেই সমালোচনা করেছেন। আবার এবারের বাজেটকে ইতিবাচকভাবেও দেখছেন কেউ কেউ। ফেসবুকে প্রস্তাবিত বাজেটের ভালো-মন্দ দিক নিয়ে চলছে চুল-চেরা বিশ্লেষণ।

আজ বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদের চলমান ত্রয়োদশ অধিবেশনে আগামী অর্থবছরের (২০২১-২২ সালের) জন্য ছয় লাখ তিন হাজার ৬৮১ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামল। স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০তম বাজেটে রাজস্ব ব্যয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ৭৮ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে দুই লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ বা দুই লাখ ১৪ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা হতে পারে।

আজ জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক, সরকারি-বেসরকারি সংগঠনের পক্ষ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়।

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানিয়েছে, চলমান করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রস্তাবিত বাজেটে পরিষ্কার যেসব দিকনির্দেশনা থাকা উচিত ছিল, তা নেই। বাজেটে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে যে পরিমাণ টাকা বরাদ্দ দেওয়া উচিত ছিল, তা-ও রাখা হয়নি। আগামী অর্থবছরের বাজেট দুর্বল অনুমিতি এবং বাস্তবায়নের সীমাবদ্ধতা চ্যালেঞ্জে ফেলবে বলেও মনে করছে সিপিডি।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘‘জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর ঘোষিত ৬ লাখ কোটি টাকার বাজেট শুনতে ভালো লাগছে, কিন্তু সোয়া ২ লাখ কোটি টাকার ঘাটতি রয়েছে। এটা চ্যালেঞ্জিং। এত বড় ঘাটতি বাজেট দিয়ে স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব নয়। এটি একেবারেই অবাস্তবায়নযোগ্য একটি কল্পনাপ্রসূত বাজেট। এটা কথার ফুলঝুরি ছাড়া আর কিছুই নয়।’’

অন্যদিকে, কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও জনগণের জীবন ও জীবিকাকে প্রাধান্য দিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার সুচিন্তিত, জনকল্যাণমুখী ও সাহসী বাজেটের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি খলিলুর রহমান। বৃহস্পতিবার তাৎক্ষণিক বাজেট প্রক্রিয়ায় খলিলুর রহমান বলেন, বাজেটে কোভিড মোকাবেলায় ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে এ মহামারিতে দেশের জনগণকে বাঁচানোর জন্য উক্ত থোক বরাদ্দ ৩০ হাজার কোটি টাকায় উত্তীর্ণ করার সুপারিশ করছি।

বাজেট প্রতিক্রিয়ায় ফেসবুকে মোঃ জামাল তালুকদার লিখেছেন, ‘‘প্রতিবছর উচ্চবিলাশী বাজেট পেশ করা হয়,অথচ এর বাস্তবায়ন হয়না,বাজেটের দুইভাগই হয় দুর্নীতি আর একভাগ কোনোরকম কাজ হয়,আর নিত্য পণ্যের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেস নেই,অথচ কিছু রাজনীতিক নেতা ভাষণ দেয় উন্নত দেশ,বাস্তবতা হলো সাধারণ মানুষের দুখের শেস নেই, এইদেশে ভালো আছে তারাই নেতা চোর দুর্নীতিবাজরা।’’

হোসাইন আমিন লিখেছেন, ‘‘যেসব পণ্য দাম কমানো হচ্ছে তা মানুষের অতীব প্রয়োজনীয়। এসব পণ্য ছাড়া মানুষ এক মুহূর্ত চলতে পারে না। চাল ডাল তেল মাছ মাংস সবজির দাম কমিয়ে কি করবে সরকার?’’

পান্থ ইশতিয়াক লিখেছেন, ‘‘সরকারি বাজেট এর ঘাটতি মেটানোর জন্য বেসরকারি খাত থেকে লোন গ্রহণ করা অব্যাহত থাকলে, নতুন উদ্যোক্তা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য লোনের পরিমাণ কমে যাবে বা নিয়ম আরো কঠিন হবে। .. দেখলাম ৯০ ভাগ মানুষই এই বিষয়টা বোঝেনা।’’

জানে আলমের মন্তব্য, ‘‘গরীব মানুষের কষ্ট বাড়ে এমন বাজেট মানুষ চাই না, মানুষ চাই সব কিছুর দাম নাগালের ভিতরে থাকে যেন, এখন বাজেট মানে মরার উপর খরার ঘা, সব কিছুর দাম কমানোর দরকার, করোনা মহামারী কারনে ব্যবসা বাণিজ্য দোকান পাঠ অচল পাটকল অচল চাকরি নাই, কর ভ্যাট কমানো দরকার, মানুষ বাঁচলে দেশ বাঁচবে, মানুষের মৌলিক অধিকার খাদ্য, খাদ্য দাম কমানোর দরকার,।’’

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর কর আরোপের সমালোচনা করে মোনতাহা লাবন্য লিখেছেন, ‘‘শিক্ষায় কর কেন দিতে হবে? উল্টো সরকার এর উচিত ভর্তুকি দেওয়া।যাতে গবেষণা বৃদ্ধি পায়।জাতির মেরুদণ্ড নড়বড় করছেন।এটা মোটেও সঠিক পদক্ষেপ নয়।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর কর আরোপ যুক্তিসঙ্গত নয়।শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান অর্থমন্ত্রীর এটা বোঝা উচিত ছিল। কোন দেশে বাস করতেছি আল্লাহ শেষ পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদেরও করের বোঝা বইতে হবে।’’

জাহাঙ্গীর আলম মনে করেন, ‘‘বাজেট পেশ করেছেন ভাল কথা কিন্ত বাস্তবায়ন করা অসম্ভব । প্রতিবার দেখা গেছে জনগণের টাকায় অর্থমন্ত্রী বৃহত্তর বাজেট পেশ করেন শেষ পর্যন্ত বাজেটের এক তৃতীয় অংশ দুর্নীতির মাধ্যমে পাচার করে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হয় । মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা থাকার পরও সেই টাকা আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়না ।’’

বাজেটের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে পলাশ রহমান লিখেছেন, ‘‘ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রীকে মুজিবনগরে রেলপথ,ভার্সিটি,স্থলবন্দর,কুষ্টিয়া মেহেরপুর ৪ লাইন রোড, মুজিবনগর সংস্করণ করার বাজেট পাশ দেবার জন্য।’’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন