বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চরম ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

বিশ্ব পরিবেশ দিবস আজ

রফিক মুহাম্মদ | প্রকাশের সময় : ৬ জুন, ২০২১, ১২:০২ এএম

জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

পরিবেশ দূষণ রোধে সরকার আন্তরিক নয় : বাপা

নানা কারণে পরিবেশ দূষণ প্রকট হওয়ায় মানবসভ্যতা আজ চরম হুমকির সম্মুখীন। পরিবেশ দূষণের মারাত্মক প্রভাবে বাংলাদেশ এখন দুর্যোগপূর্ণ দেশ। বিশ্বে পরিবেশ দূষণের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম সারিতে। বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দূষণ ও পরিবেশগত ঝুঁকির কারণে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। বাংলাদেশে প্রতিবছর যত মানুষের মৃত্যু হয়, তার ২৮ শতাংশই মারা যায় পরিবেশ দূষণজনিত রোগব্যাধির কারণে। পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে গত ৬০ বছরে ৮০টির বেশি প্রজাতির প্রাণি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। কয়েকশ’ প্রজাতির গাছপালা বিলুপ্ত।

পরিবেশ দূষণের ফলে সারা বিশ্ব যখন ব্যাপক বিপর্যয়ের মুখোমুখি তখন আজ পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’। পরিবেশ দূষণ রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৭৪ সাল থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশে এ দিবস পালিত হচ্ছে। জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির ঘোষণা অনুযায়ী ‘প্রতিবেশ পুনরুদ্ধার, হোক সবার অঙ্গীকার’ প্রতিপাদ্যে এবং ‘প্রকৃতি সংরক্ষণ করি, প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করি’ স্লোগান বিভিন্ন দেশ এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন করছে। বাংলাদেশে ‘মুজিববর্ষে অঙ্গীকার করি, সোনার বাংলা সবুজ করি’ এই প্রতিপাদ্যে এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান -২০২১ উদযাপন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে সোনালু, জাম, আমড়া ও ডুমুর বৃক্ষের ৪টি চারা রোপণ করে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযানের শুভ উদ্বোধন করবেন। এসময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, উপ-মন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এবং সচিব জিয়াউল হাসানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উপস্থিত থাকবেন।

মানুষের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন পরিবেশ-প্রকৃতি। কিন্তু প্রতিনিয়ত মানুষ এ পরিবেশকে নানাভাবে দূষিত করেছে। বিশ্বজুড়ে এখন পরিবেশ দূষণের মাত্রা ভয়াবহ। পরিবেশ দূষণের উল্লেখযোগ্য কারণের মধ্যে রয়েছে অত্যাধিক হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, নির্বিচারে বৃক্ষনিধন ও বনভ‚মি উজাড়, প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার, দ্রæত শিল্পায়ন, সার ও কীটনাশকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার, শিল্প-কলকারখানার বর্জ্য, গাড়ির বিষাক্ত ধোঁয়া, ওজোন স্তরের ক্ষয়, অ্যাসিড বৃষ্টি, প্লাস্টিক দ্রব্যের ব্যবহার ইত্যাদি

দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে। এ পরিণামে বাতাসে প্রতিবছর ২২ কোটি টন কার্বন মনোক্সাইড সঞ্চিত হচ্ছে। বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড, নাইট্রাস অক্সাইড গ্যাসের আনুপাতিক হার ক্রমেই বাড়ছে। এর ফলে বৃষ্টির পানিতে অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি হচ্ছে। এই অ্যাসিড বর্ষণ অরণ্যে মহামারির সৃষ্টি করছে। খাদ্যশস্যকে বিষাক্ত করছে। দ্রæতগতিতে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে সবুজ অরণ্য। সারা বিশ্বে বর্তমান ৮০ শতাংশ হলো গ্রীষ্মমন্ডলীয় অরণ্য। এর মধ্যে প্রতি মিনিটে ২১ হেক্টর কৃষিযোগ্য জমি বন্ধ্যা হয়ে গেছে। প্রতিবছর ৭৫ লাখ হেক্টর জমি মরুভ‚মি হয়ে যাচ্ছে।

পরিবেশ দূষণের জন্য পৃথিবীতে ৮০ শতাংশ নিত্যনতুন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। পরিবেশ দূষণের ফলে মেরু অঞ্চলের বরফ গলে পানিতে পরিণত হচ্ছে। বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তরের আয়তন ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। ফলে সূর্যের মারাত্মক অতিবেগুনি রশ্মি প্রাণিজগৎকে স্পর্শ করবে। দূষণের ফলে উদ্ভিদ ও জীবজগৎ আজ বিপন্ন। সমুদ্রে-নদীতে-জলাশয়ে মাছের সংখ্যা দিন দিন কমছে। মাছের শরীরে নানা রোগ দেখা দিচ্ছে।
পরিবেশবিদরা বলছেন, পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে মহামারির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী। এ অবস্থায় পরিবেশ রক্ষার জন্য সবাই কথা বলছেন। প্রতিবেশ পুনরুদ্ধার এবং প্রকৃতি সংরক্ষণের অঙ্গীকার নিয়ে পালিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। তাই আমাদেরকেও প্রকৃতি সংরক্ষণের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল ইনকিলাবকে বলেন, পরিবেশের দূষণ রোধে সরকার যথেষ্ট আন্তরিক বলে মনে হয় না। নদী দূষণ কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না। বায়ুদূষণ বেড়েই চলছে। প্লাটিক উৎপাদন ও বিপণন অব্যাহত রয়েছে। নদীদূষণ ও বায়ুদূষণ রোধে নেয়া প্রকল্পের টাকা লুটপাট করা হচ্ছে। অথচ সরকার আন্তরিক হলে এসব বন্ধ করা সম্ভব। তাই পরিবেশ দূষণ বিষয়টিকে সরকারকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। তা না হলে সামনে ভয়াবহ বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
এসো সত্যের পথে ৫ জুন, ২০২১, ১:০৭ এএম says : 0
সব ধরনের দুর্যােগ মোকাবেলা করা সম্ভব!! কিন্তু আমওয়ালীগ যে দুর্যোগ সৃষ্টি করছে, দেশে!! এটা মোকাবেলা করবো কেমন করে!!??
Total Reply(0)
Shahnaous Shah ৫ জুন, ২০২১, ১:০৭ এএম says : 0
একমাত্র মহান আল্লাহ রহমত করতে পারবে।এখানে কোন মানুষের হাত নেই।
Total Reply(0)
Prolay Bhattacharya ৫ জুন, ২০২১, ১:০৮ এএম says : 0
শিল্প বিপ্লবের পর থেকে পরিবেশের বারটা বাজিয়েছ পশ্চিমারা আর এখন বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার দায়িত্ব শুধু আমাদের। দারুন ।
Total Reply(0)
Naila Tabur ৫ জুন, ২০২১, ১:০৮ এএম says : 0
ব-দ্বীপ অঞ্চল ও নদীমাতৃক বাংলাদেশ।বিশাল জনগোষ্ঠীর চাপ সাথে নদীভাংগন এতদসম্যসা সত্বে ও দুর্যোগ মোকাবেলায় যে ব্যবস্তাপনা নিয়েছে যতটুকু উদ্যোগ সরকার নিয়েছে তা প্রশংসনীয়। তবে সেটাই যতেষট হতে পারেনা কারন জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ দেশের কাতারে এ দেশ ও রয়েছে। তাই এ ব্যাপারে উন্নত বিশ্বের কাছে আমরা জোরালো ভূমিকা চাই এবং আর ও জোর দাবি তুলে ধরতে হবে আমাদেরকে নিশ্চয়ই
Total Reply(0)
Sumon Hasan ৫ জুন, ২০২১, ১:০৯ এএম says : 0
এতো ঝুকিতে থাকার পরও আল্লাহ কতো ভালো রাখছেন আমাদের।কোন বড় দুর্যোগই নাই।মেহেরবানি তার
Total Reply(0)
Shahadat Hossain ৫ জুন, ২০২১, ১:০৯ এএম says : 0
যারা আমাদের ক্ষতি করছে তারা নির্বিকার। তাদের জরিমানা হওয়া উচিত।
Total Reply(0)
Md. Arif Hossain ৫ জুন, ২০২১, ১:০৯ এএম says : 0
রূপপুর আর রামপাল বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে যতেষ্ট! প্রকৃতি কাউকে ছাড়ে না ছাড়বেও না।
Total Reply(0)
SULTAN SAEED HASAN ৫ জুন, ২০২১, ১:৫২ এএম says : 0
Govt unable or not want to crate good and healthy environment in our country. As because day by day forest decreased. 8 to 9 % forest in whole country .actually mandatory main forest dept. Mainly responsible for this Ther are weak to conduct zenuine case aganst land grabbers even in Dhk and ctg city. 16 or 18% of total lamd. We see
Total Reply(0)
মোঃ মুছুলেহ উদ্দিন ৫ জুন, ২০২১, ৬:০৯ এএম says : 0
আল্লাহর নিকট সাহায্য চাইতে হবে বেশি বেশি।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন