শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ফরিদপুর বিএডিসিতে খাল খনন ও সেচ প্রকল্পের কাজে চরম অনিয়মের অভিযোগ

ফরিদপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ জুন, ২০২১, ১১:২৫ এএম

ফরিদপুর বিএডিসিতে ব্যাপক অনিয়ম খাল খনন ও সেচ প্রকল্পের কাজে চলছে হরিলুট উঠছে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ। এ কাজের মধ্যে রয়েছে সময়মতো ক্ষেতে সেচ ও পাট পচানোর জন্য খাল খনন করে পানি ধরে রাখা। ভূগর্ভস্থ থেকে সেচ নালার মাধ্যমে ইরি ব্লকে পাম্বের সাহায্যে পানি উত্তোলন ও নিঃস্কাশন করা। ফরিদপুর সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প (৪র্থ পর্যায়ে) কাজের মধ্যে রয়েছে বড় সাইজের হাইড্রোলিক্স স্টাকচার (রেগুলেটর) নির্মাণ, ভূগর্ভস্থ সেচনালা তৈরীকরণ কাজ, বাড়িট পাইপ দিয়ে ইরি ব্লকের কাজ, মাঝারী সাইজ বক্স কালভার্ট, ক্যাটেল ক্রসিং, পাম্ব হাউজসহ এ রকম বহু ধরনের কাজ চলমান। জানা যায়, জিএফআই এডিপি প্রকল্পের মধ্যে ২০৭ গ্রুপ কাজ চলছে। এর মধ্যে ১০৭ গ্রুপ বাড়িট পাইপ, দিয় সেচ নালার কাজ উন্নতকরণ। স্লুইসগেট নির্মান কাজ বৃহত্তর জেলায় ১০ টি। প্রতিটির মুল্য ৩৭ লাখ টাকা করে। ২০ টি মাঝারি সাইজের বক্স কালভার্ট প্রতিটির মুল্য ২০ লাখ টাকা। তেমনি খাল খননের ৪৭ গ্রুপ কাজের মধ্যে বড় কাজ ৪০ টি। প্রতিটির মুল্য ২০ লাখ টাকা করে। বাকি ৭ গ্রুপ কাজ ১৩ লাখ টাকা করে। রাস্তার মাঝখানে আড়াই ফুট/৩ ফুট পাইপ কেটে করা হচ্ছে কালভার্ট গেট যার মুল্য ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ভুগর্ভসস্থ থেকে সেচ নালায় পানি উওোলনের জন্য বসানো হচ্ছে ১০ টি ডিপটিউবওয়েল। যার প্রতিটির মুল্য ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কাজ না পাওয়া ঠিকাদার লিয়াকত আলী বিপ্লা বলছেন টেন্ডারে কোন নিয়ম-নীতি মানা হয়নি। ঠিকাদারদের মধ্যে অভিযোগ উঠছে যে, ৩৫% লেচে ইউপিবিসি পাইপ ক্রয় দেখানো হয়েছে। পাইপ ক্রয়ের ক্ষেত্রে ঠিকাদারদের ভ্যাট কর্তন করেছেন ১৫% আইডি কস্ট ৪%মোট ১৯%। সেক্ষেত্র (৩৬% লেস +১৯%) = ৫৪ % মুল্য দাড়ানো বিষয়টি বড় অনিয়মের স্বাক্ষী। কারন এই মুল্যে ক্রয়কৃত ইউপিবিসি পাইপ সবই নিম্নমানের বলে প্রমাণ মিলছে। ফলে পাম্পের সাহায্যে ভুগর্ভস্থ থেকে পানি টেনে তোলার সময় পাইপ ফেটে পানি বের উঠছে। সরেজমিনে এই চিত্র বহু স্কীমে দেখা গেছে। বিএডিসি ফরিদপুরের ৫০/৬০ জন ঠিকাদার অনিয়মের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। প্রকল্পের ২০৭ গ্রুপ কাজের প্রায় ২৫ কোটি টাকা মুল্যের কাজ আহ্বান করা হয়েছে। ১৫০ জন ঠিকাদারদের মধ্যে কাজ পেয়েছেন মাত্র ৭ জন। বাকি সব ঠিকাদার বাহইরের জেলার বলে অভিযোগ উঠছে। ঢাকার হোটেল রেডিসন ও হোটেল লিমেরিডিয়ানে গিয়ে ঠিকাদারদের আইডি কিনে ভাগ্য খোলাতে হয়েছে বলে ঠিকাদারদের মধ্যেকথা উঠছে। ফরিদপুরের সহকারী প্রকৌশলী মোঃ কামরুল ইসলাম যিনি কাশিয়ানী তে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন এবং পিডির খুব কাছের একই জেলার লোক। তিনি কাশিয়ানীর ঠিকাদার আনোয়ারকে দিয়ে সকল সুযোগ সুবিধা তিনি গ্রহণ করান এমন অভিযোগ বিস্তর। ঠিকাদারদের মধ্যে অভিযোগ উঠছে যিনি আইডি পেয়েছেন তিনিই কাজ পেয়েছেন। এই প্রকল্পের কাজ নিতে সহকারী প্রকৌশলী বোয়ালমারীর ৩% এবং নগরকান্দার উপসহকারী প্রকৌশলী কে লাখে ৩% এবং সহকারী প্রকৌশলী কাশিয়ানী কামরুলকে লাখে ৩% এবং প্রকল্প পরিচালক বা পিডির অফিস খরচ লাখে ৪% বাধ্যতামূলক গুনতে হয় বলে ঠিকাদার বিপ্লার অভিযোগ। এছাড়াও খাল খননের কাজে প্রতি এক কিলো কাজে সংশ্লিষ্টদের ৩০ হাজার টাকা বকশিশ বাধ্যতামূলক। উল্লেখিত, সকল অনিয়মের বিষয় প্রতিনিধির সাথে কথা এই প্রকল্পের পিডি ও নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব মনিরুল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, সরকারী নিয়ম ও দরপত্রের নীতিমালা বর্হিভুত কোন কিছুই করা হয়নি। অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি সবই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কথা হয় সহকারীকারী প্রকৌশল মোঃ কামরুল ইসলামের সাথে তিনি বললেন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালন করি আমি অনিয়ম করিনি। উল্লেখ্য,বিএডিসি প্রতি বছর খাল খননের কাজ শুরু করেন বর্ষা মৌসুমীর আগে। যাতে তদন্ত করার সময় খাল পানিতে ভরে গেলে ভাগাভাগিতে সুবিধা হয়। বিশেষ ভাবে উল্লেখ থাকে যে, প্রত্যেকটি খাল খননের “প্রি-ওয়ার্ক লেবেলে বড় ধরনের সুবিধা ধরে রাখা হয়। যার ফলে খালগুলির অল্প মাটি কেটেই বিলের মাধ্যমে কর্মকর্তা এবং ঠিকাদার ভাগাভাগি করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেন। এটাই দরিদ্র কৃষক জনগোষ্ঠীর সাথে একটি বিশাল প্রতারনা। উল্লেখিত ঠিকাদাররা এই কাজের বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী করছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন