বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অর্থ পাচারকারীদের নামগুলো দিন

জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০২১, ২:৩১ পিএম | আপডেট : ১২:১৯ এএম, ৮ জুন, ২০২১

আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আগামী এক বছরের মধ্যে ১৫টি আইন করার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সংসদে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের অর্থপাচার সংক্রান্ত সমালোচনার জবাবে এ সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, নামগুলো আমাদের দেন। এ কাজটি করলে আমাদের জন্য সহজ হবে। গতকাল সংসদে সম্পূরক বাজেট পাসের প্রক্রিয়ার সময় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের মঞ্জুরি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি এ তথ্য জানান। এর আগে ছাঁটাই প্রস্তাব তোলার সময় বিরোধী সংসদ সদস্যরা বিদেশে টাকা পাচার, পুঁজিবাজারের অব্যবস্থাপনাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সমালোচনা করেন।

এসব সমালোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, দেশের মানুষের কষ্টে অর্জিত টাকা বিদেশে চলে যাবে, আপনাদের যেমন লাগে, আমারও লাগে। আমি অনিয়ম, বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে। আমরা সবাই চাই এগুলো বন্ধ করতে হবে। বন্ধ হচ্ছে। আগের মতো অবস্থা নেই। আগে সিমেন্টের নাম করে বালি আসতো। একটার নাম করে আরেকটা আসতো। আন্ডার ইনভয়েসিং, ওভার ইনভয়েসিং আগের মতো হয় না। একদম বন্ধ হয়ে গেছে বলবো না। পত্রপত্রিকায় দেখতে পাই না।

এসব অনিয়ম বন্ধে সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী ছয় থেকে ১২ মাসের মধ্যে ১৫টি আইন দেখতে পারবেন। এগুলো বন্ধ করার জন্য। আমি নিজে জানি কীভাবে এগুলো হয়। কারা করে জানি না। অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, অকার্যকর সিস্টেমের জন্য এগুলো হয়। আমরা সংস্কারমুখী কাজ করবো। নতুন নতুন আইন করবো। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে দায় নিয়ে কাজ করতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দেবো। কোনও টলারেন্স নেই এখানে। টাকা এখন দেশে আসে।

বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, কারা বিদেশে টাকা নিয়ে যায়, তা আমার জানা নেই। লিস্ট আমার কাছে নেই।
বিরোধী সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, নামগুলো আমাদের দেন। কাজটি করলে আমাদের জন্য সহজ হবে। এখনও অনেকেই জেলে আছেন। বিচার হচ্ছে। আগে যেমন ঢালাওভাবে চলে যেত, এখন তেমন নেই।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ১২ বছরে ঋণের সুদ হার ১২ দশমিক ১ ভাগ থেকে কমে ৭ দশমিক ৩ ভাগ হয়েছে। এখন ব্যাংকের শাখা দ্বিগুণ হয়েছে। চাহিদা বেড়ে গেছে। গ্রামে গ্রামে ব্রাঞ্চ হয়েছে। দেশের মানুষ সেবা পাচ্ছে। ২০০৬ সালে খেলাপি ঋণের হার ছিল ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ। এখন আট শতাংশে নেমে এসেছে। ২০০৬ সালে টোটাল লোন আউটস্ট্যাডিং ছিল ১ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা। এটা এখন আটগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১১ লাখ ৮৭ হাজার কোটি টাকা হয়েছে।

এর আগে মঞ্জুরি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ছাঁটাই প্রস্তাব তোলার সময় বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, স্কুলে অঙ্কে ভালো ছাত্র ছিলাম। শিক্ষকরা আদর করতো। কিন্তু বাজেটের অঙ্কের হিসাব মেলাতে পারছি না। ঘাটতি কোথায়? কোথা থেকে টাকা আনবে? প্রবৃদ্ধির কথা বলছি। করোনাকালীন সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে করোনা নিয়ন্ত্রণে। না হলে প্রবাস আয়, গার্মেন্ট খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রবৃদ্ধির জন্য লাফাচ্ছি। সুচের ফোটা দিলে বেলুনের মতো চুপসে যাবে। করোনা নিয়ন্ত্রণ না হলে গার্মেন্ট আর প্রবাস আয় কমে যাবে। করোনা নিয়ন্ত্রণ না করলে ভয়ানক ধস নামবে।

তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে আর্থিক খাত ক্ষতিগ্রস্ত। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা জিরো টলারেন্স। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, অপ্রদর্শিত আয় নিয়ে। এটা সাংঘর্ষিক। দুর্নীতি, মাদক, অর্থ আত্মসাতের মাধ্যমে বিত্ত গড়ে তুললে তাকে সুযোগ দিয়ে ন্যায় করা হবে না। বেহাল দশা থেকে জাতিকে মুক্ত করতে হলে করোনা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মেগা প্রকল্প বাদ দেন।

বিএনপির আরেক সদস্য রুমিন ফারহানা বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করে পরিবারের হাতে ব্যাংক তুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জনগণের টাকার হরিলুট হচ্ছে। সংসদে ঋণখেলাপির তালিকা দেয়া হলো। তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হলো? বিদেশে এক লাখ কোটি টাকার ওপরে চলে যাচ্ছে। ওভার আর আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে যাচ্ছে। এর বাইরে হুন্ডির পরিমাণ ধরলে আল্লাহ মাবুদ জানেন কত টাকা বিদেশে গেছে!
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আর্থিক খাতে অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্ব সঠিক। কর্তৃত্ব দুর্বল। ব্যাংকে কর্তৃত্ব নেই। কর্তৃত্ব না থাকলে অবাধে এসব হবে। এক ব্যাংকের পরিচালক আরেক ব্যাংকের টাকা নিচ্ছে। টাকা নিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাঠাচ্ছে।

তিনি বলেন, দুদকের একটি অফিস কানাডা, মালয়েশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ায় করুন। তাহলে দেখা যাবে কে কত টাকা নিয়েছে। পিকে হালদার এত টাকা নিলো। বাংলাদেশ ব্যাংক অডিট করলে চুরি করার সুযোগ থাকে না। অর্থমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ে বসে কী করবেন। দোষ হয় মন্ত্রীর। অডিট করলে টাকা পাচার হয় না। ৯ মিনিটের জন্য পিকে হালদারকে ধরতে পারেনি। তাহলে ৯ ঘণ্টা আগে ধরতে পারলেন না কেন?

জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান বলেন, ব্যাংকিং খাত, আর্থিক প্রতিষ্ঠান নির্যাতিত এতিমদের মতো। দেখার কেউ নেই। লুটপাট হচ্ছে। দুর্নীতি হচ্ছে। কিছুই হয় না। শাস্তি হয় না।##

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (14)
Tareq Sabur ৭ জুন, ২০২১, ৩:৪৭ পিএম says : 0
দেশের অর্থ কারা পাচার করছে সেটা আপনারাই চেষ্টা করলে জানতে পারবেন
Total Reply(0)
Tareq Sabur ৭ জুন, ২০২১, ৫:০৫ পিএম says : 0
আপনারা কি অর্থ পাচারকারীদের নাম জানেন না?
Total Reply(0)
ABDUR ROUF ৭ জুন, ২০২১, ৫:৩৩ পিএম says : 0
HA HA HA
Total Reply(0)
Anwar ৭ জুন, ২০২১, ৬:২৯ পিএম says : 0
সত্যই কি অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
Total Reply(0)
Md Zahid Liton ৮ জুন, ২০২১, ১:০৫ এএম says : 0
স্যার, এমন একটা কথা বললেন না হেসে পারি না। গোয়েন্দা সংস্থাকে লাগিয়ে দিন ২ দিনে বের করে দিবে কতশত ব্যাক্তি টাকা পাচার করেছে।
Total Reply(0)
উম্মে সাঈমা মনি ৮ জুন, ২০২১, ১:০৫ এএম says : 0
মাননীয় মন্ত্রী নাম নিলে কারোও চাকরি থাকবে না, আমি বলতে চাই, আমার নিরাপত্তা কে দিবে
Total Reply(0)
Julhash Chowdhruy ৮ জুন, ২০২১, ১:০৬ এএম says : 0
আমাদের অর্থমন্ত্রীর অর্থ পাচারকারীর নামই নাকি জানে না অথচ কুয়েতে মানব ও অর্থ পাচারের দায়ে বাংলাদেশের সাংসদ কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে। এর পাশাপাশি লক্ষ্মীপুর–২ আসনের স্বতন্ত্র এই সাংসদকে ১৯ লাখ কুয়েতি দিনার বা ৫৩ কোটি ১৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
Total Reply(0)
Monir Ahmed Raju ৮ জুন, ২০২১, ১:০৬ এএম says : 0
দেশের বাহিরে কাদের কাদের বাড়ি ঘর, ব্যবসা আছে তাদের উপর তদন্ত চালান। দেখবেন পাচারকারীদের নাম বের হয়ে আসতেছে।
Total Reply(0)
Islam Mohammad NL ৮ জুন, ২০২১, ১:০৭ এএম says : 0
স্যার শুধুমাত্র আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করেন পয়ে যাবেন। আমাদের দেশের গোয়েন্দা সংস্থা গুলো অত্যন্ত সুদক্ষ ও বুদ্ধীদিপ্ত এতে কোন সন্দেহ নেই শুধু তাদের নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে দিন , পেয়ে যাবেন। আমি শতভাগ নিশ্চিত। আর পি কে হালদারের কথা তো সবাই জানে শুধু জানে না তারা যারা সবকিছু জেনেও না জানার ভান করে। ধন্যবাদ স্যার।
Total Reply(0)
Anowar Hosan ৮ জুন, ২০২১, ১:০৭ এএম says : 0
মাননীয় অর্থমন্ত্রী দেশের বাজেটের টাকা যেন তাদের বাজেট যেন না হয় আর একাউন্ট এ যোগ না হয়
Total Reply(0)
সাইফুল ইসলাম ৮ জুন, ২০২১, ৬:৪৭ এএম says : 0
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল মাহেবের কথাগুলো ভালো লেগেছে। আশা করি তিনি দেশের জন্য ভালো কিছু করবেন।
Total Reply(0)
Billal Hosen ৮ জুন, ২০২১, ৯:০৭ এএম says : 0
Its lame excuse of some people or responsible persons. Action or advise : Himself or your team work found it. so result best. another person included means quarrel & case & enemies create. please thinking good for people of Bangladesh. Every person out of earth day by day.
Total Reply(0)
Mominul+Hoque ৮ জুন, ২০২১, ৯:৫৩ এএম says : 0
আমি বিশ্বাস করি বর্তমান অর্থমন্ত্রী একজন অত্যন্ত বিচক্ষণ অর্থনীতিবিদ। কিন্তু উনি যে বললেন কারা বিদেশে টাকা পাচার করে তাদের নাম দেওয়ার জন্য এই কথাটি উনার সাথে যায় না। দূর্ণীতি কিভাবে হচ্ছে শুধু একবার চোখ দেন একজন সরকারী কর্মকর্তার মাসিক বেতন কত, আর তার চলা ফেরার ধরণ কেমন। তাহলেই বেড়িয়ে আসবে কেঁচোর সাথে সাপ আর তার সাথে রাঘব বোয়ালরা। হয়তো দেখবেন এগুলোর করতে গেলে আপনার গদি নড়বড়ে হয়ে যেতে পারে। তবে আমি বিশ্বাস করি বর্তমান সরকার যদি আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করে অবশ্যই অবশ্যই সম্ভব এসব রাঘব বোয়ালদের মূলউৎপাটন করা।
Total Reply(0)
robiul alam ৮ জুন, ২০২১, ৯:৫৮ এএম says : 0
lune pay amla rin kelafira. sadaron manus tar kuti takar somptti dekaleo 10 lak payna chottograme 24 business men 10 har kuti taka niye palalo hoyto tader kisui nei? lune judi sompoder 50% dito tahole palatona. ababe bank gulu faka korse atar suraha dorkar? kara lune day oder oder kotin sasti howa dorkar
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন