মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে যে কারণে ফরাসিদের এতো ক্ষোভ

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০২১, ১১:৪৯ এএম

ধনী শ্রেণির স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে ম্যাঁক্রো যে অতিরিক্ত কর আরোপ ব্যবস্থা চালু করে ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যকার ব্যবধানকে বাড়িয়ে তুলছেন বিরোধীরা সেটিকে বলছে ‘ম্যাঁক্রোইজম’। মূলত এই ম্যাক্রোইজমের বিরুদ্ধেই সে দেশের জনগণের যতো ক্ষোভ কাজ করছে। গতকাল মঙ্গলবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট চড় মারার সময় হামলাকারী সেই ‘ম্যাঁক্রোবাদ নিপাত’ যাওয়ার স্লোগানই দিয়েছিল।

জানা যায়, জনসংযোগের সময় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে সজোরে থাপ্পড় মারেন এক ব্যক্তি। সেখানে ভিড় জমানো জনতার সঙ্গে হাত মিলিয়ে কথা বলার সময় এ ঘটনা ঘটে। তৃতীয়বারের মতো জনসম্মুখে হামলার স্বীকার হলেন তিনি।

সমর্থক ভেবে হাত মেলাতে গিয়েছিলেন, কিন্তু ওই ব্যক্তি সোজা চড় বসিয়ে দেবে গালে তা কল্পনাও করেননি ম্যাঁক্রো। নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যখন হামলাকারীকে চেপে ধরছিল তখনও সে স্লোগান দিচ্ছিল ‘ম্যাঁক্রোবাদ নিপাত যাক।’ ক্ষোভ আর বিদ্বেষের মাত্রা কতটুকু হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে তা কিছুটা আন্দাজ করা যায়। কিন্তু ফরাসি প্রেসিডেন্টের ওপর দেশটির জনগণের এতো ক্ষোভের কারণ কি হতে পারে-

জানা যায়, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার ১৮ মাসের মাথায় ম্যাঁক্রোর বিরুদ্ধে প্রথম বড় আকারের বিক্ষোভ হয়। জীবনযাত্রার নিম্নমান, দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিসপত্রের লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি, ওভার টাইম ও পেনশনের উপর কর বসানোর সিদ্ধান্তে দেশটির মধ্যবিত্ত ফুঁসে উঠেছিলো। ওই পরিস্থিতির মধ্যেই ঘিতে আগুন দেওয়া হয় জ্বালানি তেলের ওপর পরিবেশ কর আরোপ করার সিদ্ধান্তে। এর প্রতিবাদে ২০১৮ সালের অক্টোবর মাস থেকে ইয়েলো ভেস্ট বা ‘হলুদ জ্যাকেট’ আন্দোলন শুরু হয়। প্রতিবাদ–বিক্ষোভে ট্যাক্সিচালকদের ব্যবহৃত হলুদ জ্যাকেট পরে প্রতিবাদকারীরা অংশ নেওয়ায় এই আন্দোলনের নাম দেওয়া হয় ‘ইয়েলো ভেস্ট’ বা ‘হলুদ জ্যাকেট’ আন্দোলন। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও তীব্র প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পর গত ৪ ডিসেম্বর জ্বালানির ওপর বর্ধিত কর প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়।

পরের বছর, ২০১৯ সালে ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলনের বর্ষপূর্তিতে ব্যাপক ভাঙচুর, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয় ফ্রান্সে। ওই দিন ম্যাঁক্রোকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, তার বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভ কমেনি।

২০২০ সালে করোনাভাইরাসের মহামারি শুরু হলে অর্থনীতি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন ম্যাঁক্রো। ভুল অর্থনৈতিক নীতির জন্য ফরাসি অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দুর্বল করে ধনিক শ্রেণির স্বার্থরক্ষার অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে। গত বছর দেশে চালানো এক জরিপে দেখা যায়, ৭৮ ভাগ ফরাসি মনে করে প্রেসিডেন্ট ম্যাঁক্রোর আমলে ফ্রান্স পতনের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Kawsar Ahmed Sujan ৯ জুন, ২০২১, ২:২৯ পিএম says : 0
হিন্দিতে একটি কথা আছে "সামাজদারকে লিয়ে ইশারা কাফিহে" তাই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মেক্রোর গালে যে থাপ্পড় দিয়েছেন একজন সাধারণ নাগরিক! যদিও বিষয়টি সুশীল সমাজের কাম্য নয় কিন্তু নিরব একটা মেসেজ হল এই মেক্রো সাম্প্রতিক কালে সবচেয়ে নেক্কার জনক ভাবে দো-জাহানের বাদশা রাহমাতুল্লিল আলামীন মোহাম্মদ (সাঃ) এর বিরুদ্ধে প্রপাগাণ্ডা উপভোগ করছিল তাই আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত সুকৌশলে অতি নগন্য একজন জনসাধারণের থাপ্পড়ের মাধ্যমে বিশ্বাবাসীকে মেক্রোর অসহায়ত্ব উপভোগ করালেন।
Total Reply(0)
Sheikh Abdullah Al Muid ৯ জুন, ২০২১, ২:৩০ পিএম says : 0
Ar egula dheke Nijer acceptability baraite Muslim der target kore...jodio or Political counterpart o anti Islamic
Total Reply(0)
বুলবুল আহমেদ ৯ জুন, ২০২১, ২:৩২ পিএম says : 0
সে একজন ব্যর্থ প্রেসিডেন্স
Total Reply(0)
তাজউদ্দীন আহমদ ৯ জুন, ২০২১, ২:৩৩ পিএম says : 0
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে ইসলামী বিদ্বেষী কার্যকালাপ করছে এবং সেগুলো সমার্থন দিচ্ছে
Total Reply(0)
হুমায়ূন কবির ৯ জুন, ২০২১, ২:৩৪ পিএম says : 0
হয়তো সামনে ওর কপালে আরও অনেক দুঃখ আছে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন