বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পারস্পরিক মুনাফা ও সমৃদ্ধির অংশীদার হোন

মার্কিন ব্যবসায়ীদের শেখ হাসিনা

প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বন্ধুত্ব আরো জোরদার করতে পারস্পরিক মুনাফা ও সমৃদ্ধির পথে ঢাকার সঙ্গে অংশীদার হতে মার্কিন ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সম্প্রসারণ ও একটি আধুনিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করতে এদেশের পোশাকের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের সুযোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বংলাদেশ তার কাক্সিক্ষত লক্ষ্য অর্জনে আপ্রাণ চেষ্টা করছে। এ প্রেক্ষাপটে আমি পারস্পরিক মুনাফা ও সমৃদ্ধির পথে আমাদের অংশীদারদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এ ধরনের লাভজনক অংশীদারিত্ব দুই দেশের বন্ধুত্ব আরো জোরদার করবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার হোটেল ওয়ালডর্ফ অ্যাসটোরিয়ায় বিজনেস কাউন্সিল অব ইন্টারন্যাশনাল আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের (বিসিআইইউ) উদ্যোগে আয়োজিত এক মধ্যাহ্ন ভোজসভায় আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে বক্তব্য রাখছিলেন।
তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ নীতি রয়েছে। এর মধ্যে আইনের মাধ্যমে বৈদেশিক বিনিয়োগের সুরক্ষা, উদার কর অবকাশ, যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক হ্রাস, রেমিট্যান্স অব রয়েলিটি, শতভাগ বিদেশী ন্যায্যতা, উদার প্রত্যাহার নীতি এবং লভ্যাংশ ও মূলধনের পূর্ণ প্রত্যাবসনের সুবিধা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশী বেসরকারি শ্রমঘন শিল্পের জন্য প্রায় ১শ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রস্তুত হয়ে গেছে। এ সময় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র একটি দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ নীতি এবং দ্বৈত কর এড়ানো সংক্রান্ত সম্মেলনে স্বাক্ষর করেছে।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি বিশেষত নবায়নযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, জাহাজ নির্মাণ ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ, অটোমোবাইল ও হালকা প্রকৌশলী, রাসায়নিক সার, কৃষি-প্রক্রিয়াকরণ, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিকস ও প্লাস্টিক পণ্য, আইসিটি, নৌসম্পদ অন্বেষণ, পর্যটন, মেডিকেল যন্ত্রাংশ, টেলিযোগাযোগ ও জ্ঞানভিত্তিক উচ্চ প্রযুক্তির শিল্প খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত। এসব পণ্যের বেশিরভাগই ৫২টি দেশে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশের সুযোগ পাবে, যার ফলে বাংলাদেশ সুবিধা পাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সম্প্রসারণ, এ শিল্পে আরো বেশি নারীদের নিয়োগ ও নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি ও একটি আধুনিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাকের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার দেয়া ওয়াশিংটনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।
তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, চীন, জাপান, ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলোর মতো ৫২টি দেশ বাংলাদেশকে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা দেয়। যুক্তরাষ্ট্র ৫২টি দেশের মতো এ সুযোগ দিতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক অনেক উচ্চতার দিকে এগুচ্ছে। আজ আমাদের দু’দেশের মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক বিরাজ করছে। বাংলাদেশে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির সাম্প্রতিক সফর এর প্রমাণ। এমনকি আমাদের কৌশলগত সম্পর্ক সময়ের সাথে সাথে আরো বিস্তৃত ও গভীর হচ্ছে। এ ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে প্রভাব রাখছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত আমেরিকান কোম্পানিগুলোই সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী। গত বছর তারা বাংলাদেশে অর্ধ বিলিয়ন ডলার অথবা মোট এফডিআই’র ২৫ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে। বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশী পণ্যের আমদানিকারক একক দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এখনো শীর্ষে রয়েছে। আমাদের দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য গত বছর দাঁড়িয়েছে ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। উচ্চ শুল্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী তৈরি পোশাকের ব্যাপারে শর্তারোপের ইস্যুগুলো যদি প্রত্যাহার করে নেয়া হয় তাহলে এই বাণিজ্য আরো বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, এলডিসিভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এলডিসিভুক্ত অন্যান্য দেশের মতো সুবিধা পাওয়ার কথা, কিন্তু বাংলাদেশ তা পায় না। এলডিসিভুক্ত অন্যান্য দেশকে যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত সংরক্ষণ ব্যবস্থার সম্মুখীন হতে হয় না। ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য ডিএসপি সুবিধা স্থগিত করে। এমনকি ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সবগুলো দেশের জন্য জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল করে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে রফতানির পর থেকে এই শিল্পে ৪০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এই শ্রমিকদের ৯০ শতাংশই নারী এবং তারা দরিদ্র পরিবার থেকে এসেছে। তাদের আয় তাদের ক্ষমতায়ন করেছে। এর ফলে এখন তারা পুষ্টিকর ভাল খাবার পাচ্ছে, সন্তানদের স্কুলে পাঠাচ্ছে এবং পরিবারে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের ক্ষমতায়ন দারিদ্র্য হ্রাসে সহায়ক হয়েছে, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে এবং শিক্ষার হার বাড়ছে। বিশেষভাবে এই অগ্রগতি সমাজকে প্রগতিশীল করে তুলছে, যা সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়ক হচ্ছে। এই প্রচেষ্টা সফল করতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এরফলে বাংলাদেশের পোশাক খাত সম্প্রসারিত হবে, আরো কর্মসংস্থান হবে, আরো নারীর ক্ষমতায়ন হবে এবং এটি আধুনিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সহায়ত হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, গত বছর বাংলাদেশে মোট সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রথমবারের মতো দুই বিলিয়ন ছাড়িয়ে গেছে, বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের এই আস্থা দেশটির সামষ্টিক অর্থনীতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বাস্তব অবকাঠামো উন্নয়নের সূচক। তাদের আস্থা বৃদ্ধির কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনা এবং ২০২১ সালনাগাদ মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালনাগাদ উন্নত দেশে পরিণত করার সক্রিয় প্রচেষ্টা।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে তার দল সরকার গঠন করার পর বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারের গড় দাঁড়ায় ৬.২ শতাংশের বেশি, চলতি বছর তা ৭ শতাংশ অতিক্রম করেছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৬৫ শতাংশ, মূল্যস্ফীতি ৫.৪৫ শতাংশে রাখা সম্ভব হয়, রফতানি আয় দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি এবং রেমিটেন্স বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ায় ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বার্ষিক মানব উন্নয়ন সূচক দাঁড়ায় ১.৬ শতাংশ।
তিনি বলেন, এসব অর্জন এমডিজি’র লক্ষ্যসমূহ অর্জনে সহায়ক হয়েছে এবং বাংলাদেশ এখন একটি বাণিজ্যনির্ভর দেশ। বৈদেশিক সাহায্য এখন বার্ষিক জিডিপি’র ১.৫ শতাংশ। জাতিসংঘ মহাসচিব বান-কি মুন প্রায়ই বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোল মডেল।’
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, জাতিসংঘে বাংলাদেশের দূত এবং স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন, এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ এবং প্রথম সহ-সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট ফর সাউথ অ্যান্ড সেন্ট্রাল এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি নিশা দেশাই বিসওয়াল, আমেরিকান টাওয়ার কর্পোরেশন, ওয়ালমার্ট, মেটলাইফ, বোয়িং, শেভরন কর্পোরেশন, জিই, কোকা কোলাসহ বিভিন্ন কোম্পানি থেকে ব্যবসায়ী নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।
নতুন কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন ও নেতৃত্ব চেয়েছে কমনওয়েলথ
নারীর ক্ষমতায়নে কমনওয়েলথের নতুন কর্মসূচিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থন ও নেতৃত্ব কামনা করেছেন কমনওয়েলথ মহাসচিব ব্যারোনেস প্যাট্রিসিয়া জ্যানেট স্বটল্যান্ড। তিনি বলেন, আমরা নারীর ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করতে যাচ্ছি। এতে আমরা আপনার সমর্থন ও নেতৃত্ব চাই। গত সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় প্যাট্রিসিয়া এই অনুরোধ করেন। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র সচিব জানান, নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ ভূমিকা রাখায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন কমনওয়েলথ মহাসচিব। প্যাট্রিসিয়া চরমপন্থীদের সহিংসতা ও সন্ত্রাসসংক্রান্ত কমনওয়েলথভিত্তিক কর্মসূচি ও মানবাধিকার রক্ষায় সংস্থাটির কর্মসূচিসহ নতুন দু’টি অগ্রাধিকার সম্পর্কেও প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
তিনি জানান, অগ্রাধিকার তালিকায় দুটি বৃহৎ থোক কর্মসূচি রয়েছে। এগুলো হচ্ছেÑএসডিজি, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সহিংস চরমপন্থী ও সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও মানবাধিকার।
কমনওয়েলথ মহাসচিব এই দুটি বৃহত্তর কর্মসূচিতে শেখ হাসিনার সমর্থন চান এবং বলেন, বাংলাদেশের অভিজ্ঞতার আলোকে কমনওয়েলথ তার কিছু নতুন কর্মসূচির উন্নয়ন করতে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী কমনওয়েলথ মহাসচিবকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড সানন্দে এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং স্বল্প সময়ের মধ্যেই তিনি ঢাকা সফর করবেন বলে জানান।
যে কোনো পরিস্থিতিতে অভিবাসী ও শরণার্থীদের অধিকার সুরক্ষা করতে হবে
অভিবাসী এবং শরণার্থীদের অধিকার সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অভিবাসন বিষয়টি সার্বিকভাবে মোকাবিলায় বিশ্বকে পারস্পরিক দায়িত্বশীলতার ওপর ভিত্তি করে একটি সাধারণ সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে।
তিনি বলেন, যে কোনো পরিস্থিতিতে তাদের মর্যাদা নির্বিশেষে অভিবাসীদের অধিকার সুরক্ষা করতে হবে এবং বিশ্বব্যাপী আমাদের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতি, অভিবাসী ও শরণার্থীদের অধিকার সংরক্ষণ সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রী গত সোমবার জাতিসংঘ সদর দফতরে সাধারণ পরিষদের প্লেনারির একটি উচ্চপর্যায়ের সভায় শরণার্থী এবং অভিবাসীদের সম্পর্কে এসব কথা বলেন। শরণার্থী ও অভিবাসীদের বিষয়ে প্রথমবারের মতো সম্মেলন আহ্বান করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই এই ঐতিহাসিক সুযোগ গ্রহণ করতে হবে এবং মানুষের চলাচল ব্যবস্থাপনা সুচিন্তিত, জোরালো, উচ্চাভিলাষী ও বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বৃহত্তর উন্নয়নের লক্ষ্যে আমাদের এটি করা প্রয়োজন।
শেখ হাসিনা বলেন, অভিবাসন জনগণের জন্য কল্যাণকর ও বাস্তবতা ও স্বাধীনতার প্রত্যাশার নিরিখে এ বিষয় আমাদের সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে হবে। তিনি অভিবাসন ব্যবস্থাপনার কিছু দিক তুলে ধরেন। প্রথমত, সার্বিকভাবে অভিবাসন বিষয় সুরাহার জন্য প্রথমে পারস্পরিক আস্থা, শ্রদ্ধাবোধ, যৌথ দায়িত্ব ও অংগ্রহণ জরুরি। এই বৈশ্বিক নীতিমালা অবশ্যই আমাদের অভিন্ন চুক্তিবদ্ধ হতে হবে।
দ্বিতীয়ত, আমাদের অঙ্গীকার করতে হবে, কাউকে পেছনে ফেলে যাবো না। সকল পরিস্থিতিতে অভিবাসন অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের বহুমুখী সমাজের মধ্যে সম্প্রীতি গড়ে তুলতে হবে, অভিবাসী ও উদ্বাস্তুদের অধিকার সুরক্ষা ও সমুন্নত করতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে সমতা বিধান জরুরি।
তৃতীয়ত, অভিবাসন ও চলাচলের জন্য প্রয়োজন এটিকে নতুন ইতিবাচক অধ্যায়ে নিয়ে যাওয়া। অভিবাসন ব্যবস্থাপনার দীর্ঘদিনের ঘাটতি পূরণে বাংলাদেশ গ্লোবাল কমপ্যাক্ট অন মাইগ্রেশন প্রস্তাব দিয়েছে।
সংলাপের মাধ্যমে সকল দ্বিপাক্ষিক বিষয় সমাধানে সম্মত বাংলাদেশ ও মিয়ানমার
সংলাপের মাধ্যমে সকল দ্বিপাক্ষিক বিষয় সমাধানের ব্যাপারে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার।
গত সোমবার জাতিসংঘের ৭১তম সাধারণ পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে আসা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি’র সঙ্গে জাতিসংঘ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ ব্যাপারে সম্মত হয় দুই দেশ।
বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য সচিব ইহসানুল করিম জানান, এই দুই নেতা প্রতিবেশী দুই দেশের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন এবং সংলাপের মাধ্যমে তা সমাধানের ব্যাপারে সম্মত হন। বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কফি আনান কমিশনকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে কখনও কোনো দেশের সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে বরদাশত করা হবে না। তিনি বলেন, সন্ত্রাস ও চরমপন্থী কর্মকা- প্রতিরোধে অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কার্যকর সহযোগিতার ব্যাপারে বাংলাদেশ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের নেতাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং সুচি এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ ও পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন