শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মহেশখালীতে সংখ্যালঘুর ঘর ভেঙে দিয়ে জমি দখলে নেয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

কক্সবাজার ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৯ জুন, ২০২১, ৯:০১ পিএম

মহেশখালীতে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া দীর্ঘদিনের ভিটায় ঘর করতে গিয়ে এক সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবার পৌর মেয়রের বাধার সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানা গেছে । তাদের নির্মাণাধীন ঘর ভেঙে দিয়ে হত্যার হুমকিও দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। ৯জুন বুধবার কক্সবাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা এই অভিযোগ করেন। কক্সবাজারের মহেশখালী পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগ নেতা মকছুদ মিয়ার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেছেন পৌরসভার স্থায়ী বাসিন্দা শিক্ষক সহোদর প্রবীর দাশ ও সমীর কান্তি দাশ।

ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, কোটি টাকা মূল্যের ব্যাক্তিমালিকাধীন জমি দখলে নিতে পৌর মেয়রের উপস্থিতিতে তাদের ঘর ভেঙে দেয়া হয়। ঘর ভাঙ্গার পর সংখ্যালঘু পরিবারটিকে প্রাণের মারার হুমকিও দিয়েছেন মেয়র মকছুদ মিয়ার সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা।

বুধবার (৯ জুন) বিকেলে শহরের আছাদ কমপ্লেক্সস্থ কক্সবাজার রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মহেশখালী শাপলাপুরের দিনেশপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রবীর দাশ বলেন, জীবনে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত, অভাব, অনটন ও দারিদ্রতাকে মোকাবেলা করে এসে বর্তমানে ভূমিদস্যুদের আক্রোশের শিকার হতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও প্রান্তিক পরিবারের সন্তান। মহেশখালী পৌরসভার গোরকঘাটা বাজার সংলগ্ন দক্ষিণ হিন্দুপাড়ায় পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত ভিটায় আমরা যুগ যুগ ধরে বাস করে আসছি। ভিটাটি একটু নিচু হওয়ায় তিনমাস আগে ভরাট করে কাঁচা ঘর তৈরি করার সময় ১ জুন সকালে মহেশখালী পৌর মেয়র মকসুদ মিয়ার উপস্থিতিতে একদল সন্ত্রাসী আমাদের জমিতে এসে আকস্মিকভাবে ভাংচুর চালায়। কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। অথচ এ জমির বিপরীতে আমরা নিয়মিত ভূমিকর এবং পৌরকরও পরিশোধ করে আসছি।

শিক্ষক সমীর দাশ আরো বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে মেয়রের কাছে জানতে চাইলে আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে বলেন, পুনরায় ঘর তৈরি করলে মাটিতে জ্যান্ত পুঁতে ফেলা হবে। মামলায় জড়িয়ে এলাকা ছাড়া করা হবে।

এরপর থেকে মেয়র ও সন্ত্রাসীরা নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন। মহেশখালী গোরকঘাটাস্থ জেটিঘাটে অবস্থিত সংখ্যালঘু পরিবারের প্রতিষ্ঠানগুলো এবং গোরকঘাটা বাজারের দোকানগুলো বন্ধ করার এমনকি তালা লাগিয়ে দেয়ারও হুমকি দেন তারা।

মেয়র মকসুদ মিয়ার বিরুদ্ধে একটি লিখিত জিডি নিয়ে মহেশখালী থানায় গেলেও পুলিশ জিডিটি এন্ট্রি করেননি বলে অভিযোগ করেন শিক্ষক সমীর দাশ।

জানমাল-সহায় সম্পত্তির নিরাপত্তা চেয়ে প্রধান শিক্ষক প্রবীর দাশ বলেন, আমরা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরীহ মানুষ। কোনোরকম ঝক্কিঝামেলা, ফ্যাসাদ-বিবাদে কারো সঙ্গে জড়াতে চাই না। শান্তিপূর্ণভাবে সকলের সঙ্গে সহাবস্থান করতে চাই। কিন্তু মেয়রের ছত্রছায়ায় থাকা সন্ত্রাসীদের হুমকিতে বর্তমানে ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। এসব জুলুম অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমরা সরকারের উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মহেশখালীর পৌর মেয়র মকছুদ মিয়া তার বিরুদ্ধে উঠা সব অভিযোগই মিথ্যা বলে দাবি করে বলেন, এটি তার বিরুদ্ধে একটি অপপ্রচার ।

মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাই বলেন, বিরোধপূর্ণ জায়গা-জমির সিদ্ধান্ত দেয়ার এখতিয়ার আসলে পুলিশের নেই। শিক্ষক সমীর দাশ ও মহেশখালীর পৌরমেয়র দুজনই জমিটা তাদের বলে দাবি করছেন। তাই জিডি নথিভুক্ত না করে উভয় পক্ষকে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তির পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন