শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সুন্দরী তরুণীদের সঙ্গে আড্ডার লোভ দেখিয়ে কোটি টাকার জুয়া

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০২১, ১২:০৩ এএম

লাইভ স্ট্রিমিং অ্যাপ ‘স্ট্রিমকার’। এটি দেশের বাইরে থেকে পরিচালিত হয়। এই অ্যাপে বিন্স ও জেমস নামের দুটি ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার করা হয়। এসব মুদ্রার বিনিময়ে সুন্দরী তরুণীদের সঙ্গে আড্ডার লোভ দেখিয়ে লোকজনকে কোটি টাকার জুয়ায় টেনে নেয়া হয়। এক লাখ বিন্স এক হাজার ২০ টাকা ও এক লাখ জেমস ৬০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। আর এই টাকা সংগ্রহ করা হয় বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং ও ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে। স্ট্রিমকার অ্যাপ ব্যবহার করে কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল রাজধানীর মালিবাগ সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির সাইবার ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কামরুল আহসান।
তিনি বলেন, এই প্লাটফরমে বিভিন্ন অপরাধ পরিচালিত হওয়ার তথ্যের ভিত্তিতে সাইবার পুলিশ অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছিল। এই অনুসন্ধানে ১৫টি ব্যাংক একাউন্ট থেকে বিপুল পরিমাণ তথ্য পায় সাইবার পুলিশ। এই অ্যাপের মূল টার্গেট যুব সমাজ ও বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা।
গত ১৯ মে এন্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ) অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করে। পরে এদের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করা হয়। যা সাইবার পুলিশ সেন্টার তাদের অধীনে নেয়। এই মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য ও আগের অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) গত বুধবার রাতে সিলেটের গোয়াইনঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরও দুইজনকে গ্রেফতার করে। তারা হলেন- নিধু রাম দাস ও ফরিদ উদ্দিন।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কামরুল আহসান বলেন, ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করে দেশ থেকে অ্যাপটিতে যুক্ত হতেন ব্যবহারকারীরা। এ অ্যাপে দুই ধরনের আইডি রয়েছে। ইউজার বা ব্যবহারকারীর আইডি ও হোস্ট আইডি। হোস্ট আইডি ব্যবহার করে বিশেষ কিছু চক্র এক ধরনের অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে। সেখানে তরুণীদের হোস্টিং করিয়ে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ উপার্জন করা হয়।
লাইভ স্ট্রিমিংয়ে তাদের সঙ্গে আড্ডা দেয়ার প্রলোভনে অ্যাপে প্রবেশ করেন সাধারণ ব্যবহারকারীরা। তার জন্য বিন্স নামে ভার্চুয়াল মুদ্রা কিনতে হয়। সেই মুদ্রা উপহার হিসেবে দিয়ে আড্ডায় যুক্ত হন ব্যবহারকারীরা। টাকা সংগ্রহের বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, এই টাকা সংগ্রহ করা হতো বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং ও ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে। এই এজেন্সিগুলো তা কিনে নিতো বিদেশি অ্যাপের অ্যাডমিনদের কাছ থেকে। এরকম স্ট্রিমকারের অনেক এজেন্ট রয়েছে বাংলাদেশে। তারাই ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল মুদ্রা কেনাবেচা করে। লক্ষাধিক বাংলাদেশি ব্যবহারকারী অনলাইন ব্যাংকিং, হুন্ডি, নেটেলার, স্ক্রিল ও বিদেশি একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ডিজিটাল মুদ্রা কিনছে। এর মাধ্যমে প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে বলেও জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।
কামরুল আহসান বলেন, স্ট্রিমকার পরিচালনায় জড়িত প্রত্যেকের একাধিক ব্যাংক ও বিকাশ একাউন্ট রয়েছে। গ্রেফতার নিধু রাম দাসের ব্যাংক ও বিকাশ একাউন্টের মাধ্যমে গত এক বছরে ১০ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। অন্যজন ফরিদ উদ্দিনের ব্যাংক ও বিকাশ একাউন্টে প্রায় ৩ কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও অনেকের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে এবং তাদের ব্যাংক ও বিকাশ একাউন্টে গত এক বছরে প্রায় ৩০ কোটি টাকারও বেশি লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে লেনদেনে ব্যবহৃত ব্যাংকের চেক বই, ডেবিট কার্ড, বিকাশ একাউন্ট নম্বর ও মোবাইল জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মোবাইলে এসব বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায় বলে জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
তৌহিদুজ জামান ১১ জুন, ২০২১, ১:৪৯ এএম says : 0
মানুষ নৈতিক ভাবে ধবংস হয়ে যাওয়ায় এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।
Total Reply(0)
রুকাইয়া খাতুন ১১ জুন, ২০২১, ১:৫০ এএম says : 0
সাইবার পুলিশের বিশেষ নজরদারি জোরদার করতে হবে সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
Total Reply(0)
হিমালয় হিমু ১১ জুন, ২০২১, ১:৫১ এএম says : 0
মানুষ ইসলাম থেকে যত দূরে সরে যাবে ততই আধার নেমে আসবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন