বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

৭০ দিনে বজ্রাঘাতে ১৭৭ জনের মৃত্যু

সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০২১, ১২:০২ এএম

চলতি বছর মার্চের ৩১ তারিখ থেকে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ৭০ দিনে বজ্রাঘাতে ১৭৭ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এই সময়ে একই কারণে আহত হয়েছেন আরো ৪৭ জন। এর মধ্যে ১২২ জনেরই মৃত্যু হয়েছে কৃষি কাজ করতে গিয়ে; যা মোট মৃত্যুর ৬৯ শতাংশ। তবে চলতি বছর এর আগের দুই মাস অর্থাৎ জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বজ্রাঘাতে মৃত্যুর কোনো ঘটনার তথ্য জানা যায়নি। গতকাল শুক্রবার সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম নামের একটি সংগঠনের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। সংগঠনটি বলছে, বজ্রাঘাতে হতাহতের এই পরিসংখ্যান করা হয়েছে জাতীয় দৈনিক, স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টালের নিউজ ও টেলিভিশনের স্ক্রল পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৭৭ জনের মধ্যে ১২২ জনই মারা গেছেন কৃষি কাজ করতে গিয়ে। যা মোট মৃত্যুর ৬৯ শতাংশ; এক তৃতীয়াংশেরও বেশি। এছাড়া বজ্রপাত ও কাল বৈশাখী ঝড়ের মধ্যে আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রাঘাতে মারা গেছেন ১৫ জন, ঘরেই অবস্থানকালে মারা গেছেন ১০ জন, নৌকায় মাছ ধরার সময় ৬ জন, মাঠে গরু আনতে গিয়ে ৫ জন, মাঠে খেলা করার সময় ৩ জন ও বাড়ির আঙিনায়-উঠানে খেলা করার সময় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ভ্যান, রিকশা চালানোর সময় ২ জন এবং গাড়ির ভেতরে অবস্থানকালে বজ্রপাতে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য ৭ জনের অবস্থান নিশ্চিত হতে পারেনি সংগঠনটি।

বজ্রাঘাতে মৃতদের লিঙ্গভিত্তিক (শিশুসহ) বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এদের মধ্যে পুরুষ মারা গেছে ১৪৯ এবং নারী ২৮ জন। নারী ও পুরুষের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১৩ জন; যাদের ৬ জন ছেলে ও মেয়ে ৩ জন।

সংগঠনটি বলছে, চলতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাস, এমনকি মার্চ মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত দেশের কোথাও বজ্রাঘাতে মৃত্যুর কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ৩১ মার্চ বজ্রাঘাতে মৃত্যুর ঘটনা শোনা যায়। এর পর থেকে চলতি জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত মারা যায় ১৭৭ জন। যার মধ্যে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেই মারা গেছেন ৬৫ জন। মৃত্যুর পাশাপাশি এ বছর বজ্রাঘাতে আহত হয়েছেন ৪৭ জন। এর মধ্যে ৪০ জন পুরুষ ও ৭ জন নারী রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবছর বজ্রপাতের হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে সিরাজগঞ্জ জেলা। এই জেলায় চলতি বছরের মে এবং জুন মাসেই মারা গেছে ১৮ জন। এছাড়া, চলতি বছরের ৪ মাসে জামালপুরে ১৪ জন, নেত্রকোণায় ১৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৬ ও চট্টগ্রামে ১০ জন মারা গেছে।

বজ্রাঘাতে মৃত্যু কমাতে কয়েকটি দাবি তুলে ধরেছে সংগঠনটি। দাবিগুলো হচ্ছেÑ ১. বজ্রপাতের ১৫ মিনিট আগেই আবহাওয়া অধিদফতর জানতে পারে কোন কোন এলাকায় বজ্রপাত হবে। এই তথ্যকে মোবাইল ফোনে এসএমএসের এলার্টের মাধ্যমে মানুষকে জানানো, ২. বজ্রাঘাতের হার অনেক বেশি। মানুষের জীবন রক্ষার্থে এই খাতে বরাদ্দ বাড়ানো, ৩. মাঠ, হাওর-বাঁওড় কিংবা ফাঁকা কৃষি কাজের এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ করতে হবে। যার ওপরে বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন করতে হবে, ৪. বিদেশ থেকে আমদানির ক্ষেত্রে থান্ডার প্রোটেকশন সিস্টেমের সকল পণ্যে শুল্ক মওকুফ, ৫. সরকারিভাবে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন, ৬. বজ্র নিরোধক ব্যবস্থা বা থান্ডার প্রটেকশন সিস্টেম যুক্ত না থাকলে নতুন কোনো ভবনের নকশা অনুমোদন করা যাবে না।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার। উপস্থিত ছিলেন বজ্রাঘাত বিশেষজ্ঞ ড. মুনির আহমেদ, আইডিইবি রিসার্চ ও টেকনোলজিক্যাল ইনস্টিটিউটের রিসার্চ ফেলো প্রকৌশলী মো. মনির হোসেন, এসএসটিএএফ সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা, গবেষণা সেলের নির্বাহী প্রধান আব্দুল আলীম, ভাইস প্রেসিডেন্ট এমদাদ হোসাইন মিয়া, নির্বাহী পরিচালক রানা ভূইয়া ও নূরে আলম জিকু প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
Kazi Saon ১২ জুন, ২০২১, ৩:৪১ এএম says : 0
আল্লাহার গজব কি না জানিনা, তবে মাগনেট, মাগনেট কই রা সিমানা পিলারগুলি যে বিক্রি করসে এইটা তার কুফল।
Total Reply(0)
Mahadi Hasan Mithu ১২ জুন, ২০২১, ৩:৪২ এএম says : 0
সরকারের উচিত সারাদেশে বজ্রপাত এ যেন মানুষ না মরে তার দিকে সুদৃষ্টি দেওয়া।
Total Reply(0)
এম আববাছ চৌধুরী ১২ জুন, ২০২১, ৩:৪২ এএম says : 0
মহান প্রভুর দরবারে আশ্রয় প্রার্থনা করা। অধিক পরিমানে নিজের কৃতকর্মের উপর লজ্জিত হয়ে গুনাহ মাফ চাওয়া।মৃত্রু কে স্মরণ করা ইত্যাতি...
Total Reply(0)
Susmita Deb ১২ জুন, ২০২১, ৩:৪৩ এএম says : 0
চারপাশে এত মৃত্যু। আর ভালো লাগে না। বাংলাদেশ যেন দিন দিন মৃত্যুপুরীতে পরিনত হচ্ছে।প্রকৃতিও আমাদের সহায় নেই। আমরা যাব কোথায়?
Total Reply(0)
হুমাইরা হিমু ১২ জুন, ২০২১, ৩:৪৩ এএম says : 0
সাপ যখন জীবিত থাকে তখন সে পিঁপড়া খায়।আবার সাপ যখন মরে যায় তখন পিঁপড়া সাপকে খায়।সব সময় সবার সুদিন থাকে না, সময় একদিন বদলায়
Total Reply(0)
Mohammad Rafiqul ১২ জুন, ২০২১, ৩:৪৪ এএম says : 0
প্রাকৃতিক দূর্যোগ কখন বেশি কম যাই হয় সব আল্লাহই ভাল বোঝেন। যতটুকু সম্ভব সাবধানে থাকতে হবে এ দূর্যোকালীন সময়ে।
Total Reply(0)
Santosh Roy ১২ জুন, ২০২১, ৩:৪৪ এএম says : 0
সিমান্ত পিলার গুলি বাংলার সব জায়গায় ছিল, কিন্তু এগুলি এদেশের টাকার কুমির ররা তুলি নিয়ে ব্যাবসা করে ছিল তাই এখন মানুষ মরছে।
Total Reply(0)
Rezaul Islam Prince ১২ জুন, ২০২১, ৩:৪৫ এএম says : 0
সরকার ও এন জি ও এর যৌথ উদ্যোগে অনতিবিলম্বে গনসচেতনতা মূলক ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ এবং বর্জ্র প্রতিরোধে সর্বাধুনিক পদ্ধতি সারাদেশে ব্যাপকভাবে গ্রহন করা উচিৎ ৷
Total Reply(0)
Amio Kanti Samajdar ১২ জুন, ২০২১, ৩:৪৬ এএম says : 0
বজ্রপাত কেন হয়? এটা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ এটা ঠিক কিন্তুু এটা এত বেশী হওয়ার কারণ কি? এটার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কি ? এটা কিভাবে সৃষ্টি হয় কেও জানলে আওয়াজ দেন! !
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন